‘প্রহসনে’র নির্বাচন বাতিলের দাবি ঢাবি শিক্ষার্থীর, ‘মানসিক সমস্যাগ্রস্ত’ বলল পরিবার

  • Update Time : ০৩:৩২:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / 120

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিলসহ ৪ দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে ‘মানসিক সমস্যাগ্রস্ত’ উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে আন্দোলন থেকে সরিয়ে নিয়ে যান তার পরিবারের সদস্যরা।

আকাশ বিশ্বাস নামের ঐ শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১ম বর্ষের পড়েন । ঢাবির জগন্নাথ হলের অনাবাসিক শিক্ষার্থী তিনি।

শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) রাত নয়টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী আকাশ বিশ্বাসের মামা ‘তার বাবা অসুস্থ’ বলে তাকে বাসায় নিয়ে যান।
  
এ বিষয়ে আকাশ বিশ্বাসের মামা তন্ময় বলেন, আকাশ বেশ কিছুদিন থেকেই মানসিক সমস্যায় ভুগছে। তার নিয়মিত চিকিৎসা চলছে। আজকে আমি হঠাৎ করেই জানতে পারি আকাশ বিশ্ববিদ্যালয়ে একাই অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। পরে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে তাকে নিয়ে আসতে চাইলে সে আসতে না চাইলে ‘তার বাবা হঠাৎ অসুস্থ হয়েছে’ বলে তাকে বাসায় নেওয়ার ব্যবস্থা করি।

এ বিষয়ে জগন্নাথ হল প্রাধ্যাক্ষ অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা বলেন, ছেলেটা নন রেসিডেন্ট। সে হলে না থেকে তার ডাক্তার মামার সঙ্গে ঢাকায় একটি বাসা নিয়ে থাকে। আমি যখন জানতে পারি ছেলেটা রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান গ্রহণ করেছে তখন আমি তার বাবার নাম্বার জোগাড় করে ফোন দিলে তিনি বলেন, তার ছেলে কিছুদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছে। পরে রাত নয়টার দিকে তার মামা এসে তাকে বাসায় নিয়ে যাবার ব্যবস্থা করে।

সহকারী প্রক্টর লিটন কুমার সাহা বলেন, ছেলেটিকে কেউ ভুলভাল বুঝিয়ে ওখানে বসিয়ে দিয়েছে। তার পরিবার বলল সে মানসিকভাবে অসুস্থ। তার মামাও একজন ডাক্তার। আমাদের কাছে তার প্রেসক্রিপশনও দেখিয়েছে। তার মামা তাকে এখান থেকে নিয়ে গেছে।

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিলসহ চার দফা দাবিতে শনিবার বিকেলে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আকাশ বিশ্বাস।

অবস্থান কর্মসূচিতে উত্থাপন করা তার ৪ দফা দাবিগুলো ছিল –

১. একদলীয় সরকারের অধীনে ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করে নির্দলীয় সরকার গঠন করতে হবে ও সার্বজনীন ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

২. জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া চালু করতে হবে।

৩. গুম, খুন, নির্যাতনের বিচার করতে হবে ও শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি দিতে হবে। সকল নাগরিকের নাগরিক অধিকার ও মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।

৪. রাষ্ট্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক পরিসর সংকোচন বন্ধ করতে হবে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।

এ সময় বাংলাদেশের ছাত্র-নাগরিকদের প্রতি দলমত নির্বিশেষে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের পক্ষে একতাবদ্ধ হয়ে ৭ই জানুয়ারির ‘প্রহসনে’র নির্বাচনের বিরুদ্ধে সকলকে গণ অবস্থানের আহ্বান জানান এই ঢাবি ছাত্র।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


‘প্রহসনে’র নির্বাচন বাতিলের দাবি ঢাবি শিক্ষার্থীর, ‘মানসিক সমস্যাগ্রস্ত’ বলল পরিবার

Update Time : ০৩:৩২:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিলসহ ৪ দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে ‘মানসিক সমস্যাগ্রস্ত’ উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে আন্দোলন থেকে সরিয়ে নিয়ে যান তার পরিবারের সদস্যরা।

আকাশ বিশ্বাস নামের ঐ শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১ম বর্ষের পড়েন । ঢাবির জগন্নাথ হলের অনাবাসিক শিক্ষার্থী তিনি।

শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) রাত নয়টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী আকাশ বিশ্বাসের মামা ‘তার বাবা অসুস্থ’ বলে তাকে বাসায় নিয়ে যান।
  
এ বিষয়ে আকাশ বিশ্বাসের মামা তন্ময় বলেন, আকাশ বেশ কিছুদিন থেকেই মানসিক সমস্যায় ভুগছে। তার নিয়মিত চিকিৎসা চলছে। আজকে আমি হঠাৎ করেই জানতে পারি আকাশ বিশ্ববিদ্যালয়ে একাই অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। পরে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে তাকে নিয়ে আসতে চাইলে সে আসতে না চাইলে ‘তার বাবা হঠাৎ অসুস্থ হয়েছে’ বলে তাকে বাসায় নেওয়ার ব্যবস্থা করি।

এ বিষয়ে জগন্নাথ হল প্রাধ্যাক্ষ অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা বলেন, ছেলেটা নন রেসিডেন্ট। সে হলে না থেকে তার ডাক্তার মামার সঙ্গে ঢাকায় একটি বাসা নিয়ে থাকে। আমি যখন জানতে পারি ছেলেটা রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান গ্রহণ করেছে তখন আমি তার বাবার নাম্বার জোগাড় করে ফোন দিলে তিনি বলেন, তার ছেলে কিছুদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছে। পরে রাত নয়টার দিকে তার মামা এসে তাকে বাসায় নিয়ে যাবার ব্যবস্থা করে।

সহকারী প্রক্টর লিটন কুমার সাহা বলেন, ছেলেটিকে কেউ ভুলভাল বুঝিয়ে ওখানে বসিয়ে দিয়েছে। তার পরিবার বলল সে মানসিকভাবে অসুস্থ। তার মামাও একজন ডাক্তার। আমাদের কাছে তার প্রেসক্রিপশনও দেখিয়েছে। তার মামা তাকে এখান থেকে নিয়ে গেছে।

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিলসহ চার দফা দাবিতে শনিবার বিকেলে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আকাশ বিশ্বাস।

অবস্থান কর্মসূচিতে উত্থাপন করা তার ৪ দফা দাবিগুলো ছিল –

১. একদলীয় সরকারের অধীনে ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করে নির্দলীয় সরকার গঠন করতে হবে ও সার্বজনীন ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

২. জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া চালু করতে হবে।

৩. গুম, খুন, নির্যাতনের বিচার করতে হবে ও শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি দিতে হবে। সকল নাগরিকের নাগরিক অধিকার ও মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।

৪. রাষ্ট্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক পরিসর সংকোচন বন্ধ করতে হবে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।

এ সময় বাংলাদেশের ছাত্র-নাগরিকদের প্রতি দলমত নির্বিশেষে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের পক্ষে একতাবদ্ধ হয়ে ৭ই জানুয়ারির ‘প্রহসনে’র নির্বাচনের বিরুদ্ধে সকলকে গণ অবস্থানের আহ্বান জানান এই ঢাবি ছাত্র।