রাতের অন্ধকার তাড়ানো এক গ্রামের গল্প!
- Update Time : ০৩:০৯:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জুলাই ২০২০
- / 230
বুড়িচং সংবাদদাতা:
আলোকিত জরইন রাত নামলেই আর দশটা গ্রামের মতো এই গ্রামটিতেও নেমে আসতো ঘুটঘুটে অন্ধকার। ভাঙাচোরা রাস্তায় পথ চলাটাই ছিলো দায়।নিতান্ত প্রয়োজনে রাতে ঘর থেকে বেরুলে মোবাইল কিংবা টর্চের আলোতেই ভরসা করতে হতো গ্রামবাসীকে।কিন্তু, গ্রামবাসীর ঐক্যের শক্তিতে সেই অন্ধকার কেটেছে। রাতের অন্ধকার কাটিয়ে আলোতে ফেরা সেই গ্রামের নাম জরইন।
.
কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার ছোট একটা গ্রাম।যেখানটায় বসবাস প্রায় দুই হাজার বাসিন্দার। বিদ্যুৎ থাকলেও, গ্রামের রাস্তায় কোন সড়কবাতি ছিলো না।সরকারিভাবে সৌরবিদ্যুৎ চালিত সড়কবাতি পাওয়ার আশ্বাস আলোর মুখ দেখেনি। শেষ পর্যন্ত রাতের অন্ধকার দূর করার উদ্যোগ নেয় গ্রামের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত সংগঠন ‘জরইন স্টুডেন্টস ফোরাম [জেএসএফ]’।
.
শুরু হয় ‘আলোকিত জরইন’ প্রকল্পের কাজ। প্রাথমিকভাবে গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে বিদ্যুৎচালিত সড়ক বাতি বসানোর সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু, বিদ্যুৎতের লাইন আসবে কোথা থেকে? অনেক চিন্তা-ভাবনার পর সমাধানের একটা পথ বেরুয়। যেখানে সড়কবাতি দেয়া হবে, বিদ্যুতের লাইন নেয়া হবে সেই পয়েন্টের কাছাকাছি কোনো বাড়ি থেকে। বিনিময়ে প্রতিমাসে সংশ্লিষ্ট মিটার মালিককে একটি বাল্বের বিদ্যুৎ বিল দিয়ে দেয়া হবে।
.
.
শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগে সহযোগিতার হাত বাড়ান গ্রামের সামর্থ্যবান, কর্মজীবী ও প্রবাসীরা। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সড়ক বাতি প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গঠন করা হয় আলাদা একটি ফান্ড। সেই ফান্ড থেকে কেনা হয় সড়ক বাতি, খুঁটি, বৈদ্যুতিক তারসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। গেলো ১৮ জুলাই ধাপে ধাপে শুরু হয় সড়কবাতি বসানোর কাজ। দুইদিনে গ্রামের বিশটি পয়েন্টে বসানো হয় সড়ক বাতি। প্রতিটি বাতির পেছনে খরচ হয়েছে প্রায় ২৫০০ হাজার টাকা।
.
গেলো ১৯ জুলাই, সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে জরইন গ্রামে জ্বলে উঠে সড়ক বাতি। গ্রামজুড়ে তখন আলোর উৎসব। গ্রামবাসীর মধ্যে স্বাচ্ছন্দ্যে পথ চলার আনন্দ। গ্রামবাসী মনে করছেন, সড়কবাতি বসানোর ফলে গ্রামে চুরিসহ অপরাধমূলক নানা কর্মকান্ড বন্ধ হবে। জরইন স্টুডেন্টস ফোরামের এমন উদ্যাোগ দেশের অন্য অনেক গ্রামের জন্য হতে পারে অনুকরণীয়।
.
Tag :