সালিশে যুবকের পুরুষাঙ্গে ইট বেঁধে ঘোরান চেয়ারম্যান  

  • Update Time : ০১:২২:৫৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২১
  • / 198
রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি:

রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়নে গ্রাম্য সালিশে মধ্যযুগীয় কায়দায় রাশেদুল শেখ নামের এক যুবককে নির্যাতনের অভিযোগে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম আলী ও তার এক সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (২৪ জানুয়ারি) রাতে রাশেদুলের ওপর বর্বর নির্যাতন চালানো হয়। পরে যুবকের বাবা ইমান আলী শেখ বাদী হয়ে কালুখালী থানায় মামলা করেন। মামলায় রাতেই কালুখালী থানা পুলিশ ইউপি চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করে।

অভিযুক্ত মো. শহিদুল ইসলাম আলী সাওরাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। গ্রেফতার সহযোগীর নাম রায়হান।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রোববার বিকেলে চর পাতুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শাওরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম আলীর নেতৃত্বে একটি গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করা হয়। সালিশে একটি নারীঘটিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাশেদুলকে প্রকাশ্যে ১০০ জুতাপেটা ও জরিমানা করা হয়। পরে ইউপি চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে ওই যুবকের পুরুষাঙ্গে ইট বেঁধে বিদ্যালয় মাঠ ঘুরিয়ে নিয়ে বেড়ান। এতে ওই যুবকের পুরুষাঙ্গ থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হলে গ্রাম্য এক চিকিৎসক দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

পরে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে রাশেদুলকে তার নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখার পাশাপাশি হুমকি দেয়া হয়। চিকিৎসা নিতে যেন বাইরে যেতে না পারেন সেজন্য চেয়ারম্যানের নিজস্ব লোকজন দিয়ে পাহারার ব্যবস্থা করা হয়। সে সময় কেউ ৯৯৯-এ ফোন করে বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করে। পরে কালুখালী থানা পুলিশ নির্যাতিত ওই যুবককে উদ্ধার করে পাংশা হাসপাতালে ভর্তি করে।

এর আগেও অনেকে চেয়ারম্যানের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে।

কালুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান জানান, জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ সংবাদ পেয়ে রাশেদুলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সাওরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম আলীসহ দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


সালিশে যুবকের পুরুষাঙ্গে ইট বেঁধে ঘোরান চেয়ারম্যান  

Update Time : ০১:২২:৫৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২১
রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি:

রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়নে গ্রাম্য সালিশে মধ্যযুগীয় কায়দায় রাশেদুল শেখ নামের এক যুবককে নির্যাতনের অভিযোগে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম আলী ও তার এক সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (২৪ জানুয়ারি) রাতে রাশেদুলের ওপর বর্বর নির্যাতন চালানো হয়। পরে যুবকের বাবা ইমান আলী শেখ বাদী হয়ে কালুখালী থানায় মামলা করেন। মামলায় রাতেই কালুখালী থানা পুলিশ ইউপি চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করে।

অভিযুক্ত মো. শহিদুল ইসলাম আলী সাওরাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। গ্রেফতার সহযোগীর নাম রায়হান।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রোববার বিকেলে চর পাতুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শাওরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম আলীর নেতৃত্বে একটি গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করা হয়। সালিশে একটি নারীঘটিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাশেদুলকে প্রকাশ্যে ১০০ জুতাপেটা ও জরিমানা করা হয়। পরে ইউপি চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে ওই যুবকের পুরুষাঙ্গে ইট বেঁধে বিদ্যালয় মাঠ ঘুরিয়ে নিয়ে বেড়ান। এতে ওই যুবকের পুরুষাঙ্গ থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হলে গ্রাম্য এক চিকিৎসক দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

পরে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে রাশেদুলকে তার নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখার পাশাপাশি হুমকি দেয়া হয়। চিকিৎসা নিতে যেন বাইরে যেতে না পারেন সেজন্য চেয়ারম্যানের নিজস্ব লোকজন দিয়ে পাহারার ব্যবস্থা করা হয়। সে সময় কেউ ৯৯৯-এ ফোন করে বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করে। পরে কালুখালী থানা পুলিশ নির্যাতিত ওই যুবককে উদ্ধার করে পাংশা হাসপাতালে ভর্তি করে।

এর আগেও অনেকে চেয়ারম্যানের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে।

কালুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান জানান, জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ সংবাদ পেয়ে রাশেদুলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সাওরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম আলীসহ দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।