রমজানে শান্তিপূর্ণ ও ইতিবাচক অনুষ্ঠানে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়নি দাবি ঢাবি কর্তৃপক্ষের

  • Update Time : ০৭:৩০:০৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মার্চ ২০২৪
  • / 56

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ কখনও রমজানে শান্তিপূর্ণ ও ইতিবাচক অনুষ্ঠান আয়োজনে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি বলে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর।

বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের পরিচালক মাহমুদ আলম প্রেরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে পবিত্র মাহে রমজানকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করায় কেউ বিভাগের চেয়ারম্যান, ডিন, পরিচালকের কাছে অনুমতি চাইতে গেলে অনুমতি না দেওয়ার অনুরোধ করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস। তবে এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে তীব্র সমালোচনা দেখা দেয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাবি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে উক্ত চিঠির ব্যাখ্যা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ দফতর। মাহমুদ আলম প্রেরিত বিজ্ঞপ্তিতে এসব সংবাদকে অসত্য, বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি কয়েকটি পত্রিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রমজানের অনুষ্ঠান আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রমজানের আলোচনা সম্পর্কিত অনুষ্ঠান আয়োজনে কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এটি সম্পূর্ণরূপে একটি অসত্য, বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে প্রক্টর অফিস থেকে সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তিতে রমজানের অনুষ্ঠান আয়োজনে ‘নিষেধাজ্ঞা’ শব্দটি কোথাও উল্লেখ নেই।  

প্রকৃতপক্ষে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কখনও রমজানে শান্তিপূর্ণ ও ইতিবাচক অনুষ্ঠান আয়োজনে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। বলাবাহুল্য, প্রতিদিনই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে আসছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, কতিপয় রাজনৈতিক সংগঠনের অনুসারীরা পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দু-একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটিয়েছে, যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত রীতিনীতি লঙ্ঘিত ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক ও সহশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিধিবদ্ধ রীতিনীতি ও নির্ধারিত স্থান রয়েছে। যা আমাদের সকলেরই মেনে চলা উচিৎ। পবিত্র রমজানকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে এরকম অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হয়েছে, যা কোনোক্রমেই কাম্য নয়।

প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রমজান উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের বেশকিছু কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আলোচনা-সমালোচনা চলাকালেই সর্বশেষ গত ১৩ মার্চ অনুষ্ঠিত ‘প্রোডাক্টিভ রমাদান’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজকদের ওপর হামলা হয়। এরপর এই ধরনের কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি না দিতে গত ১৫ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর প্রাধ্যক্ষ, অনুষদের ডিন, বিভাগের চেয়ারম্যান ও ইনস্টিটিউটের পরিচালকদের চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস।

প্রক্টর অফিস থেকে ইস্যু করা উক্ত চিঠিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি আইন বিভাগের কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী পূর্ব অনুমতি না নিয়ে ‘প্রোডাক্টিভ রমাদান’ শিরোনামে একটি সেমিনার আয়োজনের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু টাওয়ার ভবনে জমায়েত করে। ফলে, সেখানে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে এবং আইন অনুষদের কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করেছে। পরবর্তীতে কিছু রাজনৈতিক সংগঠন ও রাজনৈতিকভাবে পরিচিত ব্যক্তিরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটি তদন্ত করে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে কাজ করছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, এমতাবস্থায় শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানোর জন্য এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ড পরিচালনার অনুমতি না দেওয়ার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


রমজানে শান্তিপূর্ণ ও ইতিবাচক অনুষ্ঠানে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়নি দাবি ঢাবি কর্তৃপক্ষের

Update Time : ০৭:৩০:০৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মার্চ ২০২৪

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ কখনও রমজানে শান্তিপূর্ণ ও ইতিবাচক অনুষ্ঠান আয়োজনে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি বলে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর।

বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের পরিচালক মাহমুদ আলম প্রেরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে পবিত্র মাহে রমজানকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করায় কেউ বিভাগের চেয়ারম্যান, ডিন, পরিচালকের কাছে অনুমতি চাইতে গেলে অনুমতি না দেওয়ার অনুরোধ করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস। তবে এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে তীব্র সমালোচনা দেখা দেয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাবি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে উক্ত চিঠির ব্যাখ্যা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ দফতর। মাহমুদ আলম প্রেরিত বিজ্ঞপ্তিতে এসব সংবাদকে অসত্য, বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি কয়েকটি পত্রিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রমজানের অনুষ্ঠান আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রমজানের আলোচনা সম্পর্কিত অনুষ্ঠান আয়োজনে কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এটি সম্পূর্ণরূপে একটি অসত্য, বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে প্রক্টর অফিস থেকে সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তিতে রমজানের অনুষ্ঠান আয়োজনে ‘নিষেধাজ্ঞা’ শব্দটি কোথাও উল্লেখ নেই।  

প্রকৃতপক্ষে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কখনও রমজানে শান্তিপূর্ণ ও ইতিবাচক অনুষ্ঠান আয়োজনে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। বলাবাহুল্য, প্রতিদিনই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে আসছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, কতিপয় রাজনৈতিক সংগঠনের অনুসারীরা পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দু-একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটিয়েছে, যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত রীতিনীতি লঙ্ঘিত ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক ও সহশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিধিবদ্ধ রীতিনীতি ও নির্ধারিত স্থান রয়েছে। যা আমাদের সকলেরই মেনে চলা উচিৎ। পবিত্র রমজানকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে এরকম অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হয়েছে, যা কোনোক্রমেই কাম্য নয়।

প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রমজান উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের বেশকিছু কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আলোচনা-সমালোচনা চলাকালেই সর্বশেষ গত ১৩ মার্চ অনুষ্ঠিত ‘প্রোডাক্টিভ রমাদান’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজকদের ওপর হামলা হয়। এরপর এই ধরনের কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি না দিতে গত ১৫ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর প্রাধ্যক্ষ, অনুষদের ডিন, বিভাগের চেয়ারম্যান ও ইনস্টিটিউটের পরিচালকদের চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস।

প্রক্টর অফিস থেকে ইস্যু করা উক্ত চিঠিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি আইন বিভাগের কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী পূর্ব অনুমতি না নিয়ে ‘প্রোডাক্টিভ রমাদান’ শিরোনামে একটি সেমিনার আয়োজনের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু টাওয়ার ভবনে জমায়েত করে। ফলে, সেখানে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে এবং আইন অনুষদের কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করেছে। পরবর্তীতে কিছু রাজনৈতিক সংগঠন ও রাজনৈতিকভাবে পরিচিত ব্যক্তিরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটি তদন্ত করে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে কাজ করছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, এমতাবস্থায় শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানোর জন্য এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ড পরিচালনার অনুমতি না দেওয়ার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।