বড় আকারে বিনিয়োগের প্রস্তাব সৌদির

  • Update Time : ১২:০৮:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ মে ২০২৩
  • / 142

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

স্থিতিশীল সরকার এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ভালো রেকর্ড থাকায় বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে বড় আকারের বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে সৌদি আরব।

মঙ্গলবার দোহায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সময় এ প্রস্তাব দেন সৌদি আরবের বিনিয়োগ মন্ত্রী খালিদ এ আল-ফালিয়াহ এবং অর্থনীতি ও পরিকল্পনামন্ত্রী ফয়সাল আলিব্রাহিম।

সৌদির দুই মন্ত্রী বলেছেন, “বিনিয়োগকারী হিসেবে আমরা খুব কম ইস্যু দেখি। প্রথমত, দেশের স্থিতিশীলতা, ব্যবসায়ীরা স্থিতিশীল কিনা, বিনিয়োগের ভবিষ্যৎ। বাংলাদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ খুবই ভালো এবং সে কারণেই আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে দুই মন্ত্রীর বরাত দিয়ে একথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল উপস্থিত ছিলেন।

সৌদির মন্ত্রীরা ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ হিসাবে বাংলাদেশের প্রশংসা করে বলেছেন, “বাংলাদেশের নেতৃত্ব খুবই ভালো, দৃষ্টিভঙ্গি ভালো এবং তাদের প্রতিশ্রুতি খুবই ভালো। দেশে একটি স্থিতিশীল সরকার রয়েছে এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি খুবই ভালো।”

তারা আরও জানান, ইতোমধ্যে তারা কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছেন যার মধ্যে পতেঙ্গা বন্দর এবং এর পাশে অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন করতে চান।

“ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনা করে বাংলাদেশকে একটি আঞ্চলিক কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায় সৌদি আরব। কারণ দেশটি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে অবস্থিত। আমরা যদি এটিকে আঞ্চলিক কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলি, তাহলে আমরা ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং আরও অনেক দেশ কভার করতে পারবো” যোগ করেন সৌদির দুই মন্ত্রী।

তারা বলেন, এখানে পেট্রোকেমিক্যাল, ডিজেল, জেট ফুয়েল, সার এবং প্রধান বিতরণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি শিপিং লাইন করতে চান তারা।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ইতিমধ্যে অনুমতি দিয়েছেন এবং অবিলম্বে এটি চালু করার আহ্বান জানিয়েছেন। শেখ হাসিনা পারস্পরিক সুবিধার জন্য সৌদি আরবকে মাতারবাড়ি ও পায়রা সমুদ্র বন্দর এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রস্তাবও দেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগ সহজ করতে কোনো বাধা থাকলে তা দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

সৌদি আরবও পারস্পরিক সুবিধার জন্য কৃষির মতো বিভিন্ন খাতে সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে চায়। এ বিষয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন।

হজ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনার সময় উভয় মন্ত্রী সৌদি আরবে আবাসন ও হাসপাতাল নির্মাণে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশকে অনুরোধ করেন। সৌদি আরবের দুই মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে দুই দেশের জনগণের সুবিধার জন্য সৌদি আরবে ওষুধ, পানীয় এবং রিয়েল এস্টেট শিল্প স্থাপনের অনুরোধ জানান।

সৌদি বিনিয়োগ মন্ত্রী ও অর্থনীতি মন্ত্রী সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০ এর লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করেন। তারা বাংলাদেশের আরএমজির ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, এটি বিশ্বের টেক্সটাইল ও গার্মেন্টসের রাজধানী হয়ে উঠেছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


বড় আকারে বিনিয়োগের প্রস্তাব সৌদির

Update Time : ১২:০৮:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

স্থিতিশীল সরকার এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ভালো রেকর্ড থাকায় বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে বড় আকারের বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে সৌদি আরব।

মঙ্গলবার দোহায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সময় এ প্রস্তাব দেন সৌদি আরবের বিনিয়োগ মন্ত্রী খালিদ এ আল-ফালিয়াহ এবং অর্থনীতি ও পরিকল্পনামন্ত্রী ফয়সাল আলিব্রাহিম।

সৌদির দুই মন্ত্রী বলেছেন, “বিনিয়োগকারী হিসেবে আমরা খুব কম ইস্যু দেখি। প্রথমত, দেশের স্থিতিশীলতা, ব্যবসায়ীরা স্থিতিশীল কিনা, বিনিয়োগের ভবিষ্যৎ। বাংলাদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ খুবই ভালো এবং সে কারণেই আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে দুই মন্ত্রীর বরাত দিয়ে একথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল উপস্থিত ছিলেন।

সৌদির মন্ত্রীরা ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ হিসাবে বাংলাদেশের প্রশংসা করে বলেছেন, “বাংলাদেশের নেতৃত্ব খুবই ভালো, দৃষ্টিভঙ্গি ভালো এবং তাদের প্রতিশ্রুতি খুবই ভালো। দেশে একটি স্থিতিশীল সরকার রয়েছে এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি খুবই ভালো।”

তারা আরও জানান, ইতোমধ্যে তারা কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছেন যার মধ্যে পতেঙ্গা বন্দর এবং এর পাশে অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন করতে চান।

“ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনা করে বাংলাদেশকে একটি আঞ্চলিক কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায় সৌদি আরব। কারণ দেশটি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে অবস্থিত। আমরা যদি এটিকে আঞ্চলিক কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলি, তাহলে আমরা ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং আরও অনেক দেশ কভার করতে পারবো” যোগ করেন সৌদির দুই মন্ত্রী।

তারা বলেন, এখানে পেট্রোকেমিক্যাল, ডিজেল, জেট ফুয়েল, সার এবং প্রধান বিতরণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি শিপিং লাইন করতে চান তারা।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ইতিমধ্যে অনুমতি দিয়েছেন এবং অবিলম্বে এটি চালু করার আহ্বান জানিয়েছেন। শেখ হাসিনা পারস্পরিক সুবিধার জন্য সৌদি আরবকে মাতারবাড়ি ও পায়রা সমুদ্র বন্দর এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রস্তাবও দেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগ সহজ করতে কোনো বাধা থাকলে তা দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

সৌদি আরবও পারস্পরিক সুবিধার জন্য কৃষির মতো বিভিন্ন খাতে সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে চায়। এ বিষয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন।

হজ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনার সময় উভয় মন্ত্রী সৌদি আরবে আবাসন ও হাসপাতাল নির্মাণে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশকে অনুরোধ করেন। সৌদি আরবের দুই মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে দুই দেশের জনগণের সুবিধার জন্য সৌদি আরবে ওষুধ, পানীয় এবং রিয়েল এস্টেট শিল্প স্থাপনের অনুরোধ জানান।

সৌদি বিনিয়োগ মন্ত্রী ও অর্থনীতি মন্ত্রী সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০ এর লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করেন। তারা বাংলাদেশের আরএমজির ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, এটি বিশ্বের টেক্সটাইল ও গার্মেন্টসের রাজধানী হয়ে উঠেছে।