‘ঈদযাত্রা বন্ধ রেখে প্রয়োজনে ভার্চুয়ালি স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন’
- Update Time : ১২:২৪:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জুলাই ২০২০
- / 200
খুব বেশি প্রয়োজন না হলে ঈদযাত্রা বন্ধ রাখতে জনগণের প্রতি আবারও অনুরোধ জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি। এই ঈদে তিনি ভার্চুয়াল পদ্ধতি ব্যবহার করে বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ ও কুশলাদী বিনিময়ের আহবান জানান।
বুধবার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিপত্র (এপিএ) স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহবান জানান প্রতিমন্ত্রী।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, করোনা ও বন্যা পরিস্থিতিতেও নৌপথ নিরাপদ এবং স্বস্তিদায়ক করতে সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে সদরঘাটে জীবানুনাশক টানেল স্থাপন ও যাত্রীদের তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা করা হয়েছে। লঞ্চের ডেকে যাত্রীদের অবস্থান করার জন্য ‘মার্কিং’ এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি যাত্রীদেরকে লঞ্চের মার্কিং অনুসরণ করার আহবান জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য গর্বের বিষয় পদ্মাসেতু দৃশ্যমান। পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে। সেতু কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুসরণ করে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী রুটে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল করতে হয়। পদ্মাসেতু নির্মাণের বৃহত্তর স্বার্থে দক্ষিণাঞ্চলবাসীকে ওই পথে চলাচলের ক্ষেত্রে সাময়িক অসুবিধা সহ্য করার আহবান জানান।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে না পারলে অর্থনৈতিক ধাক্কা লাগবে। এ পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে জনসচেতনতা প্রয়োজন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসরন করতে হবে। দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে কর্মকর্তাদের আহবান জানান প্রতিমন্ত্রী।
খালিদ বলেন, কাজের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। কাজের মাধ্যমে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় প্রথম কাতারে থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাথে এর অধিনস্থ ১১টি দপ্তর/সংস্থাসমূহের ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিপত্র (এপিএ) আজ স্বাক্ষরিত হয়।
নৌপরিবহন সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী এবং দপ্তর/সংস্থা প্রধানগণ এপিএ-তে স্বাক্ষর করেন। মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত চুক্তিপত্র স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ঢাকায় অবস্থিত দপ্তর/সংস্থাসমূহের প্রধানগণ সরাসরি এবং ঢাকার বাইরের দপ্তর/সংস্থাসমূহের প্রধানগণ এপিএ টিম লিডারদের জুম অ্যাপের মাধ্যমে অংশ নেন। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক), মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ (মোবক), পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ (পাবক), বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ (বাস্থবক), নৌপরিবহন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ), বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি), বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন (বিএসসি), বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি, ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনসটিটিউট (এনএমআই) এবং নাবিক ও প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ পরিদপ্তর এর সাথে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের বিগত বছরের এপিএ অর্জনসমূহ হলো: ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৮৫.০২%; ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৮২.১৫%; ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৮০.৬৩%; ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮১.২১%। সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার-২০১৮; প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১; সপ্তম/অষ্টম পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনা; রূপকল্প-২০২১; টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি)-২০৩০; বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা (ডেল্টাপ্লান)-২১০০; মন্ত্রণালয়ের মধ্য মেয়াদি বাজেট কাঠামো; মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে গৃহিত জনহিতকর কার্যাবলি; ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিভিন্ন উদ্ভাবনি উদ্যোগ এবং সংস্কারমূলক কর্মকান্ড, ডিজিটাল সেবা প্রদান, মন্ত্রণালয়/বিভাগ কর্তৃক গৃহিত নীতি/আইন/কৌশলপত্র/লক্ষ্যমাত্রা; সরকারের অন্যান্য কৌশলপত্র; ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের বরাদ্দকৃত অর্থ ইত্যাদি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে এপিএ প্রণয়ন করা হয়েছে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এপিএ এর অগ্রাধিকার কার্যক্রমসমূহ হলো- নদী বন্দর, সমুদ্র বন্দর ও স্থল বন্দরসমূহের আধুনিক ব্যবস্থাপনা, উন্নয়ন ও সংরক্ষণ; উপকূলীয় নৌপথে বাতিঘর ও বয়াবাতি ব্যবস্থাপনা, সংরক্ষণ ও উন্নয়ন; মেরিটাইম ও বন্দর সম্পর্কিত আইন ও বিধি বিধান প্রণয়ন, প্রয়োগ এবং হালনাগাদকরণ; অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন ও নিরাপদ নৌচলাচল নিশ্চিতকরণ; অভ্যন্তরীণ ও উপকূলীয় নৌপথের নাব্যতা উন্নয়ন ও সংরক্ষণ; যান্ত্রিক নৌযান ব্যবস্থাপনা, সার্ভে ও রেজিস্ট্রেশন এবং মেরিটাইম শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ; বাংলাদেশের জলসীমায় ও অভ্যন্তরীণ নৌপথে জলযানসৃষ্ট দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং নৌচলাচল ও নৌবাণিজ্য সম্পর্কিত দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়াদি।
উল্লেখ্য, সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে উন্নীতকরণ ও সুশাসন সংহতকরণের লক্ষ্যে কার্যকর, দক্ষ এবং গতিশীল প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নয়নের জন্য সরকারি দপ্তর/সংস্থাসমূহের কর্মসম্পাদন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৪৮টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের সাথে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে কর্মসম্পাদন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালু হয়। ইতোমধ্যে ৫১টি মন্ত্রণালয়/বিভাগ, আওতাধীন দপ্তর/সংস্থা এবং মাঠপর্যায়ের বিভাগীয়/আঞ্চলিক, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কার্যালয়সমূহের সঙ্গে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপএি) সম্পাদিত হয়েছে।