৪০৬ কোটি টাকার ৩ কোটি ‘ব্ল্যাঙ্ক স্মার্ট কার্ড’ কিনছে সরকার
- Update Time : ১০:৪৬:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ মে ২০২৩
- / 128
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত ‘বাংলাদেশ মেশিন টুলস্ ফ্যাক্টরী লিমিটেড (বিএমটিএফ) থেকে ৩ কোটি ব্ল্যাঙ্ক স্মার্ট কার্ড কেনা হচ্ছে। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের জন্য এই কার্ড কিনতে ব্যয় হবে ৪০৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
অন্যদিকে, ভারত থেকে ১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল আমদানিসহ ৮টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে প্রায় ৩ হাজার ২০৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার (৯ মে) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ক্রয় কমিটির ভার্চুয়াল সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৈঠক শেষে এক ভার্চুয়াল ব্রিফিং-এ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ কর্তৃক ‘আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং এক্সেস টু সার্ভিসেস (২য় পর্যায়)’ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত ‘বাংলাদেশ মেশিন টুলস্ ফ্যাক্টরী লিমিটেড (বিএমটিএফ) থেকে ৩ কোটি ব্ল্যাংক স্মার্ট কার্ড ক্রয়ের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৪০৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
জানা গেছে, গত ৯ মার্চ অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় নির্বাচন কমিশনের জন্য সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ব্ল্যাংক স্মার্ট কার্ড কেনার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। ওই সভা শেষে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ নির্বাচন কমিশনের জন্য ‘ব্ল্যাংক স্মার্ট কার্ড’ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, অতিরিক্ত সচিব জানান, বৈঠকে দেশে ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাতে ‘ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ’ (টিসিবি) কর্তৃক আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ‘সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি’-তে ১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। দুই লিটারের পেট বোতলে এই সয়াবিন তেল সরবরাহ করবে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ‘গুভেন ট্রেডার্স প্রাইভেট লিমিটেড’। প্রতি লিটার তেল ১৪৬.১০ টাকা দরে এতে মোট ব্যয় হবে ১৪৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
অতিরিক্ত সচিব জানান, বৈঠকে টিসিবি কর্তৃক আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চিনি ক্রয়ের পৃথক আরেকটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এটি সরবরাহ করবে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘স্মার্ট মেট্রিক্স পিটিই লিমিটেড’ (স্থানীয় এজেন্ট: মার্ক লাইন এন্টারপ্রাইজ, ঢাকা)। এতে ব্যয় হবে ৬৬ কোটি ৭৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা।
তিনি জানান, বৈঠকে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্পের ডব্লিউপি-০৪ প্যাকেজের দুটি লটের (লট নং ডিএস-৭ ও ডিএস-৮) পূর্ত কাজ সম্পাদনে ঠিকাদার নিয়োগের লক্ষ্যে দুটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে লট নং ডিএস-৭-এর পূর্ত কাজটি করবে যৌথভাবে চীনা প্রতিষ্ঠান ‘এসআরবিজি’ ও দেশীয় প্রতিষ্ঠান ‘বিটিসি’। এতে ব্যয় হবে ৯৪৭ কোটি ৭৪ লাখ ১৩ হাজার টাকা।
অন্যদিকে একই প্যাকেজের লট নং ডিএস-৮-এর পূর্ত কাজটি করবে যৌথভাবে চীনা প্রতিষ্ঠান‘সিএসসিইসি৭’ ও দেশীয় প্রতিষ্ঠান ‘স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ লিমিটেড’। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ১৭৮ কোটি ৬৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। কমিটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে।
অতিরিক্ত সচিব জানান, বৈঠকে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘শেরপুর (কানাসাখোলা)-ভীমগঞ্জ-নারায়ণখোলা-রামভদ্রপুর-ময়মনসিংহ (রহমতপুর) সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্পের দুটি প্যাকেজের পূর্ত কাজ সম্পাদনে ঠিকাদার নিয়োগের দুটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্যাকেজ নং পিডব্লিউ-০১-এর পূর্ত কাজটি করবে যৌথভাবে ‘মোজাহার এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড’, ‘ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড’ ও ‘সাগর ইনফো বিল্ডার্স লিমিটেড’। এতে ব্যয় হবে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে একই প্রকল্পের প্যাকেজ নং পিডব্লিউ-০২-এর পূর্ত কাজটি করবে যৌথভাবে ‘ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড’ ও ‘হাসান টেকনো বিল্ডার্স লিমিটেড’। এতে ব্যয় হবে ১৮০ কোটি টাকা।
এছাড়া বৈঠকে ‘গৌরিপুর-আনন্দগঞ্জ-মধুপুর-দেওয়ানগঞ্জ বাজার-হোসেনপুর জেলা মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণ’ প্রকল্পের প্যাকেজ নং ডব্লিউপি-০২-এর পূর্ত কাজ সম্পাদনে ঠিকাদার নিয়োগের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ কাজটি করতে তাহের ব্রাদার্স লিমিটেডকে নিয়োগ প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হবে ১৩১ কোটি ৪৭ লাখ ৮৬ হাজার টাকা।
অতিরিক্ত সচিব জানান, ক্রয় কমিটির বৈঠকের আগে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র ভার্চুয়াল সভায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক ‘হেলথ অ্যান্ড জেন্ডার সাপোর্ট ইন কক্সবাজার ডিস্ট্রিক্ট (২য় সংশোধিত)’ অপারেশনাল প্ল্যানের আওতায় ‘এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড’ থেকে অত্যাবশ্যকীয় ঔষধ এবং ‘ইউনাইটেড ন্যাশনস অফিস ফর প্রজেক্ট সার্ভিসেস’ থেকে ‘ফাস্টলাইন টিবি ড্রাগস’ এবং ‘মেডিকেল অ্যান্ড সার্জিকাল সাপ্লাইস’ ও ল্যাবরেটরি ইক্যুইপমেন্ট’ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্রয়ের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।