বঙ্গবন্ধুর ‘জুলিও কুরি’ পদক প্রাপ্তির ৫০তম বছর আজ

  • Update Time : ১২:০৩:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০২৩
  • / 137

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

আজ ২৩ মে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিও কুরি পদক প্রাপ্তির পঞ্চাশতম বছর । ১৯৭৩ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধুর হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পদক তুলে দেয়া হয়। স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো রাষ্ট্রনেতার সেটিই ছিল প্রথম আন্তর্জাতিক পদক লাভ।

একাত্তর সালে এই অবিসংবাদিত নেতার নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। এর মাত্র দুবছর পরে বিশ্বশান্তি পরিষদ আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধুকে ‘জুলিও কুরি’ পদকে আর্ন্তজাতিক স্বীকৃতি প্রদান করে।

বিশ্বশান্তি পরিষদের প্রেসিডেন্সিয়াল কমিটির সভায় বিশ্বের ১৪০টি দেশের প্রায় ২০০ সদস্যের উপস্থিতিতে ও ঐক্যমতের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর জীবন দর্শন, আর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়কত্বের প্রেক্ষাপট বিবেচনায়, বঙ্গবন্ধুকে জুলিও কুরি পদক প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিশ্বশান্তি পরিষদ ১৯৭২ সালের ১০ অক্টোবর পদক প্রাপক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর নাম ঘোষণা করে। আর পরের বছর ২৩ মে এশীয় শান্তি সম্মেলনের এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে সেই পদক বঙ্গবন্ধুকে পরিয়ে দেন পরিষদের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল রমেশচন্দ্র।

সেই অনুষ্ঠানে রমেশচন্দ্র বলেছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলার নন, তিনি বিশ্বের এবং তিনি বিশ্ববন্ধু।’

বঙ্গবন্ধুর এই পদকপ্রাপ্তির আগে কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো, ভিয়েতনামের সংগ্রামী নেতা হো চি মিন, চিলির গণ-আন্দোলনের নেতা সালভেদর আলেন্দে, ফিলিস্তিনের জনদরদি নেতা ইয়াসির আরাফাত প্রমুখ এই পদকপ্রাপ্ত হন। মূলত সাম্রাজ্যবাদ ও ফ্যাসিবাদ বিরোধিতা এবং মানবতা ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় যাঁরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তাঁরা এই পদকে ভূষিত হয়ে আসছিলেন।

১৯৫০ সাল থেকে এই পদক প্রদান করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের কালপর্বে ভারত-সোভিয়েত শান্তি মৈত্রী ও সহযোগিতা চুক্তি ১৯৭১ এবং বাংলাদেশ-ভারত শান্তি, মৈত্রী ও সহযোগিতা-চুক্তি ১৯৭২, বাংলাদেশের মৈত্রী-সম্পর্কে এই উপমহাদেশে উত্তেজনা প্রশমন ও শান্তি স্থাপনের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করেন বঙ্গবন্ধু।

এছাড়াও বঙ্গবন্ধু সরকারের জোট নিরপেক্ষ নীতি অনুসরণ এবং শান্তি ও ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান গ্রহণের নীতির ফলে বাংলাদেশ বিশ্ব সভায় একটি ন্যায়ানুগ দেশের মর্যাদা লাভ করে। সবার প্রতি বন্ধুত্বের ভিত্তিতে বৈদেশিক নীতি ঘোষণা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, ‘পৃথিবীর বৃহত্তম শক্তি যে অর্থ ব্যয় করে মানুষ মারার অস্ত্র তৈরি করছে, সেই অর্থ গরিব দেশগুলোকে সাহায্য দিলে পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা হতে পারে।’

সেই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭২ সালের ১০ অক্টোবর চিলির রাজধানী সান্তিয়াগোতে শান্তি পরিষদের মহাসচিব রমেশ চন্দ্র বিশ্ব শান্তি পরিষদের প্রেসিডেন্সিয়াল কমিটির সভায় বাঙালি জাতির মুক্তি আন্দোলন এবং বিশ্ব শান্তির সপক্ষে বঙ্গবন্ধুর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রদানের জন্য প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।

বাংলায় এই পদকের নাম ‘জুলিও কুরি’ বলা হলেও এর ফরাসি উচ্চারণ ‘জোলিও ক্যুরি’। ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী জ্যঁ ফ্রেডেরিক জোলিও ক্যুরি ১৯৫৮ সালে মৃত্যুবরণ করার পর তাঁরই নামানুসারে বিশ্বশান্তি পরিষদ ১৯৫৯ সাল থেকে তাদের শান্তি পদকের নাম রাখে ‘জোলিও ক্যুরি’।

ফ্রেডেরিকের মূল নাম ছিল জ্যঁ ফ্রেডেরিক জোলিও। ফ্রেডেরিকের স্ত্রী ইরেন ক্যুরি। তিনিও বিজ্ঞানী। বিয়ের পর ফ্রেডেরিক ও ইরেন উভয়ে উভয়ের পদবি গ্রহণ করেন এবং একজনের নাম হয় জ্যঁ ফ্রেডেরিক জোলিও ক্যুরি এবং অন্যজনের নাম ইরেন জোলিও ক্যুরি। পরে যৌথভাবে তাঁরা নোবেল পুরস্কারও লাভ করেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফ্রেডেরিক জোলিও ক্যুরি শুধু বিজ্ঞানী হিসেবেই কাজ করেননি, তিনি গেরিলা বাহিনীতে যোগ দিয়ে এবং তাদের জন্য হাতিয়ার তৈরি করেও অবদান রাখেন। তাঁর অবদানের কারণেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিসমাপ্তি সহজতর হয়। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এই যুদ্ধ পরিসমাপ্তি ছিল খুবই জরুরি। তিনি নিজে বিশ্বশান্তি পরিষদের সভাপতিও ছিলেন।

বিশ্বশান্তি ছিল বঙ্গবন্ধুর জীবনের মূলনীতি। ১৯৫৬ সালের ৫–৯ এপ্রিল স্টকহোমে বিশ্বশান্তি পরিষদের সম্মেলনেও অংশ নেন বঙ্গবন্ধু। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিশ্বশান্তি আমার জীবনের মূলনীতি। নিপীড়িত, নির্যাতিত, শোষিত ও স্বাধীনতাকামী সংগ্রামী মানুষ, যে কোনো স্থানেই হোক না কেন, তাঁদের সঙ্গে আমি রয়েছি। আমরা চাই বিশ্বের সর্বত্র শান্তি বজায় থাকুক, তাকে সুসংহত করা হোক।’

ছাত্রাবস্থা থেকেই বিশ্বশান্তিতে বঙ্গবন্ধুর আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে তিনি দীর্ঘদিন কারাভোগ করে মুক্তি পেয়ে সে বছরই অক্টোবরে চীনে অনুষ্ঠিত ‘পিস কনফারেন্স অব দ্য এশিয়ান অ্যান্ড প্যাসিফিক রিজিওন্স’-এ যোগ দেন বঙ্গবন্ধু। এই সম্মেলনে যোগ দিয়ে তিনি প্রাসঙ্গিকভাবে অন্য ৩৭টি দেশ থেকে আগত শান্তিকামী নেতাদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেছিলেন।

বিশিষ্টজনেরা মনে করেন , ১৯৭১ সালে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে বাঙালি জাতির মুক্তিযুদ্ধ শুধু স্বাধীনতা এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের লড়াই ছিল না। এ লড়াই ছিল দখলদার পাকিস্তানী বাহিনী এবং তাদের আন্তর্জাতিক মোড়ল যুদ্ধবাজ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে শান্তিকামী মানুষের লড়াই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন সেই শান্তির লড়াইয়ের প্রধান নেতা। ফলে, বিশ্ব শান্তি পরিষদ ১৯৭২ সালের ২৩ মে অত্যন্ত ন্যায্য কারণেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিশ্ব শান্তি এবং স্বাধীনতার লড়াইয়ে অবদান রাখার জন্য জুলিও কুরি শান্তি পদকের মতো আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত করে।

বঙ্গবন্ধুর এই জুলিও কুরি শান্তি পদকপ্রাপ্তি গোটা বাঙালি জাতির জন্যও বিশ্ব দরবারে এক বিরাট সম্মানের

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


বঙ্গবন্ধুর ‘জুলিও কুরি’ পদক প্রাপ্তির ৫০তম বছর আজ

Update Time : ১২:০৩:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

আজ ২৩ মে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিও কুরি পদক প্রাপ্তির পঞ্চাশতম বছর । ১৯৭৩ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধুর হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পদক তুলে দেয়া হয়। স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো রাষ্ট্রনেতার সেটিই ছিল প্রথম আন্তর্জাতিক পদক লাভ।

একাত্তর সালে এই অবিসংবাদিত নেতার নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। এর মাত্র দুবছর পরে বিশ্বশান্তি পরিষদ আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধুকে ‘জুলিও কুরি’ পদকে আর্ন্তজাতিক স্বীকৃতি প্রদান করে।

বিশ্বশান্তি পরিষদের প্রেসিডেন্সিয়াল কমিটির সভায় বিশ্বের ১৪০টি দেশের প্রায় ২০০ সদস্যের উপস্থিতিতে ও ঐক্যমতের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর জীবন দর্শন, আর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়কত্বের প্রেক্ষাপট বিবেচনায়, বঙ্গবন্ধুকে জুলিও কুরি পদক প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিশ্বশান্তি পরিষদ ১৯৭২ সালের ১০ অক্টোবর পদক প্রাপক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর নাম ঘোষণা করে। আর পরের বছর ২৩ মে এশীয় শান্তি সম্মেলনের এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে সেই পদক বঙ্গবন্ধুকে পরিয়ে দেন পরিষদের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল রমেশচন্দ্র।

সেই অনুষ্ঠানে রমেশচন্দ্র বলেছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলার নন, তিনি বিশ্বের এবং তিনি বিশ্ববন্ধু।’

বঙ্গবন্ধুর এই পদকপ্রাপ্তির আগে কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো, ভিয়েতনামের সংগ্রামী নেতা হো চি মিন, চিলির গণ-আন্দোলনের নেতা সালভেদর আলেন্দে, ফিলিস্তিনের জনদরদি নেতা ইয়াসির আরাফাত প্রমুখ এই পদকপ্রাপ্ত হন। মূলত সাম্রাজ্যবাদ ও ফ্যাসিবাদ বিরোধিতা এবং মানবতা ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় যাঁরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তাঁরা এই পদকে ভূষিত হয়ে আসছিলেন।

১৯৫০ সাল থেকে এই পদক প্রদান করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের কালপর্বে ভারত-সোভিয়েত শান্তি মৈত্রী ও সহযোগিতা চুক্তি ১৯৭১ এবং বাংলাদেশ-ভারত শান্তি, মৈত্রী ও সহযোগিতা-চুক্তি ১৯৭২, বাংলাদেশের মৈত্রী-সম্পর্কে এই উপমহাদেশে উত্তেজনা প্রশমন ও শান্তি স্থাপনের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করেন বঙ্গবন্ধু।

এছাড়াও বঙ্গবন্ধু সরকারের জোট নিরপেক্ষ নীতি অনুসরণ এবং শান্তি ও ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান গ্রহণের নীতির ফলে বাংলাদেশ বিশ্ব সভায় একটি ন্যায়ানুগ দেশের মর্যাদা লাভ করে। সবার প্রতি বন্ধুত্বের ভিত্তিতে বৈদেশিক নীতি ঘোষণা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, ‘পৃথিবীর বৃহত্তম শক্তি যে অর্থ ব্যয় করে মানুষ মারার অস্ত্র তৈরি করছে, সেই অর্থ গরিব দেশগুলোকে সাহায্য দিলে পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা হতে পারে।’

সেই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭২ সালের ১০ অক্টোবর চিলির রাজধানী সান্তিয়াগোতে শান্তি পরিষদের মহাসচিব রমেশ চন্দ্র বিশ্ব শান্তি পরিষদের প্রেসিডেন্সিয়াল কমিটির সভায় বাঙালি জাতির মুক্তি আন্দোলন এবং বিশ্ব শান্তির সপক্ষে বঙ্গবন্ধুর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রদানের জন্য প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।

বাংলায় এই পদকের নাম ‘জুলিও কুরি’ বলা হলেও এর ফরাসি উচ্চারণ ‘জোলিও ক্যুরি’। ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী জ্যঁ ফ্রেডেরিক জোলিও ক্যুরি ১৯৫৮ সালে মৃত্যুবরণ করার পর তাঁরই নামানুসারে বিশ্বশান্তি পরিষদ ১৯৫৯ সাল থেকে তাদের শান্তি পদকের নাম রাখে ‘জোলিও ক্যুরি’।

ফ্রেডেরিকের মূল নাম ছিল জ্যঁ ফ্রেডেরিক জোলিও। ফ্রেডেরিকের স্ত্রী ইরেন ক্যুরি। তিনিও বিজ্ঞানী। বিয়ের পর ফ্রেডেরিক ও ইরেন উভয়ে উভয়ের পদবি গ্রহণ করেন এবং একজনের নাম হয় জ্যঁ ফ্রেডেরিক জোলিও ক্যুরি এবং অন্যজনের নাম ইরেন জোলিও ক্যুরি। পরে যৌথভাবে তাঁরা নোবেল পুরস্কারও লাভ করেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফ্রেডেরিক জোলিও ক্যুরি শুধু বিজ্ঞানী হিসেবেই কাজ করেননি, তিনি গেরিলা বাহিনীতে যোগ দিয়ে এবং তাদের জন্য হাতিয়ার তৈরি করেও অবদান রাখেন। তাঁর অবদানের কারণেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিসমাপ্তি সহজতর হয়। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এই যুদ্ধ পরিসমাপ্তি ছিল খুবই জরুরি। তিনি নিজে বিশ্বশান্তি পরিষদের সভাপতিও ছিলেন।

বিশ্বশান্তি ছিল বঙ্গবন্ধুর জীবনের মূলনীতি। ১৯৫৬ সালের ৫–৯ এপ্রিল স্টকহোমে বিশ্বশান্তি পরিষদের সম্মেলনেও অংশ নেন বঙ্গবন্ধু। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিশ্বশান্তি আমার জীবনের মূলনীতি। নিপীড়িত, নির্যাতিত, শোষিত ও স্বাধীনতাকামী সংগ্রামী মানুষ, যে কোনো স্থানেই হোক না কেন, তাঁদের সঙ্গে আমি রয়েছি। আমরা চাই বিশ্বের সর্বত্র শান্তি বজায় থাকুক, তাকে সুসংহত করা হোক।’

ছাত্রাবস্থা থেকেই বিশ্বশান্তিতে বঙ্গবন্ধুর আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে তিনি দীর্ঘদিন কারাভোগ করে মুক্তি পেয়ে সে বছরই অক্টোবরে চীনে অনুষ্ঠিত ‘পিস কনফারেন্স অব দ্য এশিয়ান অ্যান্ড প্যাসিফিক রিজিওন্স’-এ যোগ দেন বঙ্গবন্ধু। এই সম্মেলনে যোগ দিয়ে তিনি প্রাসঙ্গিকভাবে অন্য ৩৭টি দেশ থেকে আগত শান্তিকামী নেতাদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেছিলেন।

বিশিষ্টজনেরা মনে করেন , ১৯৭১ সালে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে বাঙালি জাতির মুক্তিযুদ্ধ শুধু স্বাধীনতা এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের লড়াই ছিল না। এ লড়াই ছিল দখলদার পাকিস্তানী বাহিনী এবং তাদের আন্তর্জাতিক মোড়ল যুদ্ধবাজ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে শান্তিকামী মানুষের লড়াই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন সেই শান্তির লড়াইয়ের প্রধান নেতা। ফলে, বিশ্ব শান্তি পরিষদ ১৯৭২ সালের ২৩ মে অত্যন্ত ন্যায্য কারণেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিশ্ব শান্তি এবং স্বাধীনতার লড়াইয়ে অবদান রাখার জন্য জুলিও কুরি শান্তি পদকের মতো আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত করে।

বঙ্গবন্ধুর এই জুলিও কুরি শান্তি পদকপ্রাপ্তি গোটা বাঙালি জাতির জন্যও বিশ্ব দরবারে এক বিরাট সম্মানের