গাজীপুরের ‘নগরমাতা’ জায়েদা খাতুন

  • Update Time : ০১:৩৭:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ মে ২০২৩
  • / 168

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

বাজিমাত করলেন গাজীপুরের বহিস্কৃত মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। তার মা জায়েদা খাতুন এখন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নব নির্বাচিত নগরমাতা। দেশের সবচেয়ে বড় সিটির নির্বাচনে বেসরকারী ফলাফলে মেয়র পদে জয় পেয়েছেন আলোচিত সতন্ত্র প্রার্থী টেবিল ঘড়ি প্রতীকের জায়েদা খাতুন।

সবগুলো কেন্দ্রের (৪৮০) বেসরকারী ফলাফলে জায়েদা খাতুন পেয়েছেন ২,৩৮,৯৩৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নৌকা প্রতীকের আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২,২২,৯৭৩৭ ভোট।১৬,১৯৭ ভোটে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত (২৬ মে) দেড়টায় গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম এ ফলাফল ঘোষণা করেন।

ফলাফলের পর আনন্দ-উৎসবে মেতে উঠেছেন জায়েদা খাতুনের কর্মী-সমর্থকরা।

এর আগে সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে একটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে। সকল কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ হয়েছে।

নির্বাচনে মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি। মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী এবং ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে।

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠ এবং শান্তিপূর্ণ হয়েছে। এই নির্বাচনে ৫০ শতাংশের মতো ভোট পড়েছে।

সিটিতে মেয়র পদে ৮ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৮ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।

এবারই প্রথম পুরো সিটিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দেন ভোটাররা। এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং কোন ধরনের অনিয়ম ও অপ্রিয়কর ঘটনা পর্যবেক্ষণে রয়েছে সিসি টিভি ক্যামেরা। নগরজুড়ে র‍্যাবের ৩০টি টিম এবং ২০ প্লাটুন বিজিবিসহ মোট প্রায় ১৩ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

ভোট শুরুর পর সকাল ১০টার দিকে নগরীর কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট দেন টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী জায়েদা খাতুন। এসময় তিনি বলেন, ইনশাল্লাহ ভোটের পরিবেশ ভাল। আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। তার ছেলে গাজীপুরের বরখাস্ত মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ চলছে। তবে কিছু কেন্দ্রে আমাদের এজেন্টদের বের করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে, যদিও পরে তারা কেন্দ্রে গেছে। তাদের ভয় দেখানো হয়েছে খবর পেয়েছি।

অন্যদিকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান ভোট দিয়েছেন টঙ্গীর দারুস সালাম মাদ্রাসার কেন্দ্রে। এসময় তিনি বলেছেন, জনগণের ভালোবাসা থেকে আমি বলতে পারি, জয়-পরাজয় আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত। আমি বিশ্বাস করি, ফয়সালা আসমান থেকে হয়। আল্লাহ যা চান তা জনগণের মাধ্যমে প্রকাশ করবেন।

তিনি বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে সকাল থেকে মানুষ ভোটকেন্দ্রে লাইনে দাঁড়িয়েছে। সুতরাং একটি সুষ্ঠু এবং অবাধ নির্বাচন গাজীপুরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ভোটের যে কোনো ফলাফল অবশ্যই মেনে নেব। আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। সবসময় জনগণের অপিনিয়নের প্রতি আমি শ্রদ্ধা দেখিয়ে আসছি। আজ জনগণ যাকে নির্বাচিত করবে, আমি সেটা অবশ্যই মেনে নেব। আমি রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে সব সময় জনগণের সঙ্গে ছিলাম। সমাজের উন্নয়নমূলক কাজ, শিক্ষামূলক কাজ এবং যখন দুর্যোগ এসেছিল তখন আমি জনগণের পাশে ছিলাম। আমি যেখানে গিয়েছি জনগণ আমার সঙ্গে ছিল। জয়ের বিষয়ে আমি শতভাগ আশাবাদী।

গত ৯ মে থেকে ২৩ মে মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত টানা ১৫ দিন ধরে চলে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা দিনরাত প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন।

৩২৯ দশমিক ৯০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৩ সালের ৬ জুলাই। দ্বিতীয় সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের ২৬ জুন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


গাজীপুরের ‘নগরমাতা’ জায়েদা খাতুন

Update Time : ০১:৩৭:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

বাজিমাত করলেন গাজীপুরের বহিস্কৃত মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। তার মা জায়েদা খাতুন এখন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নব নির্বাচিত নগরমাতা। দেশের সবচেয়ে বড় সিটির নির্বাচনে বেসরকারী ফলাফলে মেয়র পদে জয় পেয়েছেন আলোচিত সতন্ত্র প্রার্থী টেবিল ঘড়ি প্রতীকের জায়েদা খাতুন।

সবগুলো কেন্দ্রের (৪৮০) বেসরকারী ফলাফলে জায়েদা খাতুন পেয়েছেন ২,৩৮,৯৩৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নৌকা প্রতীকের আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২,২২,৯৭৩৭ ভোট।১৬,১৯৭ ভোটে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত (২৬ মে) দেড়টায় গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম এ ফলাফল ঘোষণা করেন।

ফলাফলের পর আনন্দ-উৎসবে মেতে উঠেছেন জায়েদা খাতুনের কর্মী-সমর্থকরা।

এর আগে সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে একটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে। সকল কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ হয়েছে।

নির্বাচনে মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি। মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী এবং ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে।

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠ এবং শান্তিপূর্ণ হয়েছে। এই নির্বাচনে ৫০ শতাংশের মতো ভোট পড়েছে।

সিটিতে মেয়র পদে ৮ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৮ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।

এবারই প্রথম পুরো সিটিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দেন ভোটাররা। এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং কোন ধরনের অনিয়ম ও অপ্রিয়কর ঘটনা পর্যবেক্ষণে রয়েছে সিসি টিভি ক্যামেরা। নগরজুড়ে র‍্যাবের ৩০টি টিম এবং ২০ প্লাটুন বিজিবিসহ মোট প্রায় ১৩ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

ভোট শুরুর পর সকাল ১০টার দিকে নগরীর কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট দেন টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী জায়েদা খাতুন। এসময় তিনি বলেন, ইনশাল্লাহ ভোটের পরিবেশ ভাল। আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। তার ছেলে গাজীপুরের বরখাস্ত মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ চলছে। তবে কিছু কেন্দ্রে আমাদের এজেন্টদের বের করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে, যদিও পরে তারা কেন্দ্রে গেছে। তাদের ভয় দেখানো হয়েছে খবর পেয়েছি।

অন্যদিকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান ভোট দিয়েছেন টঙ্গীর দারুস সালাম মাদ্রাসার কেন্দ্রে। এসময় তিনি বলেছেন, জনগণের ভালোবাসা থেকে আমি বলতে পারি, জয়-পরাজয় আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত। আমি বিশ্বাস করি, ফয়সালা আসমান থেকে হয়। আল্লাহ যা চান তা জনগণের মাধ্যমে প্রকাশ করবেন।

তিনি বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে সকাল থেকে মানুষ ভোটকেন্দ্রে লাইনে দাঁড়িয়েছে। সুতরাং একটি সুষ্ঠু এবং অবাধ নির্বাচন গাজীপুরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ভোটের যে কোনো ফলাফল অবশ্যই মেনে নেব। আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। সবসময় জনগণের অপিনিয়নের প্রতি আমি শ্রদ্ধা দেখিয়ে আসছি। আজ জনগণ যাকে নির্বাচিত করবে, আমি সেটা অবশ্যই মেনে নেব। আমি রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে সব সময় জনগণের সঙ্গে ছিলাম। সমাজের উন্নয়নমূলক কাজ, শিক্ষামূলক কাজ এবং যখন দুর্যোগ এসেছিল তখন আমি জনগণের পাশে ছিলাম। আমি যেখানে গিয়েছি জনগণ আমার সঙ্গে ছিল। জয়ের বিষয়ে আমি শতভাগ আশাবাদী।

গত ৯ মে থেকে ২৩ মে মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত টানা ১৫ দিন ধরে চলে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা দিনরাত প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন।

৩২৯ দশমিক ৯০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৩ সালের ৬ জুলাই। দ্বিতীয় সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের ২৬ জুন।