ড্যাপ বাতিল শহরের জন্য আত্মঘাতী, সংবাদ সম্মেলনে বিআইপি

  • Update Time : ১২:৩২:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / 17

দেশের সুষম, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন ও কার্যকর বাস্তবায়নের বিকল্প নেই বলে মনে করেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। এ অবস্থায় ঢাকার ‘বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা’ (ড্যাপ) বাতিলের উদ্দেশ্যমূলক দাবি বাস্তবায়ন হলে তা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে বলে মনে করে নগর পরিকল্পনাবিদদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)।

সংগঠনটি বলছে, ড্যাপ বাতিলের জন্য একটি গোষ্ঠী উঠেপড়ে লেগেছে। অথচ বসবাস উপযোগিতা বিবেচনায় ঢাকার অবস্থান তলানিতে।

এ অবস্থায় স্বার্থান্বেষী মহলের কথায় ড্যাপ বাতিল বা স্থগিত করা হলে তা হবে আত্মঘাতী। গতকাল বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) আয়োজিত রাজধানীর বাংলামোটরে প্ল্যানার্স টাওয়ারের বিআইপি কনফারেন্সে ‘পরিকল্পিত ও বৈষম্যহীন উন্নয়ন এবং টেকসই পরিকল্পনা চর্চায় স্বার্থান্বেষী মহলের আগ্রাসন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা এবং প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইপির সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান।

বিআইপি বলছে, বর্তমানে পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে রিহ্যাব ও স্থপতি ইনস্টিটিউট এক সুরেই বলছে, এ ড্যাপ বিগত সরকারের আমলে প্রণীত এবং বৈষম্যমূলক, তাই এর সংস্কার প্রয়োজন।

এটা বাতিল করতে প্রধান উপদেষ্টাকে জানাতে হবে। স্বার্থগোষ্ঠী নিজের স্বার্থে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সঙ্গে কীভাবে নিজের রূপ ক্ষণে ক্ষণে বদলাতে পারে, সাম্প্রতিক সময়ে উপরোক্ত মহলের ড্যাপ বাতিলের দাবি তারই এক উদাহরণ। এ অবস্থায় বিদ্যমান ড্যাপ বাতিল করে আগের ড্যাপ এবং ইমারত নির্মাণে ফিরে গেলে ঢাকার বাসযোগ্যতা আরও কমে যাবে। রাজউকের স্থপতি ও প্রকৌশলীদের একটি গ্রুপও ড্যাপের বিরোধিতা করছেন।

এর পেছনে স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়াদির সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মত দেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ড্যাপে বন্যাপ্রবাহ এলাকা ও কৃষিজমি সংরক্ষণ এবং মিশ্র ব্যবহারের অতিরিক্ত সুযোগ বাতিল ও দাবির ব্যাপারে বিআইপি আগেই দাবি করে এসেছে। আবাসন ব্যবসায়ীসহ স্বার্থান্বেষী মহলের চাপেই ড্যাপে উপরোক্ত প্রস্তাবনাসমূহ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ড্যাপ পুনর্মূল্যায়নে এ বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে পরিবেশ-প্রতিবেশ, জলাশয়-জলাধার, কৃষিভূমি-জলাধার রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া উচিত। কিন্তু ঢালাওভাবে ড্যাপ বাতিলের দাবি অত্যন্ত দুরভিসন্ধিমূলক এবং পরিকল্পিত ও টেকসই উন্নয়নের সুস্পষ্ট প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে।

সম্মেলনে বক্তব্য দেন পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ, ফজলে রেজা সুমন, বিআইপির যুগ্ম সম্পাদক তামজিদুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ পরিকল্পনাবিদ ড. মু. মোসলেহ উদ্দীন হাসান, সালমা এ শফি, শাহরিয়ার আমিন, আবু সাদেক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাজিদ ইকবাল ও ইয়াসির আমিন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ড্যাপ বাতিল শহরের জন্য আত্মঘাতী, সংবাদ সম্মেলনে বিআইপি

Update Time : ১২:৩২:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দেশের সুষম, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন ও কার্যকর বাস্তবায়নের বিকল্প নেই বলে মনে করেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। এ অবস্থায় ঢাকার ‘বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা’ (ড্যাপ) বাতিলের উদ্দেশ্যমূলক দাবি বাস্তবায়ন হলে তা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে বলে মনে করে নগর পরিকল্পনাবিদদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)।

সংগঠনটি বলছে, ড্যাপ বাতিলের জন্য একটি গোষ্ঠী উঠেপড়ে লেগেছে। অথচ বসবাস উপযোগিতা বিবেচনায় ঢাকার অবস্থান তলানিতে।

এ অবস্থায় স্বার্থান্বেষী মহলের কথায় ড্যাপ বাতিল বা স্থগিত করা হলে তা হবে আত্মঘাতী। গতকাল বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) আয়োজিত রাজধানীর বাংলামোটরে প্ল্যানার্স টাওয়ারের বিআইপি কনফারেন্সে ‘পরিকল্পিত ও বৈষম্যহীন উন্নয়ন এবং টেকসই পরিকল্পনা চর্চায় স্বার্থান্বেষী মহলের আগ্রাসন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা এবং প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইপির সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান।

বিআইপি বলছে, বর্তমানে পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে রিহ্যাব ও স্থপতি ইনস্টিটিউট এক সুরেই বলছে, এ ড্যাপ বিগত সরকারের আমলে প্রণীত এবং বৈষম্যমূলক, তাই এর সংস্কার প্রয়োজন।

এটা বাতিল করতে প্রধান উপদেষ্টাকে জানাতে হবে। স্বার্থগোষ্ঠী নিজের স্বার্থে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সঙ্গে কীভাবে নিজের রূপ ক্ষণে ক্ষণে বদলাতে পারে, সাম্প্রতিক সময়ে উপরোক্ত মহলের ড্যাপ বাতিলের দাবি তারই এক উদাহরণ। এ অবস্থায় বিদ্যমান ড্যাপ বাতিল করে আগের ড্যাপ এবং ইমারত নির্মাণে ফিরে গেলে ঢাকার বাসযোগ্যতা আরও কমে যাবে। রাজউকের স্থপতি ও প্রকৌশলীদের একটি গ্রুপও ড্যাপের বিরোধিতা করছেন।

এর পেছনে স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়াদির সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মত দেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ড্যাপে বন্যাপ্রবাহ এলাকা ও কৃষিজমি সংরক্ষণ এবং মিশ্র ব্যবহারের অতিরিক্ত সুযোগ বাতিল ও দাবির ব্যাপারে বিআইপি আগেই দাবি করে এসেছে। আবাসন ব্যবসায়ীসহ স্বার্থান্বেষী মহলের চাপেই ড্যাপে উপরোক্ত প্রস্তাবনাসমূহ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ড্যাপ পুনর্মূল্যায়নে এ বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে পরিবেশ-প্রতিবেশ, জলাশয়-জলাধার, কৃষিভূমি-জলাধার রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া উচিত। কিন্তু ঢালাওভাবে ড্যাপ বাতিলের দাবি অত্যন্ত দুরভিসন্ধিমূলক এবং পরিকল্পিত ও টেকসই উন্নয়নের সুস্পষ্ট প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে।

সম্মেলনে বক্তব্য দেন পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ, ফজলে রেজা সুমন, বিআইপির যুগ্ম সম্পাদক তামজিদুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ পরিকল্পনাবিদ ড. মু. মোসলেহ উদ্দীন হাসান, সালমা এ শফি, শাহরিয়ার আমিন, আবু সাদেক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাজিদ ইকবাল ও ইয়াসির আমিন।