শেখ হাসিনার হাতেই নিরাপদ বাংলাদেশ
- Update Time : ০৫:৪০:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মে ২০২১
- / 189
খায়রুল আলম:
আজ ঐতিহাসিক ১৭ মে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকন্যা বর্তমানে বাংলাদেশের টানা তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের চার দশক পূর্তি। ১৯৮১ সালের এই দিনে ঘোর অমানিশার অন্ধকারে পিতার হত্যাকাণ্ডের ছয়বছর পর কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে তিনি দেশে ফিরেছিলেন। দেশে ফিরে হাল ধরেছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী প্রাচীন ও সর্ববৃহৎ দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের।
দেশে ফেরার দিন প্রথম ভাষণে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি সামান্য মেয়ে। সক্রিয় রাজনীতির দূরে থেকে আমি ঘর-সংসার করছিলাম। কিন্তু সবকিছু হারিয়ে আপনাদের মাঝে এসেছি। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তার আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির জনকের হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই।বাংলার দুঃখী মানুষের সেবায় আমি আমার এ জীবনদান করতে চাই। আমার আর হারাবার কিছুই নেই। পিতা-মাতা, ভাই ছোট্ট রাসেল সকলকে হারিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি, আমি আপনাদের মাঝেই তাদের ফিরে পেতে চাই। আপনাদের নিয়েই আমি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তা বাস্তবায়ন করে বাংলার দুঃখী মানুষের হাসি ফোটাতে চাই, বাঙালি জাতির আর্থসামাজিক তথা সার্বিক মুক্তি ছিনিয়ে আনতে চাই।’ এটিই ছিলো দেশের জনগণের উদ্দেশ্যে দেওয়া জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনার প্রথম ভাষণ। জৈষ্ঠ্য মাসের রোববারের সেই দিনটির প্রথমভাগে ছিলো কড়া রৌদ্রালোকিত ও প্রচণ্ড দাবদাহসমৃদ্ধ এবং পরে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছিল প্রবল ঝড় ও বৃষ্টি। কালবৈশাখীর সেই প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে লাখো বঙ্গবন্ধুপ্রেমী মানুষ অপেক্ষা করছিল বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার আগমনের প্রতীক্ষায়।
বিপুল জনগণের দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানটি ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিকেল ৩.৩০ মিনিটে অবতরণ করে। বিমান থেকে নেমেই তিনি দেশের মাটিতে চুমু খান। এ সময় সাধারণ জনতা শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে স্লোগান দিচ্ছিল। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করছিল। দেশবাসী তাকে উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছিল। তিনি তখন চোখের জলে ভাসছিলেন। এভাবে ১৯৮১ সালের সেই দিন বাংলাদেশে একটি নতুন যুগের সূচনা হয়েছিল। সেদিনের গগনবিদারী মেঘের গর্জন, ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ প্রকৃতি যেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার বদলা নেওয়ার লক্ষ্যে গর্জে উঠেছিল, আর অবিরাম মুষলধারায় ভারি বর্ষণে যেন ধুয়ে-মুছে যাচ্ছিল বাংলার মাটিতে পিতৃহত্যার জমাট বাঁধা পাপ আর কলঙ্কের চিহ্ন। শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমান ছুঁয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন হাজার হাজার মানুষ। বাবা-মা-ভাইসহ পরিবারের সব সদস্যের রক্তে ভেজা বাংলার মাটি স্পর্শ করে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। সেই সময় উন্মত্ত জনতা সামরিক শাসক জিয়ার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিভিন্ন স্লোগানে রাজপথ প্রকম্পিত করে তোলে। ঝড়-বৃষ্টির বাধা উপেক্ষা করে রাজপথ প্রকম্পিত স্লোগানে : পিতৃহত্যার বদলা নিতে/লক্ষ ভাই বেঁচে আছে; শেখ হাসিনার ভয় নাই/রাজপথ ছাড়ি নাই।সংবর্ধনার পর শেখ হাসিনা তার পরিবারের সদস্যদের রক্তে রঞ্জিত ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডের বাসায় প্রবেশ করতে চাইলে জিয়ার বাহিনী তাকে তার পৈত্রিক বাসায় প্রবেশ করতে দেয়নি। তখন তিনি বাড়ির সামনের রাস্তায় বসে কোরআন তেলাওয়াত করেন। জিয়া বেঁচে থাকা পর্যন্ত প্রত্যেক দিন তিনি বাসার সামনে বসে কোরআন তেলাওয়াত করতেন; তাতেও বিন্দুমাত্র দয়া হয়নি খুনি শাসকের।
১৯৭৫ সালের ভয়াল ১৫ আগস্টের রাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে কুচক্রীদের হাতে নিহত হওয়ার পর, তাঁর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা জার্মানিতে থাকায় ঘাতকদের হাত থেকে রেহাই পান। জার্মানিও তাদের জন্য নিরাপদ না হওয়ার কারণে সেখান থেকে পরে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সহায়তায় দিল্লিতে আসেন। সেখানেই দীর্ঘ ছয়বছর প্রবাস জীবন অতিবাহিত করেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর চরম এক প্রতিকূল পরিবেশে নির্বাসিত জীবন কাটাতে হয় আজকের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে। তার বিদেশ থাকাকালে ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ এবং ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। তৎকালিন সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দেশে ফিরেন শেখ হাসিনা। সেদিনের শাসক গোষ্ঠী শেখ হাসিনার দেশে ফেরার বিষয়টিকে কতোটা গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছিল জানি না। আমাদের দেশের নানা মহলও শেখ হাসিনাকে নিয়ে কতোটা আশাবাদী হতে পেরেছিল সেটিও জানা নাই। জিয়াউর রহমান এবং ১৯৭৫-এর পটপরিবর্তনের হোতাদের একটা ধারণা ছিল যে, শেখ হাসিনাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের সমর্থনশক্তি কিছুটা জেগে উঠবে হয়তো। কিন্তু সেটি তাদের রাজনীতির জন্যে হুমকি হয়ে পড়বে তা নিয়ে তাদের মধ্যে কোনো ধারণা ছিল বলে মনে হয় না।
আওয়ামী বিরোধী সকল শক্তির ধারণা ছিল যে, আওয়ামী লীগ ভবিষ্যতে কোনোভাবেই আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তারা ভেবেছিলো বাংলাদেশের জনগণকে এরই মধ্যে আওয়ামী বিরোধী ভাবাদর্শে গড়ে তোলা হয়ে গেছে, সাম্প্রদায়িক ও ভারতবিরোধী করা হয়ে গেছে সফলভাবে এমনটিই ভাবা হতো। আওয়ামী লীগ মুসলিম লীগের মতো হয়তো দুর্বল হতে পারে, নতুবা এটি চিরকালই বিরোধীদলের আসনে বসে চেঁচামেচি করে কাটাবে এমনটিই তাদের ধারণা ছিল। রাষ্ট্রক্ষমতায় এমন সব শক্তিকে বসানো হয়েছে যারা আওয়ামী উত্থানকে প্রতিহত করতে যা যা করা দরকার ছিল- তা তারা করতে মোটেও দেরি করেনি। সুতরাং জিয়াকেন্দ্রিক শক্তি এমনই অতিআত্মবিশ্বাসী ছিল। এর কারণে ১৯৮১ সালের দিকে বাংলাদেশের রাজনীতি এতোটাই বিভ্রান্ত ও পথহারা ছিল, আওয়ামী লীগ তো অনেকটাই নেতৃত্বশূন্যই ছিল। তার ওপর এই দলটির বিরুদ্ধে প্রচার-প্রচারণা এতোটাই তীব্র ছিল যে, এসবকে প্রতিহত করে রাজনীতির মাঠে নতুনভাবে দাঁড়ানো মোটেও সহজ কাজ ছিল না।
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাত্র ১৩ দিনের মাথায় জিয়াউর রহমান সামরিক ক্যু’তে নিহত হলে পর্দার অন্তরালে এসব কিসের দ্বন্দ্ব বা কিসের আলামত- তাও বোঝা যাচ্ছিল না। তেমন একটি ঘোলাটে সামরিক শক্তি নতুনভাবে চাঙ্গা হয়ে ওঠার সময়ে শেখ হাসিনা দলের হাল ধরলেন, নতুন করে সবকিছু গোছাতে লাগলেন, অভিজ্ঞতার অবস্থানটিও তখন তার ছিল যৎসামান্য, দলের রণনীতি, রণকৌশল নির্ধারণ, দেশের বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে সামরিক শাসন ও ষড়যন্ত্রের বেড়াজালকে ছিন্ন করে এগিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তখন পর্যন্ত বেশ জটিল এবং দুরুহ কাজ ছিল। অধিকন্তু পিতার মতো বরাবরই তিনিও ছিলেন ঘাতকের ষড়যন্ত্রের টার্গেট। তাকে হত্যা করার যড়য়ন্ত্র শুরু হয়েছে তখন থেকেই।
এজন্যই একবার নয়, দুইবার নয়, শেখ হাসিনাকে ১৯ বার হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছিল। কখনো নিজ বাসভবনে, কখনো জনসভায় আবার কখনো তার গাড়িবহরে। ক্ষমতায় যাতে শেখ হাসিনা কোনোভাবে যেতে না পারেন এবং ষড়যন্ত্রের গোপন জাল বিছিয়ে রেখেছিল রাষ্ট্রক্ষমতার ভেতরে মুখ লুকিয়ে যারা বেঁচেছিল। গোটা আশির দশক স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। কিন্তু আন্দোলনের কোনো ফসলই তাকে ঘরে তুলতে দেয়নি নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারী মহল। যার ফলশ্রুতিতে ’৯১ এর নির্বাচনে পরাজয়। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব সর্বাধিক ত্যাগ স্বীকার করার পরেও এ পরাজয় ছিল অপ্রত্যাশিত। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তনের দাবিতে ১৯৯৪-১৯৯৬ সালে বিএনপি বিরোধী তীব্র আন্দোলন শুরু করেন শেখ হাসিনা। তার আন্দোলনের ফলে সৃষ্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত ১২ জুন ১৯৯৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে নির্বাচিত হয় এবং ২৩ জুন ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। তিনি নিজেকে আটকিয়ে রাখেননি রাজনীতির কোনো বাধাধরা তত্ত্বে। কোন পথে অগ্রসর হলে বাংলাদেশের মুক্তি আসবে শেখ হাসিনা তা নিজের মেধা, প্রজ্ঞা, শ্রম ও অভিজ্ঞতা দিয়ে অনুধাবন করেছেন। সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পেরেছেন বলেই তিনি জাতিকে সফল নেতৃত্ব দিতে পারছেন। আজ দেশে-বিদেশের পর্যবেক্ষক মহল শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে মন্তব্য করেন। তাঁর যোগ্য নেতৃত্ব বাংলাদেশকে জাতিসংঘের উন্নয়ন মডেলে পরিণত করেছে। একই সঙ্গে এটিও লক্ষণীয় যে তার নেতৃত্বের কারণে দেশের উন্নয়ন সাধিত হলেও, এ জন্য তাকে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে শেখ হাসিনা সরকারের উল্লেখযোগ্য সাফল্যগুলো ছিল: ভারতের সঙ্গে সাথে ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গা নদীর পানি চুক্তি, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি, যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধুসেতু নির্মাণ ও খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন। এছাড়া, তিনি কৃষকদের জন্য বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচি এবং ভূমিহীন ও দুস্থ মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি চালু করেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: দুস্থ মহিলা ও বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বয়স্কদের জন্য শান্তি নিবাস, আশ্রয়হীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প।
দ্বিতীয় মেয়াদে শেখ হাসিনা সরকারের উল্লেখযোগ্য অর্জনগুলোর মধ্যে রয়েছে বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানো, গড়ে ৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন, ৫ কোটি মানুষকে মধ্যবিত্তে উন্নীতকরণ, ভারত ও মায়ানমারের সঙ্গে সামুদ্রিক জলসীমা বিরোধের নিষ্পত্তি, প্রতিটি ইউনিয়নে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন, মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীর মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, কৃষকদের জন্য কৃষিকার্ড এবং ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলা, বিনা জামানতে বর্গাচাষিদের ঋণ প্রদান, চিকিৎসাসেবার জন্য সারাদেশে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার কম্যুনিটি ক্লিনিক এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন, জাতিসংঘ কর্তৃক শেখ হাসিনার শান্তির মডেল গ্রহণ ইত্যাদি। ২০১৪ সালের পর এ পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য সাফল্যগুলোর মধ্যে রয়েছে: বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীতকরণ, ভারতের পার্লামেন্ট কর্তৃক স্থল সীমানা চুক্তির অনুমোদন এবং দুই দেশ কর্তৃক অনুসমর্থন, (এর ফলে দুই দেশের মধ্যে ৬৮ বছরের সীমানা বিরোধের অবসান হয়েছে), মাথাপিছু আয় ১,৬০২ মার্কিন ডলারে উন্নীতকরণ, দারিদ্র্যের হার ২২.৪ শতাংশে হ্রাস, ৩২ বিলিয়ন ডলারের উপর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, পদ্মাসেতুর বাস্তবায়ন শুরু ইত্যাদি।
শেখ হাসিনা এক অনন্য রাজনীতিক। অপ্রতিদ্বন্দ্বী এবং অপ্রতিরোধ্য নেতা। দেশের রাজনীতি তো বটেই; বিশ্বের রাজনীতিতেও তার মতো রেকর্ডের নজির খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তিনি বাংলাদেশের চার বারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে ৯ বার নির্বাচিত হন। এটা রেকর্ড। বিশ্বের কোনো দেশে কোনো নেত্রী চার বার প্রধানমন্ত্রী এবং ৯ বার দলের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন এমন নজির নেই। আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয় নেতা শেখ হাসিনা দেশ বিদেশে সমান জনপ্রিয়। উন্নয়নের মহাসড়কে দেশকে তুলে তিনি দেশকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সন্মানিত করে তুলেছেন; আবার মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে মাদার অব হিউম্যানিটি সন্মানে ভূষিত হয়েছেন। জাতিসংঘ, কমনওয়েলথের সদস্য অনেক দেশে তার নাম ‘উদাহরণ’ হিসেবে আলোচিত হয়ে থাকে। প্রখর দূরদৃষ্টি ও তাঁর সুচিন্তিত সিদ্ধান্তই তাকে এই অবস্থায় নিয়ে এসেছে। তার বিভিন্ন চিন্তাশীল বক্তব্য-কথাবার্তা এখন বিশ্বের সেরা দার্শনিক, সমাজবিদ, ইতিহাসবিদ ও বিজ্ঞজনের ‘বাণীর’ মতোই উদ্বৃতি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। অথচ রাজনীতিতে আসা এবং দীর্ঘ চলার পথ মোটেই কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা অকপটে স্বীকার করে বলেছেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় শেখ হাসিনার অসীম সাহস ও দৃঢ়চেতা মনোবলের কারণেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, বঙ্গবন্ধু হত্যার রায় কার্যকর এবং জঙ্গিবাদ দমন করা সম্ভব হয়েছে। একমাত্র শেখ হাসিনা দেশের নেতৃত্ব দিয়েছেন বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। দেশ বেরিয়ে এসেছে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে। সবকিছু মিলিয়ে দৃঢ়ভাবেই বলা যায়, সরকার পরিচালনায় শেখ হাসিনার বিকল্প আজ কেউ নেই। জননেত্রী শেখ হাসিনা হচ্ছেন স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র রক্ষক।
১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনার দুঃসাহসী সিদ্ধান্তের কারণেই আজ সকল স্বৈরশাসনের স্মৃতি পেছনে ফেলে দেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারছে। আজ বাঙালির শেষ আশ্রয়ের নাম- জননেত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর গুরুদায়িত্ব কাঁধে নিয়ে শেখ হাসিনা দেশকে আত্মনির্ভরশীল, সুখী-সমৃদ্ধ আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তিসম্পন্ন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে নিরলসভাবে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন।
লেখক : যুগ্ম সম্পাদক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)