আজ থেকে খুলছে কক্সবাজারসহ পর্যটন কেন্দ্রগুলো

  • Update Time : ০৬:০৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ অগাস্ট ২০২০
  • / 153
দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর খুলে দেওয়া হচ্ছে পর্যটন কেন্দ্রগুলো। করোনা প্রাদুর্ভাবে গত ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ হওয়া পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘ প্রায় ৫ মাস পর আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেয়া হচ্ছে আজ সোমবার (১৭ আগস্ট)।
.
স্বাস্থ্যবিধি মানা সাপেক্ষে সীমিত আকারে সৈকত তীরের হোটেল, মোটেল, কটেজ, রেস্ট্যুরেন্টসহ পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো খোলার অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন। তবে এটিকে ‘পরীক্ষামূলক খুলে দেয়া’ বলে উল্লেখ করেছেন জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন।
.

জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, জেলার পর্যটন শিল্পের সঙ্গে বিভিন্নভাবে প্রায় কয়েক লাখ মানুষের জীবিকা জড়িত। তাদের কথা চিন্তা করে সীমিত আকারে পর্যটন শিল্প খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পর্যটন শিল্প খুলতে হবে। মেনে চলতে হবে এ বিষয়ে প্রণীত কর্মপন্থার সকল নিয়মাবলি।

এ বিষয়ে স্টেক হোল্ডারসহ কক্সবাজারে পর্যটনশিল্পের সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে তা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ডিসি বলেন, পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে এবং আগত পর্যটকদের যেকোনো অবস্থাতে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করতে হবে। তারপরও কেউ স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ জন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সার্বক্ষণিক তদারকি থাকবে বলে উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন।

সূত্র জানায়, গত ৫ আগস্ট কক্সবাজার জেলা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির জুম কনফারেন্স সভায় শুধুমাত্র কক্সবাজার পৌর এলাকার পর্যটন শিল্প সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানসমুহ খোলার অনুমতি দিতে সিদ্ধান্ত হয়। এরই আলোকে সোমবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আবারও পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর পথচলা শুরু হচ্ছে।

এদিকে দীর্ঘ প্রায় ৫ মাস পর সীমিত আকারে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তে সৈকত তীরের হোটেল, মোটেল, কটেজ, রেস্ট্যুরেন্ট, ক্ষুদে, ভাসমান ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের মাঝে প্রস্তুতির ধুম পড়েছে। ফিরে এসেছে কর্মচাঞ্চল্য। স্বাস্থ্যবিধির আলোকে নেয়া হচ্ছে বিভিন্ন ব্যবস্থা। ফিরে আসছে, কক্সবাজারের কোলাহলময় পর্যটন শিল্পের আসল রূপ।

কলাতলীর মোহাম্মদিয়া গেস্ট হাউসের ব্যবস্থাপক মো. শফিকুর রহমান বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে বন্ধ হওয়া পর্যটন সোমবার থেকে আনুষ্ঠানিতভাবে খুলে দেয়া হলেও সিনহা হত্যার ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা কক্সবাজার এসে বিভিন্ন হোটেলে উঠেছে। তাদের দেখাদেখি গত দু’একদিন আগে থেকে কক্সবাজার আসা শুরু করেছেন অনেক পর্যটক। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে লোকসানটা কোনো মতে কাটিয়ে উঠতে পারবে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।

পুরো পর্যটন শিল্প কখন খুলে দেয়া হবে এমন প্রশ্নে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক বলেন, কক্সবাজার পৌর এলাকার পর্যটন শিল্প সীমিত আকারে খোলা থাকা অবস্থায় কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের মাত্রা ও গতিপ্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করে পর্যটন শিল্পের উন্মুক্ত এলাকা আরও সম্প্রসারিত বা সংকুচিত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

অপরদিকে পর্যটন স্পট খুলে দেয়ার খবরে কক্সবাজার জেলা টুরিস্ট পুলিশও পর্যটক এবং পর্যটক শিল্পের সার্বিক নিরাপত্তায় বেশ প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের এসপি জিল্লুর রহমান।

কক্সবাজার সৈকতে কীটকট ব্যবসায়ী হাসান আহমদ জানিয়েছেন- আগামী অক্টোবর থেকে কক্সবাজারে পর্যটন মওসুম শুরু হচ্ছে। এই সময়ের আগেই পর্যটন শিল্প উম্মুক্ত করে দেওয়ায় উদ্যোক্তা ব্যবসায়ীরা দারুন খুশি। তারা আসন্ন পর্যটন মওসুমের জন্য সময় নিয়ে আগাম প্রস্তুতি নিতে পারবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


আজ থেকে খুলছে কক্সবাজারসহ পর্যটন কেন্দ্রগুলো

Update Time : ০৬:০৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ অগাস্ট ২০২০
দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর খুলে দেওয়া হচ্ছে পর্যটন কেন্দ্রগুলো। করোনা প্রাদুর্ভাবে গত ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ হওয়া পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘ প্রায় ৫ মাস পর আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেয়া হচ্ছে আজ সোমবার (১৭ আগস্ট)।
.
স্বাস্থ্যবিধি মানা সাপেক্ষে সীমিত আকারে সৈকত তীরের হোটেল, মোটেল, কটেজ, রেস্ট্যুরেন্টসহ পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো খোলার অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন। তবে এটিকে ‘পরীক্ষামূলক খুলে দেয়া’ বলে উল্লেখ করেছেন জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন।
.

জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, জেলার পর্যটন শিল্পের সঙ্গে বিভিন্নভাবে প্রায় কয়েক লাখ মানুষের জীবিকা জড়িত। তাদের কথা চিন্তা করে সীমিত আকারে পর্যটন শিল্প খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পর্যটন শিল্প খুলতে হবে। মেনে চলতে হবে এ বিষয়ে প্রণীত কর্মপন্থার সকল নিয়মাবলি।

এ বিষয়ে স্টেক হোল্ডারসহ কক্সবাজারে পর্যটনশিল্পের সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে তা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ডিসি বলেন, পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে এবং আগত পর্যটকদের যেকোনো অবস্থাতে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করতে হবে। তারপরও কেউ স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ জন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সার্বক্ষণিক তদারকি থাকবে বলে উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন।

সূত্র জানায়, গত ৫ আগস্ট কক্সবাজার জেলা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির জুম কনফারেন্স সভায় শুধুমাত্র কক্সবাজার পৌর এলাকার পর্যটন শিল্প সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানসমুহ খোলার অনুমতি দিতে সিদ্ধান্ত হয়। এরই আলোকে সোমবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আবারও পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর পথচলা শুরু হচ্ছে।

এদিকে দীর্ঘ প্রায় ৫ মাস পর সীমিত আকারে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তে সৈকত তীরের হোটেল, মোটেল, কটেজ, রেস্ট্যুরেন্ট, ক্ষুদে, ভাসমান ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের মাঝে প্রস্তুতির ধুম পড়েছে। ফিরে এসেছে কর্মচাঞ্চল্য। স্বাস্থ্যবিধির আলোকে নেয়া হচ্ছে বিভিন্ন ব্যবস্থা। ফিরে আসছে, কক্সবাজারের কোলাহলময় পর্যটন শিল্পের আসল রূপ।

কলাতলীর মোহাম্মদিয়া গেস্ট হাউসের ব্যবস্থাপক মো. শফিকুর রহমান বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে বন্ধ হওয়া পর্যটন সোমবার থেকে আনুষ্ঠানিতভাবে খুলে দেয়া হলেও সিনহা হত্যার ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা কক্সবাজার এসে বিভিন্ন হোটেলে উঠেছে। তাদের দেখাদেখি গত দু’একদিন আগে থেকে কক্সবাজার আসা শুরু করেছেন অনেক পর্যটক। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে লোকসানটা কোনো মতে কাটিয়ে উঠতে পারবে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।

পুরো পর্যটন শিল্প কখন খুলে দেয়া হবে এমন প্রশ্নে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক বলেন, কক্সবাজার পৌর এলাকার পর্যটন শিল্প সীমিত আকারে খোলা থাকা অবস্থায় কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের মাত্রা ও গতিপ্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করে পর্যটন শিল্পের উন্মুক্ত এলাকা আরও সম্প্রসারিত বা সংকুচিত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

অপরদিকে পর্যটন স্পট খুলে দেয়ার খবরে কক্সবাজার জেলা টুরিস্ট পুলিশও পর্যটক এবং পর্যটক শিল্পের সার্বিক নিরাপত্তায় বেশ প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের এসপি জিল্লুর রহমান।

কক্সবাজার সৈকতে কীটকট ব্যবসায়ী হাসান আহমদ জানিয়েছেন- আগামী অক্টোবর থেকে কক্সবাজারে পর্যটন মওসুম শুরু হচ্ছে। এই সময়ের আগেই পর্যটন শিল্প উম্মুক্ত করে দেওয়ায় উদ্যোক্তা ব্যবসায়ীরা দারুন খুশি। তারা আসন্ন পর্যটন মওসুমের জন্য সময় নিয়ে আগাম প্রস্তুতি নিতে পারবে।