ঢাবির গ্রন্থাগারে চালু হবে ই-গেট, প্রবেশাধিকার থাকবে শুধু নিয়মিত শিক্ষার্থীদের

  • Update Time : ০৬:১৬:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / 149

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

বহিরাগত ও অছাত্র ঠেকাতে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ও বিজ্ঞান গ্রন্থাগারে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন (আরএফআইডি) গেট বা ই-গেট চালু করতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) । এই গেটের মাধ্যমে এন্ট্রি চালু হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মার্ট পরিচয়পত্র ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের গ্রন্থাগারে প্রবেশ করতে হবে। তাই ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থী, অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থী কিংবা বহিরাগত কেউ আর গ্রন্থাগারগুলোতে পড়াশোনার জন্য প্রবেশ করতে পারবে না।

জানা গেছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারির শেষ দিকে এই ই-গেট চালু হতে পারে। পড়াশোনার জন্য ঢাবি শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ হলো গ্রন্থাগার । কিন্তু সেখানে বই পড়তে গিয়ে আসন সংকটে পড়তে হয় তাদের। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও আসন না পেয়ে ফিরে যেতে হয় অনেক সময়। তাই অনেক শিক্ষার্থী মধ্যরাতে গ্রন্থাগারের সামনে ব্যাগ রেখে সিরিয়াল দেন। এদিকে আবাসিক হলগুলোর পাঠকক্ষে অধিকাংশ সময়ই প্রয়োজনীয় বই পাওয়া যায় না।

প্রতিদিন দেখা যায়, সকাল ৮ টায় গ্রন্থাগারের গেট খোলার আগ পর্যন্ত সিরিয়াল দীর্ঘ হয়। গেট খোলার সঙ্গে সঙ্গে হুড়াহুড়ি করে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।ফলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।

এমন পরিস্থিতিতে গত নভেম্বরে শিক্ষার্থীরা গ্রন্থাগারের আসন বাড়ানোসহ শৃঙ্খলা আনতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে আবেদন করেন। শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘অ্যাকসেস কন্ট্রোল গেট’ নামের ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী গ্রন্থাগারগুলোতে ই-গেট চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, কয়েক বছর আগেই ঢাবির গ্রন্থাগার দুটিতে আরএফআইডি গেট স্থাপন করা হয়। তখন গ্রন্থাগারগুলো থেকে আলাদা করে স্মার্ট কার্ড দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কারিগরি ত্রুটির কারণে সেই গেটের কার্যক্রম চালু হয়নি।

পরে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয়ভাবে স্মার্ট কার্ড দেওয়া শুরু করে শিক্ষার্থীদের। এই স্মার্ট কার্ডে পাঠযোগ্য ডিভাইস সংযুক্ত করে আরএফআইডি গেট চালু করবে প্রশাসন।

শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভোর থেকে লাইন দিতে হয় লাইব্রেরিতে একটি সিট পাওয়ার জন্য । এর পরও কখনও কখনও সিট পাওয়া যায় না। ই-গেট চালু হলে গ্রন্থাগারের আসনসংখ্যা নিয়ে যে সমস্যা আছে, সেটি কমে যাবে।

ঢাবির গ্রন্থাগারগুলোতে নিয়মিত যারা পড়তে আসেন, তাঁদের বেশির ভাগই চাকরিপ্রার্থী। এর মধ্যে অনেকেরই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব শেষ। কিন্তু, ই-গেট চালু হলে লাইব্রেরিতে শুধু নিয়মিত শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করতে পারবেন। ফলে এই সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

অ্যাকসেস কন্ট্রোল গেট কমিটির সদস্য ও অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আগে স্থাপন করা আরএফআইডি গেটগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মার্ট কার্ডের তথ্য পাঠ করা যাবে, এমন ডিভাইস সংযুক্ত করে গেটগুলো চালু করা হবে। এর জন্য যন্ত্র আমদানি করা হচ্ছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের জানুয়ারির শেষ দিক থেকে এটি চালু হতে পারে।

কমিটির আহ্বায়ক ও ভারপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক মো. নাসিরউদ্দিন মুন্সী বলেন, গ্রন্থাগারের পরিবেশসহ সার্বিক বিষয়গুলো উন্নত করার অংশ হিসোবে ই-গেট চালু করা হচ্ছে। এটি চালু হলে বহিরাগতরা প্রবেশ করতে পারবে না। ফলে নিয়মিত শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে পড়াশোনা করতে পারবেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ঢাবির গ্রন্থাগারে চালু হবে ই-গেট, প্রবেশাধিকার থাকবে শুধু নিয়মিত শিক্ষার্থীদের

Update Time : ০৬:১৬:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

বহিরাগত ও অছাত্র ঠেকাতে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ও বিজ্ঞান গ্রন্থাগারে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন (আরএফআইডি) গেট বা ই-গেট চালু করতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) । এই গেটের মাধ্যমে এন্ট্রি চালু হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মার্ট পরিচয়পত্র ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের গ্রন্থাগারে প্রবেশ করতে হবে। তাই ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থী, অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থী কিংবা বহিরাগত কেউ আর গ্রন্থাগারগুলোতে পড়াশোনার জন্য প্রবেশ করতে পারবে না।

জানা গেছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারির শেষ দিকে এই ই-গেট চালু হতে পারে। পড়াশোনার জন্য ঢাবি শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ হলো গ্রন্থাগার । কিন্তু সেখানে বই পড়তে গিয়ে আসন সংকটে পড়তে হয় তাদের। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও আসন না পেয়ে ফিরে যেতে হয় অনেক সময়। তাই অনেক শিক্ষার্থী মধ্যরাতে গ্রন্থাগারের সামনে ব্যাগ রেখে সিরিয়াল দেন। এদিকে আবাসিক হলগুলোর পাঠকক্ষে অধিকাংশ সময়ই প্রয়োজনীয় বই পাওয়া যায় না।

প্রতিদিন দেখা যায়, সকাল ৮ টায় গ্রন্থাগারের গেট খোলার আগ পর্যন্ত সিরিয়াল দীর্ঘ হয়। গেট খোলার সঙ্গে সঙ্গে হুড়াহুড়ি করে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।ফলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।

এমন পরিস্থিতিতে গত নভেম্বরে শিক্ষার্থীরা গ্রন্থাগারের আসন বাড়ানোসহ শৃঙ্খলা আনতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে আবেদন করেন। শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘অ্যাকসেস কন্ট্রোল গেট’ নামের ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী গ্রন্থাগারগুলোতে ই-গেট চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, কয়েক বছর আগেই ঢাবির গ্রন্থাগার দুটিতে আরএফআইডি গেট স্থাপন করা হয়। তখন গ্রন্থাগারগুলো থেকে আলাদা করে স্মার্ট কার্ড দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কারিগরি ত্রুটির কারণে সেই গেটের কার্যক্রম চালু হয়নি।

পরে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয়ভাবে স্মার্ট কার্ড দেওয়া শুরু করে শিক্ষার্থীদের। এই স্মার্ট কার্ডে পাঠযোগ্য ডিভাইস সংযুক্ত করে আরএফআইডি গেট চালু করবে প্রশাসন।

শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভোর থেকে লাইন দিতে হয় লাইব্রেরিতে একটি সিট পাওয়ার জন্য । এর পরও কখনও কখনও সিট পাওয়া যায় না। ই-গেট চালু হলে গ্রন্থাগারের আসনসংখ্যা নিয়ে যে সমস্যা আছে, সেটি কমে যাবে।

ঢাবির গ্রন্থাগারগুলোতে নিয়মিত যারা পড়তে আসেন, তাঁদের বেশির ভাগই চাকরিপ্রার্থী। এর মধ্যে অনেকেরই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব শেষ। কিন্তু, ই-গেট চালু হলে লাইব্রেরিতে শুধু নিয়মিত শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করতে পারবেন। ফলে এই সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

অ্যাকসেস কন্ট্রোল গেট কমিটির সদস্য ও অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আগে স্থাপন করা আরএফআইডি গেটগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মার্ট কার্ডের তথ্য পাঠ করা যাবে, এমন ডিভাইস সংযুক্ত করে গেটগুলো চালু করা হবে। এর জন্য যন্ত্র আমদানি করা হচ্ছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের জানুয়ারির শেষ দিক থেকে এটি চালু হতে পারে।

কমিটির আহ্বায়ক ও ভারপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক মো. নাসিরউদ্দিন মুন্সী বলেন, গ্রন্থাগারের পরিবেশসহ সার্বিক বিষয়গুলো উন্নত করার অংশ হিসোবে ই-গেট চালু করা হচ্ছে। এটি চালু হলে বহিরাগতরা প্রবেশ করতে পারবে না। ফলে নিয়মিত শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে পড়াশোনা করতে পারবেন।