টমেটো বেশি খেলে যেসব বিপদ হতে পারে
- Update Time : ১২:৫৫:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১
- / 337
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর টমেটোর আছে নানা গুণ। টমেটো হচ্ছে একমাত্র সবজি, যাতে চার রকমের ক্যারোটিনয়েড বা ভিটামিন ‘এ’ আছে বিপুল পরিমাণে। এই ক্যারোটিনয়েড বা ভিটামিন ‘এ’ ত্বক ও চোখের সুস্থতা এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটিকে ফল হিসেবেও বিবেচনা করা যায়।
বিশ্বজুড়ে টমেটোর নানা রকম ব্যবহার রয়েছে। এটি ত্বকের যত্নেও ব্যবহার হতে দেখা যায়। সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে এটি মানুষকে রক্ষা করে বলে ধারণা করা হয়। খাবারে স্বাদ আনতেও অনেকে টমেটো ব্যবহার করেন। কিন্তু জানেন কি, টমেটোর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে, যা এড়িয়ে যাওয়া ঠিক নয়।
অতিরিক্ত টমেটো খেলে হজমে গন্ডগোল থেকে শুরু করে কিডনির সমস্যা, চুলকানির মতো শরীরে নানা সমস্যা হতে পারে। বেশি টমেটো খাওয়ার কয়েকটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জেনে নিন-
অম্লের প্রবাহ
টমেটোতে ম্যালিক অ্যাসিড ও সাইট্রিক অ্যাসিড আছে, যা পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিড বা অম্লের প্রবাহ তৈরি করতে পারে। তাই বেশি টমেটো খেলে বুক জ্বালা করতে পারে। এমনকি পেটে গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিড বেশি হয়ে হজমে গন্ডগোল হয়। যারা প্রায়ই পেটের সমস্যায় ভোগেন বা যাদের গ্যাস্ট্রোওফাজাল রিপ্লেক্স রোগ (জিইআরডি) আছে, তাদের অতিরিক্ত টমেটো খাওয়া থেকে দূরে থাকা উচিত।
অ্যালার্জি
টমেটোতে হিস্টামিন নামের একধরনের যৌগ আছে, যা থেকে ত্বকে ছোপ ছোপ দাগ বা র্যাশ দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া নানা রকম অ্যালার্জি হতে পারে। যাদের টমেটো খেলে অ্যালার্জি হয়, তারা টমেটোর ধারেকাছেও যাবেন না। কারণ, টমেটো মুখে দিলেই মুখের ভেতর চুলকানি, জিব ও গাল ফুলে যাওয়া, সর্দি ও গলা চুলকানোর মতো মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। ত্বকে ফুসকুড়ি বা অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। টমেটো অতিরিক্ত খেলে মুখ, জিহ্বা ও মুখের ফোলাভাব, হাঁচি, গলার জ্বালা ইত্যাদি মারাত্মক লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
কিডনিতে পাথর
শুনতে আশ্চর্য লাগলেও অতিরিক্ত টমেটো খেলে কিডনিতে পাথর দেখা দিতে পারে। কারণ টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং অক্সালেট থাকে যা দেহে প্রচুর পরিমাণে উপস্থিত থাকে। এগুলি সহজেই শরীর থেকে বিপাকযুক্ত বা নিষ্কাশিত হয় না। এই উপাদানগুলি শরীরে জমা হতে শুরু করে, যার কারণে কিডনিতে একটি পাথর তৈরি হয়।
এই উপাদানগুলি শরীরে জমা হতে শুরু করে, যার কারণে কিডনিতে একটি পাথর তৈরি হয়।
গিঁটে বাত
অতিরিক্ত টমেটো খেলে গিঁটে বাত দেখা দিতে পারে। এমনকি অস্থিসন্ধিগুলো ফুলে উঠতে পারে। কারণ, এতে সোলানিন নামে বিশেষ অ্যালকালয়েড থাকে। এ যৌগ বিভিন্ন কোষে ক্যালসিয়াম তৈরির জন্য দায়ী। এ যৌগের পরিমাণ বেড়ে গেলে তা প্রদাহ তৈরি শুরু করে।
লাইকোপিনোডার্মিয়া
টমেটোতে লাইকোপেন আছে, এটা সবার জানা। টমেটোর লাইকোপেন প্রোস্টেট ও অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার রোধে সাহায্য করে। এটি অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের ঝুঁকি প্রায় ৩১ শতাংশ কমাতে পারে। তবে অতিরিক্ত লাইকোপেন থেকে লাইকোপিনোডার্মিয়া নামের একধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। রক্তে লাইকোপেন বেড়ে গেলে ত্বকের রং বদলাতে শুরু করে।
চিকিৎসকেরা বলেন, শরীরের জন্য লাইকোপেন ভালো হলেও দৈনিক ৭৫ মিলিগ্রামের বেশি গ্রহণ করা হলে তা লাইকোপিনোডার্মিয়ার দিকে চলে যেতে পারে। এটি এমন একটি সমস্যা যার মধ্যে ব্যক্তির রক্তে লাইকোপিনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় যা ত্বকে বর্ণহীন করতে পারে। লাইকোপেন সাধারণত শরীরের জন্য ভাল তবে যখন প্রতিদিন ৭৫ মিলিগ্রামের বেশি পরিমাণে খাওয়া হয় তখন এটি লাইকোপেনোডার্মিয়া হতে পারে।
ডায়রিয়া
টমেটোতে সালমোনেলা নামের একধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। এটি ডায়রিয়ার জন্য দায়ী। তবে যারা টমেটো সহ্য করতে পারেন না, তাদের ক্ষেত্রে ছাড়া টমেটো খেলে ডায়রিয়া কম দেখা যায়। টমেটো শরীরে অতিমাত্রায় প্রবেশ করলে এটি ডায়রিয়ার কারণ হতে পারে। এই সমস্যা এড়াতে, সীমিত পরিমাণে টমেটো খাওয়া উচিত। সবাই পাকা টমেটো পছন্দ করে। সুস্থ থাকার জন্য টমেটো সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।