এপ্রিলের প্রথম ৩ সপ্তাহে রেকর্ড রেমিট্যান্স এসেছে দেশে

  • Update Time : ০৬:৪৯:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৩
  • / 142

নিজস্ব প্রতিবেদক

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এপ্রিলের প্রথম তিন সপ্তাহে রেকর্ড রেমিট্যান্স আসছে দেশে। পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে বৈধ চ্যানেলে ১২৭ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দেশীয় মুদ্রায় (প্র‌তি ডলার ১০৭ টাকা ধ‌রে) যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৩ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা। এপ্রিলের প্রথম ২১ দিনে এই অর্থ আসে।

সোমবার (২৪ এপ্রিল) প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এপ্রিলের প্রথম ২১ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৭১ দশমিক ৭১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (১২৭ কোটি ১৭ লাখ ডলার)। তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৭ কোটি ৩৭ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ কোটি ৬৩ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১০৫ কোটি ৭৩ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪২ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার।

এপ্রিলের প্রথম ৭ দিনে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ৪৭ কোটি ৬৮ লাখ মার্কিন ডলার। ৮ থেকে ১৪ এপ্রিল পাঠিয়েছেন ৪৮ কোটি ১৮ লাখ মার্কিন ডলার। আর ১৫ থেকে ২১ এপ্রিল পাঠান ৩১ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রবাসীরা রোজার শুরু ও মাঝামাঝিতে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। শেষ দিকে তা কমে গেছে। যে কারণে চলতি মাসের প্রথমদিকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেশি থাকলেও শেষ দিকে কম ছিল। ধারণা করা হচ্ছে এপ্রিলের শেষ সপ্তাহেও রেমিট্যান্স কম আসবে। তেমনটা হলে এ মাসে গতমাসের চেয়ে রেমিট্যান্সের পরিমাণ কমে যাবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে বৈধপথে ২০১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় (প্র‌তি ডলার ১০৭ টাকা ধ‌রে) যার পরিমাণ ২১ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। যা আগের মাস ফেব্রুয়ারির চেয়ে ৪৫ কোটি ৭২ লাখ ডলার বেশি ছিল। ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলার।

এছাড়া আগের বছরের (২০২২ সালের) মার্চ মাসের তুলনায় রেমিট্যান্স বেড়েছে ৮ দশ‌মিক ৪৯ শতাংশ বা ১৫ কো‌টি ৮০ লাখ ডলার। গত বছর মার্চে প্রবাসী আয় ছিল ১৮৫ কোটি ৯৭ লাখ ডলার।

২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম (জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত) ৯ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৬৩০ কোটি মার্কিন ডলার। আগের অর্থবছরে একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৫২৯ কোটি ডলার। আলোচ্য সময়ে ৭৪ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স বেশি এসেছে।

বিদায়ী ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার।

রেমিট্যান্স বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সর্বশেষ সেবার বিনিময়ে দেশে রেমিট্যান্স আয় আনতে ফরম সি পূরণ করার শর্ত শিথিল করেছে। পাশাপাশি সেবা খাতের উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকদের ঘোষণা ছাড়াই ২০ হাজার মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

রেমিট্যান্স বাড়াতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে বৈধ উপায়ে ওয়েজ আর্নার্স রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা, রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের সিআইপি সম্মাননা দেওয়া, রেমিট্যান্স বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজ করার পাশাপাশি অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ন অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া, ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশের ব্যাংকের সঙ্গে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করা এবং রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর চার্জ ফি মওকুফ করা হয়েছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


এপ্রিলের প্রথম ৩ সপ্তাহে রেকর্ড রেমিট্যান্স এসেছে দেশে

Update Time : ০৬:৪৯:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এপ্রিলের প্রথম তিন সপ্তাহে রেকর্ড রেমিট্যান্স আসছে দেশে। পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে বৈধ চ্যানেলে ১২৭ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দেশীয় মুদ্রায় (প্র‌তি ডলার ১০৭ টাকা ধ‌রে) যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৩ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা। এপ্রিলের প্রথম ২১ দিনে এই অর্থ আসে।

সোমবার (২৪ এপ্রিল) প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এপ্রিলের প্রথম ২১ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৭১ দশমিক ৭১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (১২৭ কোটি ১৭ লাখ ডলার)। তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৭ কোটি ৩৭ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ কোটি ৬৩ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১০৫ কোটি ৭৩ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪২ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার।

এপ্রিলের প্রথম ৭ দিনে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ৪৭ কোটি ৬৮ লাখ মার্কিন ডলার। ৮ থেকে ১৪ এপ্রিল পাঠিয়েছেন ৪৮ কোটি ১৮ লাখ মার্কিন ডলার। আর ১৫ থেকে ২১ এপ্রিল পাঠান ৩১ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রবাসীরা রোজার শুরু ও মাঝামাঝিতে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। শেষ দিকে তা কমে গেছে। যে কারণে চলতি মাসের প্রথমদিকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেশি থাকলেও শেষ দিকে কম ছিল। ধারণা করা হচ্ছে এপ্রিলের শেষ সপ্তাহেও রেমিট্যান্স কম আসবে। তেমনটা হলে এ মাসে গতমাসের চেয়ে রেমিট্যান্সের পরিমাণ কমে যাবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে বৈধপথে ২০১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় (প্র‌তি ডলার ১০৭ টাকা ধ‌রে) যার পরিমাণ ২১ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। যা আগের মাস ফেব্রুয়ারির চেয়ে ৪৫ কোটি ৭২ লাখ ডলার বেশি ছিল। ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলার।

এছাড়া আগের বছরের (২০২২ সালের) মার্চ মাসের তুলনায় রেমিট্যান্স বেড়েছে ৮ দশ‌মিক ৪৯ শতাংশ বা ১৫ কো‌টি ৮০ লাখ ডলার। গত বছর মার্চে প্রবাসী আয় ছিল ১৮৫ কোটি ৯৭ লাখ ডলার।

২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম (জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত) ৯ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৬৩০ কোটি মার্কিন ডলার। আগের অর্থবছরে একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৫২৯ কোটি ডলার। আলোচ্য সময়ে ৭৪ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স বেশি এসেছে।

বিদায়ী ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার।

রেমিট্যান্স বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সর্বশেষ সেবার বিনিময়ে দেশে রেমিট্যান্স আয় আনতে ফরম সি পূরণ করার শর্ত শিথিল করেছে। পাশাপাশি সেবা খাতের উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকদের ঘোষণা ছাড়াই ২০ হাজার মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

রেমিট্যান্স বাড়াতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে বৈধ উপায়ে ওয়েজ আর্নার্স রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা, রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের সিআইপি সম্মাননা দেওয়া, রেমিট্যান্স বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজ করার পাশাপাশি অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ন অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া, ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশের ব্যাংকের সঙ্গে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করা এবং রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর চার্জ ফি মওকুফ করা হয়েছে।