কক্সবাজারে সাংবাদিকদের উপর আ’লীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলা
- Update Time : ০৮:৪০:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০২৪
- / 42
এরফান হোছাইন:
কক্সবাজারে কোটা আন্দোলনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দ্বারা হামলার শিকার হয়েছে সাংবাদিকরা। এসময় অন্তত ৫ সংবাদকর্মী হামলার শিকার হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে কক্সবাজার শহরের শহরের লালদিঘিরপাড় এলাকায় এঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন দেশ টেলিভিশনের কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি সৌরভ দেব, একাত্তর টিভির ক্যামেরাপার্সন হেলাল উদ্দিন, স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সিসিএন ও দেশবিদেশের মিশু দাশ গুপ্ত সহ অনেকেই। এসময় অনেকেই হুমকি পেয়েছেন। তার মধ্যে রয়েছে দৈনিক আজাদীর কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি আজিজ রাসেল ও দৈনিক পূর্বকোণের জেলা প্রতিনিধি এরফান হোছাইন।
জানা গেছে, কক্সবাজার শহরের বিমান বন্দর সড়ক থেকে কিছু সংখ্যক আন্দোলনকারী মিছিল সহকারে প্রধান সড়কে উঠে বাজারঘটার দিকে যাচ্ছিলো। পথিমধ্যে কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরির শহিদ দৌলত ময়দানে অবস্থানরত আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ধাওয়া করে আন্দোলনকারীদের। এসময় সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন সাংবাদিকরা। তখন সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলা করে আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
সাংবাদিকদের মারধর করা হয় জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি বোরহান উদ্দিন খোকনের নেতৃত্বে একদল নেতাকর্মী। মারধরের এক পর্যায়ে দৈনিক আজাদীর জেলা প্রতিনিধি আজিজ রাসেলকে অস্ত্র প্রদর্শন করেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বর্তমান যুবলীগ নেতা।
এছাড়া গত মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) রাত ৯ টায় শহীদ স্মরণী রোড়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান ভাংচুর সহ লুঠপাট করে। পরে মিছিলসহকারে গুনগাছতলা হয়ে লালদিঘী যাওয়ার পথে দৈনিক পূর্বকোণ ও বিডি সমাচারের সাংবাদিক এরফান হোছাইন ফোনে হামলাকারীদের মিছিলের ভিড়িও করতে চাইলে সোহেল রানার নের্তৃত্বে ৫/৬ জন তেড়ে আসে।
হামলার শিকার স্থানীয় সাংবাদিক মিশুগুপ্ত বলেন, রেস্টুরেন্টে বসা যুবককে মারধরের ভিডিও ধারণের সময় ছাত্রলীগ নেতা বোরহান উদ্দিন খোকন মোবাইল কেড়ে নিয়ে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এসময় আশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে মেরে ফেলার হুমকি দেন।
রিপোটার্স ইউনিটি কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক এম ওসমান গনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। এসময় তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনকারীদের সাথে আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সাথে যখন ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হচ্ছিলো তখন আমাদের সহকর্মীরা পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলা করা হয়। এঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। দ্রুত সময়ে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
হামলার শিকার দেশ টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি সৌরভ দেব বলেন, মূলত আমরা সংবাদ সংগ্রহে যাই। সেখনে একজন টমটম চালকের উপর অমানবিক হামলা হতে দেখে আমরা এগিয়ে যাই। এসময় আমাদের উপরও দেখেশুনে লাঠিসোটা দিয়ে আঘাত করা হয়।
তিনি দাবী করেন, অনেকেই টেলিভিশনের ক্যামেরা উদ্দেশ্যে করে তেড়ে যায়। ক্যামেরা বন্ধ না করায় মারধর করার চেষ্টা করে।
একাত্তর টিভির ক্যামেরাপার্সন হেলাল উদ্দিন বলেন, আমি যখন ভিডিও করছিলাম তখন আমার ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। ক্যামেরা ভাঙচুর করার চেষ্টা চালিয়েছে। এসময় আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করা হয়েছে।
এবিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি রকিবুজ্জামান জানান, এবিষয়ে পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলেছি। অভিযোগ পেলে আমরা হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের এডিশনাল এসপি (এসপিতে সুপারিশপ্রাপ্ত) রফিকুল ইসলাম জানান, সাংবাদিকদের উপর হামলার বিষয়টি দুঃখজনক। হামলার সময়ের পুলিশের টিম উপস্থিত বড় কোন ঘটনা ঘটেনি৷ তবে যারা মিডিয়া কর্মীদের উপর হামলা করেছে তাদেরকে সিসিটিভি ফুটেজ ও ক্যামেরার ফুটেজ থেকে পরিচয় সনাক্ত করে অভিযোগর ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।