মিয়ানমারে বোমা বিস্ফোরণের শব্দে টেকনাফে অন্তত ২৫ ঘরে ফাটল

  • Update Time : ০৭:১২:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪
  • / 30

সীমান্তের ওপারে শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্ট ভূকম্পনের কারণে কক্সবাজারের টেকনাফের একটি গ্রামে অন্তত ২৫টি মাটির ঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে দাবি করেছেন গ্রামবাসী।

সাবরাং ইউনিয়নের আচারবুনিয়া গ্রামটি নাফ নদীর তীরে অবস্থিত। নদীটি বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে বিভক্ত করেছে। সীমান্তবর্তী এই গ্রামের ঠিক ওপারে মংডু শহরে কয়েক মাস ধরে মিয়ানমার জান্তা সেনা ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যে ভয়াবহ লড়াই চলছে।

জানা যায়, গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলো মাটি ও ইট দিয়ে তৈরি এবং সেখানে বসবাস করেন নিম্ন আয়ের মানুষ। ঘরে ফাটল ধরায় সেখানে বসবাস করা তাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

মিয়ানমারে চলা যুদ্ধের পরোক্ষ শিকার হওয়ায় গভীর হতাশা প্রকাশ করেন ওই গ্রামের মানুষ। তারা বলছেন, এখন ঘর মেরামতের জন্য পর্যাপ্ত টাকাও তাদের নেই।

গ্রামের এক বাসিন্দা জাহেদ উল্লাহ গণমাধ্যমে বলেন, ‘মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান যখন সীমান্তের ওপারে বোমা বর্ষণ করে, তখন আমাদের বাড়িঘর এমনভাবে কেঁপে ওঠে, যেন ভূমিকম্প হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বোমা বিস্ফোরণের শব্দ এত প্রচণ্ড যে, আমাদের মাটির ঘরগুলো কেঁপে ওঠে। সীমান্তের ওপারে বিস্ফোরণের বিকট শব্দে আমার এবং আমার ভাইয়ের ঘরে ফাটল ধরেছে।’

গ্রামের গৃহবধূ হামিদা খাতুন জানান, মিয়ানমারের দিক থেকে বোমা বিস্ফোরণে বাড়ির দেয়াল ভূমিকম্পের মতো কেঁপে ওঠে। যখন প্রচণ্ড শব্দে বোমা বিস্ফোরিত হতে থাকে, তখন তো আমাদের বাচ্চারাও ভয়ে চিৎকার করে উঠে। টানা বিস্ফোরণের শব্দে আমরা প্রায় তিন মাস রাতে ভালোভাবে ঘুমাতে পারিনি।

টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং যাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারা সরকারি সহায়তা পাবেন। বিস্ফোরণের ফলে যে আফটার শক হচ্ছে, তার ফলে এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে তিনি ধারনা করছেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


মিয়ানমারে বোমা বিস্ফোরণের শব্দে টেকনাফে অন্তত ২৫ ঘরে ফাটল

Update Time : ০৭:১২:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

সীমান্তের ওপারে শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্ট ভূকম্পনের কারণে কক্সবাজারের টেকনাফের একটি গ্রামে অন্তত ২৫টি মাটির ঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে দাবি করেছেন গ্রামবাসী।

সাবরাং ইউনিয়নের আচারবুনিয়া গ্রামটি নাফ নদীর তীরে অবস্থিত। নদীটি বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে বিভক্ত করেছে। সীমান্তবর্তী এই গ্রামের ঠিক ওপারে মংডু শহরে কয়েক মাস ধরে মিয়ানমার জান্তা সেনা ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যে ভয়াবহ লড়াই চলছে।

জানা যায়, গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলো মাটি ও ইট দিয়ে তৈরি এবং সেখানে বসবাস করেন নিম্ন আয়ের মানুষ। ঘরে ফাটল ধরায় সেখানে বসবাস করা তাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

মিয়ানমারে চলা যুদ্ধের পরোক্ষ শিকার হওয়ায় গভীর হতাশা প্রকাশ করেন ওই গ্রামের মানুষ। তারা বলছেন, এখন ঘর মেরামতের জন্য পর্যাপ্ত টাকাও তাদের নেই।

গ্রামের এক বাসিন্দা জাহেদ উল্লাহ গণমাধ্যমে বলেন, ‘মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান যখন সীমান্তের ওপারে বোমা বর্ষণ করে, তখন আমাদের বাড়িঘর এমনভাবে কেঁপে ওঠে, যেন ভূমিকম্প হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বোমা বিস্ফোরণের শব্দ এত প্রচণ্ড যে, আমাদের মাটির ঘরগুলো কেঁপে ওঠে। সীমান্তের ওপারে বিস্ফোরণের বিকট শব্দে আমার এবং আমার ভাইয়ের ঘরে ফাটল ধরেছে।’

গ্রামের গৃহবধূ হামিদা খাতুন জানান, মিয়ানমারের দিক থেকে বোমা বিস্ফোরণে বাড়ির দেয়াল ভূমিকম্পের মতো কেঁপে ওঠে। যখন প্রচণ্ড শব্দে বোমা বিস্ফোরিত হতে থাকে, তখন তো আমাদের বাচ্চারাও ভয়ে চিৎকার করে উঠে। টানা বিস্ফোরণের শব্দে আমরা প্রায় তিন মাস রাতে ভালোভাবে ঘুমাতে পারিনি।

টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং যাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারা সরকারি সহায়তা পাবেন। বিস্ফোরণের ফলে যে আফটার শক হচ্ছে, তার ফলে এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে তিনি ধারনা করছেন।