ভারতের সঙ্গে হাসিনার করা সমঝোতা স্মারক পুনর্বিবেচনা করবে সরকার

  • Update Time : ০৫:০২:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / 23

গণঅভ্যুত্থানে বিদায় নেওয়া আওয়ামীলীগ সরকারের ১৫ বছরে প্রতিবেশি ভারতের সঙ্গে সই করা বিভিন্ন সমঝোতা স্মারক পুনর্বিবেচনা করবে বর্তমান সরকার। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন রোববার এ তথ্য জানিয়েছেন।

আজ রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

এ সময় তিনি জানানা, পাসপোর্ট বাতিল হওয়ার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে ঠিক কোন স্ট্যাটাসে অবস্থান করছেন তা সম্পর্কে সরকার অবগত নয়। এমন মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে নয়াদিল্লীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা বিষয়টি ভালো বলতে পারবেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আদালত চাইলে ভারতে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেবে মন্ত্রণালয়। এ সময় বাংলাদেশে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে থাকা ভারতীয় নাগরিকরা খানিকটা ভীতির মধ্যে আছেন। শীঘ্রই তা কেটে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

ভারতের সঙ্গে করা সমঝোতা স্মারক পুনর্বিবেচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বার্থরক্ষা হলেই চূড়ান্ত চুক্তির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯ তম অধিবেশনে যোগ দিতে সংক্ষিপ্ত সফরে নিউইয়র্ক যাবেন প্রধান উপদেষ্টা। সে সময় বেশ কিছু রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সাথে বৈঠক হতে পারে প্রধান উপদেষ্টার এমনটাও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

গত ১৫ বছরে ভারতের মোদি সরকারের সঙ্গে অনেকগুলো সমঝোতা স্মারক সই করেছে সদ্য সাবেক শেখ হাসিনার সরকার। এসব সমঝোতা স্মারকের অনেকগুলোতে দেশের স্বার্থ উপেক্ষিত হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে গত জুন মাসে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে ১০টি সমঝোতা স্মারক সই করা হয়। এসব সমঝোতার মধ্যে ভারতকে রেল করিডোর দেওয়ার মত সমঝোতা স্মারকও রয়েছে।

আলোচিত সমঝোতা স্মারকগুলোর মধ্যে আছে, বাংলাদেশ-ভারত ডিজিটাল পার্টনারশিপ, বাংলাদেশ-ভারত গ্রিন পার্টনারশিপ, সমুদ্র সহযোগিতা ও সুনীল অর্থনীতি, ভারতের ইন-স্পেস এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সমঝোতা, বাংলাদেশ ও ভারতের রেল মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সংযোগ সংক্রান্ত, বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট ও ভারতের ন্যাশনাল ওশানোগ্রাফিক ইনস্টিটিউটের মধ্যে গবেষণা সহযোগিতা, কৌশলগত ও অপারেশনাল খাতে সামরিক শিক্ষা সহযোগিতায় ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজ, ওয়েলিংটন-ইন্ডিয়া এবং মিরপুর ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের মধ্যে নতুন সমঝোতা স্মারক সই এবং স্বাস্থ্য ও ওষুধসংক্রান্ত সমঝোতা নবায়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও প্রশমনে ভারতের ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি এবং বাংলাদেশ ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যমান সমঝোতা নবায়ন এবং মৎস্যসম্পদের উন্নয়নে বিদ্যমান সমঝোতা নবায়নসহ মোট ১০টি সমঝোতা সই হয়।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে চতুর্থ দফায় সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর জুনে প্রথম বিদেশ সফর হিসেবে ভারতে যান শেখ হাসিনা। আর ওই সফরে আলোচিত সমঝোতাগুলো সই করা হয়। কিন্তু কোনো সমঝোতারই বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ভারতের সঙ্গে হাসিনার করা সমঝোতা স্মারক পুনর্বিবেচনা করবে সরকার

Update Time : ০৫:০২:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গণঅভ্যুত্থানে বিদায় নেওয়া আওয়ামীলীগ সরকারের ১৫ বছরে প্রতিবেশি ভারতের সঙ্গে সই করা বিভিন্ন সমঝোতা স্মারক পুনর্বিবেচনা করবে বর্তমান সরকার। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন রোববার এ তথ্য জানিয়েছেন।

আজ রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

এ সময় তিনি জানানা, পাসপোর্ট বাতিল হওয়ার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে ঠিক কোন স্ট্যাটাসে অবস্থান করছেন তা সম্পর্কে সরকার অবগত নয়। এমন মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে নয়াদিল্লীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা বিষয়টি ভালো বলতে পারবেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আদালত চাইলে ভারতে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেবে মন্ত্রণালয়। এ সময় বাংলাদেশে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে থাকা ভারতীয় নাগরিকরা খানিকটা ভীতির মধ্যে আছেন। শীঘ্রই তা কেটে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

ভারতের সঙ্গে করা সমঝোতা স্মারক পুনর্বিবেচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বার্থরক্ষা হলেই চূড়ান্ত চুক্তির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯ তম অধিবেশনে যোগ দিতে সংক্ষিপ্ত সফরে নিউইয়র্ক যাবেন প্রধান উপদেষ্টা। সে সময় বেশ কিছু রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সাথে বৈঠক হতে পারে প্রধান উপদেষ্টার এমনটাও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

গত ১৫ বছরে ভারতের মোদি সরকারের সঙ্গে অনেকগুলো সমঝোতা স্মারক সই করেছে সদ্য সাবেক শেখ হাসিনার সরকার। এসব সমঝোতা স্মারকের অনেকগুলোতে দেশের স্বার্থ উপেক্ষিত হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে গত জুন মাসে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে ১০টি সমঝোতা স্মারক সই করা হয়। এসব সমঝোতার মধ্যে ভারতকে রেল করিডোর দেওয়ার মত সমঝোতা স্মারকও রয়েছে।

আলোচিত সমঝোতা স্মারকগুলোর মধ্যে আছে, বাংলাদেশ-ভারত ডিজিটাল পার্টনারশিপ, বাংলাদেশ-ভারত গ্রিন পার্টনারশিপ, সমুদ্র সহযোগিতা ও সুনীল অর্থনীতি, ভারতের ইন-স্পেস এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সমঝোতা, বাংলাদেশ ও ভারতের রেল মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সংযোগ সংক্রান্ত, বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট ও ভারতের ন্যাশনাল ওশানোগ্রাফিক ইনস্টিটিউটের মধ্যে গবেষণা সহযোগিতা, কৌশলগত ও অপারেশনাল খাতে সামরিক শিক্ষা সহযোগিতায় ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজ, ওয়েলিংটন-ইন্ডিয়া এবং মিরপুর ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের মধ্যে নতুন সমঝোতা স্মারক সই এবং স্বাস্থ্য ও ওষুধসংক্রান্ত সমঝোতা নবায়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও প্রশমনে ভারতের ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি এবং বাংলাদেশ ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যমান সমঝোতা নবায়ন এবং মৎস্যসম্পদের উন্নয়নে বিদ্যমান সমঝোতা নবায়নসহ মোট ১০টি সমঝোতা সই হয়।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে চতুর্থ দফায় সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর জুনে প্রথম বিদেশ সফর হিসেবে ভারতে যান শেখ হাসিনা। আর ওই সফরে আলোচিত সমঝোতাগুলো সই করা হয়। কিন্তু কোনো সমঝোতারই বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি।