মাস্টার্স পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরা হলো না ৫ শিক্ষার্থীর
- Update Time : ০২:০৭:১৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২১
- / 210
মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তারা। এ পরীক্ষাই হলো শেষ পরীক্ষা। আর বাড়ি ফেরা হলো না তাদের।
বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ঝিনাইদহের বারোবাজারে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১১ জনের মধ্যে পাঁচজন যশোর সরকারি এম এম কলেজের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাদের বাড়ি ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন এলাকায়। দুপুরে পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার জন্য বাসে উঠেছিলেন তারা।
তারা হলেন- ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের সুন্দরপুর গ্রামের ইছাহকের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান কল্লোল (২৫), কালীগঞ্জ উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের রনজিত দাসের ছেলে সনাতন দাস (২৫), ঝিনাইদহ সদরের নাথকুন্ডু গ্রামের আব্দুল ওয়াহেদের ছেলে ইউনুস আলী (২৪), কোটচাঁদপুর উপজেলার হরিনদিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে হারুনর রশিদ সোহাগ (২৪), চুয়াডাঙ্গা সদরের ডিঙ্গেদহ গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে রেশমা (২৬)। এদের মধ্যে ইউনুস আলী, হারুনর রশিদ ও সনাতন দাস এম এম কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র, আর মোস্তাফিজুর রহমান রাষ্ট্রবিজ্ঞানের।তবে রেশমা কোন বিভাগের তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বারোবাজার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মেজবাহ উদ্দীন জানান, বুধবার বিকেল ৩টার দিকে খুলনা থেকে কুষ্টিয়াগামী গড়াই পরিবহনের একটি বাস বারোবাজার তেল পাম্পের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের ওপর উল্টে যায়। এ সময় কুষ্টিয়া থেকে যশোরের দিকে যাওয়া একটি দ্রুতগামী ট্রাক বাসটিকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে বাসের ৯ যাত্রী নিহত হন। পরে হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যান আরও একজন। এছাড়া যশোর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়।
যশোর সরকারি এম এম কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের পরীক্ষার্থী হারুন অর রশিদ জানান, তাদের তিন বন্ধু ইউনুস, হারুন ও সনাতন মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়ে ওই বাসেই বাড়ি ফিরছিল। কিন্তু মর্মান্তিক দুর্ঘটনা তাদের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। তাদের আর বাড়ি ফেরা হলো না। এছাড়া তাদের আরও কয়েকজন বন্ধু এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।
যশোর সরকারি এম এম কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক কামরুল এনাম আহমেদ জানান, তাদের তিন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। এছাড়া আরও দুইজন আহত হয়েছে। দুর্ঘটনার পরপরই তারা হতাহতদের খোঁজখবর নিয়েছেন। অধ্যক্ষ আহতদের চিকিৎসার ব্যয় বহনের দায়িত্ব নিয়েছেন।
কলেজ সূত্র জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় নিহত আরেক ছাত্র মোস্তাফিজুর রহমান কল্লোল রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি সাতক্ষীরায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরে চাকরি করেন। ছুটি নিয়ে পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন তিনি। পরীক্ষার পর ফিরছিলেন বাড়িতে। যেন চিরছুটি মিলল তার। আর মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়ে রেশমা ফিরছিলেন গ্রামের বাড়ি চুয়াডাঙ্গায়।
এদিকে মেয়ে রেশমার মৃত্যুর খবরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন তার বাবা আব্দুর রশিদ। তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেশমার ফুফাতো ভাই নজরুল ইসলাম।