ভারতে তিন ট্রেনের সংঘর্ষ: যেভাবে ঘটলো এত বড় দুর্ঘটনা

  • Update Time : ১০:৪৭:২৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ জুন ২০২৩
  • / 178

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

উড়িষ্যার বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। শনিবার সকাল পর্যন্ত ২৩৩ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে। আহত হয়েছেন ৯০০ জনেরও বেশি। উদ্ধারকাজ শেষ হলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনে এখনো অনেক যাত্রী আটকে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

ট্রেনের দরজা ভেঙে ও গ্যাস কাটারের সাহায্যে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে। নামানো হয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনীকেও। ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন দেশটির রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবসহ রেলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। দুর্ঘটনার কারণ জানতে এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুপুর সোয়া ৩টা নাগাদ হাওড়ার অদূরে শালিমার স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করেছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। প্রায় চার ঘণ্টা পরে উড়িষ্যার বালেশ্বরের বাহানগা বাজারের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ২৩ বগির ট্রেনটি। তবে দুর্ঘটনা কীভাবে ঘটেছে, তার একাধিক বিবরণ পাওয়া যাচ্ছে।KSRM

স্থানীয় একটি সূত্র বলছে, প্রথমে করমণ্ডল এক্সপ্রেসই তীব্র গতিতে গিয়ে ধাক্কা মারে একই লাইনে আগে থেকে চলতে থাকা একটি মালগাড়ির পেছনে। আঘাতে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন মালগাড়ির ওপরে উঠে যায়। ২৩টি বগির মধ্যে ১৫টি বগি লাইন থেকে ছিটকে পাশের ডাউন লাইনে ও নর্দমার মধ্যে গিয়ে পড়ে। তখন পাশের সেই লাইন দিয়ে আসছিল বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত যেসব বগি ডাউন লাইনের ওপর পড়েছিল, সেগুলোতে গিয়ে ধাক্কা মারে সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। এতে হাওড়াগামী সেই ট্রেনটিরও দু’টি বগি লাইনচ্যুত হয়।

দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনের একটি বগিতে ছিলেন প্রশান্ত মণ্ডল এবং তার ভাইপো কৃষ্ণপদ মণ্ডল। পেশায় রাজমিস্ত্রি প্রশান্ত যাচ্ছিলেন তামিলনাড়ুর কোয়ম্বত্তূরে। কোনোভাবে প্রাণে বেঁচেছেন তিনি। তবে পায়ে চোট লেগেছে তার। ঘটনাস্থল থেকে ফোনে তিনি বলেন, উল্টে পড়া বগি থেকে বেরিয়ে প্রথমে একটা রেলগেট দেখতে পাই। সেখানে একজন পুলিশ ছিলেন। তিনি বললেন, সিগন্যাল না পেয়ে মালগাড়িটা দাঁড়িয়েছিল। করমণ্ডল এক্সপ্রেস সজোরে গিয়ে মালগাড়ির পেছনে ধাক্কা মারে।

করমণ্ডলের ইঞ্জিনটি যেভাবে মালগাড়ির ওপর উঠে পড়েছে, তা পেছন থেকে সরাসরি ধাক্কা মারলেই সম্ভব। প্রত্যক্ষদর্শী ওই পুলিশকর্মীর বয়ানও তেমনটাই বলছে।

তবে রেল সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, মালগাড়ির সঙ্গে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কোনো সংঘর্ষ হয়নি। কোনো কারণে প্রথমে করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়। সেটি গিয়ে পড়ে পাশের ডাউন লাইনে। সেই লাইন ধরে তখন আসছিল সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। সেটি এসে ধাক্কা মারে করমণ্ডলের লাইনচ্যুত বগিগুলোকে। সেই ধাক্কায় করমণ্ডলের ইঞ্জিন তৃতীয় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়ির ওপরে উঠে যায়।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ভারতে তিন ট্রেনের সংঘর্ষ: যেভাবে ঘটলো এত বড় দুর্ঘটনা

Update Time : ১০:৪৭:২৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ জুন ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

উড়িষ্যার বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। শনিবার সকাল পর্যন্ত ২৩৩ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে। আহত হয়েছেন ৯০০ জনেরও বেশি। উদ্ধারকাজ শেষ হলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনে এখনো অনেক যাত্রী আটকে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

ট্রেনের দরজা ভেঙে ও গ্যাস কাটারের সাহায্যে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে। নামানো হয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনীকেও। ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন দেশটির রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবসহ রেলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। দুর্ঘটনার কারণ জানতে এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুপুর সোয়া ৩টা নাগাদ হাওড়ার অদূরে শালিমার স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করেছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। প্রায় চার ঘণ্টা পরে উড়িষ্যার বালেশ্বরের বাহানগা বাজারের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ২৩ বগির ট্রেনটি। তবে দুর্ঘটনা কীভাবে ঘটেছে, তার একাধিক বিবরণ পাওয়া যাচ্ছে।KSRM

স্থানীয় একটি সূত্র বলছে, প্রথমে করমণ্ডল এক্সপ্রেসই তীব্র গতিতে গিয়ে ধাক্কা মারে একই লাইনে আগে থেকে চলতে থাকা একটি মালগাড়ির পেছনে। আঘাতে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন মালগাড়ির ওপরে উঠে যায়। ২৩টি বগির মধ্যে ১৫টি বগি লাইন থেকে ছিটকে পাশের ডাউন লাইনে ও নর্দমার মধ্যে গিয়ে পড়ে। তখন পাশের সেই লাইন দিয়ে আসছিল বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত যেসব বগি ডাউন লাইনের ওপর পড়েছিল, সেগুলোতে গিয়ে ধাক্কা মারে সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। এতে হাওড়াগামী সেই ট্রেনটিরও দু’টি বগি লাইনচ্যুত হয়।

দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনের একটি বগিতে ছিলেন প্রশান্ত মণ্ডল এবং তার ভাইপো কৃষ্ণপদ মণ্ডল। পেশায় রাজমিস্ত্রি প্রশান্ত যাচ্ছিলেন তামিলনাড়ুর কোয়ম্বত্তূরে। কোনোভাবে প্রাণে বেঁচেছেন তিনি। তবে পায়ে চোট লেগেছে তার। ঘটনাস্থল থেকে ফোনে তিনি বলেন, উল্টে পড়া বগি থেকে বেরিয়ে প্রথমে একটা রেলগেট দেখতে পাই। সেখানে একজন পুলিশ ছিলেন। তিনি বললেন, সিগন্যাল না পেয়ে মালগাড়িটা দাঁড়িয়েছিল। করমণ্ডল এক্সপ্রেস সজোরে গিয়ে মালগাড়ির পেছনে ধাক্কা মারে।

করমণ্ডলের ইঞ্জিনটি যেভাবে মালগাড়ির ওপর উঠে পড়েছে, তা পেছন থেকে সরাসরি ধাক্কা মারলেই সম্ভব। প্রত্যক্ষদর্শী ওই পুলিশকর্মীর বয়ানও তেমনটাই বলছে।

তবে রেল সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, মালগাড়ির সঙ্গে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কোনো সংঘর্ষ হয়নি। কোনো কারণে প্রথমে করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়। সেটি গিয়ে পড়ে পাশের ডাউন লাইনে। সেই লাইন ধরে তখন আসছিল সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। সেটি এসে ধাক্কা মারে করমণ্ডলের লাইনচ্যুত বগিগুলোকে। সেই ধাক্কায় করমণ্ডলের ইঞ্জিন তৃতীয় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়ির ওপরে উঠে যায়।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা