আমাদের কয়েকশত বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রয়োজন: শিবলী রুবাইয়াত

  • Update Time : ১১:০৫:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২২
  • / 204

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, ২০৩০ ও ২০৪১ সালের যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, তা অর্জনের জন্য আমাদের কয়েকশত বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রয়োজন।

তিনি বলেন, আমরা সারা পৃথিবীতে যে ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছি সেটা শুধু ক্যাপিটাল মার্কেটের বিনিয়োগের জন্য নয়। কয়েকশত বিলিয়ন বিনিয়োগ আমরা করতে পারব, কিন্তু তার দুই-তিনগুণ বিনিয়োগ আমাদের দরকার। তাই কান্ট্রি ব্র্যান্ডিং এখন খুবই জরুরি। এটা করা হলেই দেশে-বিদেশি বিনিয়োগ আসবে।

শনিবার (২০ নভেম্বর) সকালে নোয়াখালী জেলার মাইজদীর দত্তেরহাটে অবস্থিত নোয়া কনভেনশন সেন্টার অ্যান্ড হোটেলে অনুষ্ঠিত বিনিয়োগ শিক্ষা কনফারেন্সে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সম্পর্কে তিনি বলেন, মার্কেট উঠুক আর নামুক, সবখানেই লাভ করা যায়। তাই বুঝে-শুনে বিনিয়োগ করলে কখনো লস হয় না। উঠতি মার্কেটেও লাভ করা যায়, আবার পড়তি মার্কেটেও লাভ করা যায়।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, সর্বকালের সেরা বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেট তো কখনও লস করে না। ধস নামুক বা যাই হোক এ লোকের সব সময় লাভ হয়। কারণ ওয়ারেন বাফেট কখনো উচ্চ মার্কেটে শেয়ার কিনেন না। তিনি সব সময় পড়তি মার্কেটে শেয়ার কিনেন। তাই তিনি প্রত্যেকবার লাভ করে পৃথিবীর প্রথম কয়েকজন ধনী লোকদের মধ্যে একজন। তাই পুঁজিবাজারে বুঝে-শুনে বিনিয়োগ করতে হবে।

তিনি বলেন, বন্ডগুলো এখন ভালো রিটার্ন দিচ্ছে। বন্ডগুলো এখন সিকিউড ইনভেস্টমেন্ট। তারা বাৎসরিক একটি রিটার্ন এখন পৌঁছে দেয়। তাই আপনাদের আর কিছুই করার দরকার নেই। আপনি সেখানে বিনিয়োগ করে বসে থাকতে পারেন। কারণ তারা এ মুহূর্তে এফডিআরের চেয়ে বেশি রিটার্ন দিচ্ছে। জিরো কুপন বন্ড ট্যাক্স ফ্রি রয়েছে। সেখানেও বিনিয়োগ করে চুপ করে বসে থাকতে পারেন। আমাদের মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোকে এখন ওয়াচ করি। মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোতে যারা বিনিয়োগ করেন, তারা বাৎসরিক রিটার্ন গড়ে ১৩ শতাংশ পাচ্ছেন। কোনোটা ১০ শতাংশ, কোনোটা ৫-৬ শতাংশ, আবার কোনোটা ১৮-১৯ শতাংশ রিটার্ন দিচ্ছে। যারা ভালো রিটার্ন দিচ্ছে তাদের বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে লাভ বের করে নিয়ে আসতে পারেন।

তিনি বলেন, আজকের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ ম্যাসেজ দিতে চেয়েছি যে, সঞ্চয় থেকেই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে রিক্স রিটার্ন ট্রেড অফ করতে হবে। আপনার কাছে যদি সঞ্চয় থাকে ১০০ টাকা, আর ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা যদি ১০০ টাকা না থাকে, তখন যেখানে ঝুঁকি কম সেখানে বিনিয়োগ করা উচিত। আজকের অনুষ্ঠানে প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে- ঝুঁকি কম যেসব জায়গায়, সেখানে সঞ্চয়ের এক বড় অংশ বিনিয়োগ করতে পারেন। আর ঝুঁকি নেওয়ার যদি সাহস থাকে, জ্ঞান থাকে, বুদ্ধি থাকে তাহলে পুঁজিবাজারের সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ করতে পারেন। আজকের প্রেজেন্টেশনে যেটা উঠে এসেছে, আপনারা পিই রেশিও খুব ভালো করে খেয়াল করে বিনিয়োগ করবেন। পিই রেশি না দেখে বিনিয়োগ করলে ভুল হয়ে যায়। এটার একটা রেইঞ্জ রয়েছে, সেটা ক্রস করলে রিস্কি ইনভেস্টমেন্ট হয় যায়। পিই রেঞ্জ যদি কম থাকে, আর সেখানে বিনিয়োগ করলে ঝুঁকি তেমন থাকে না।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও সাবেক উপাচার্য ড. এ কে আজাদ চৌধুরী।

এছাড়া অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান, নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম, নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র মো. সহিদ উল্যাহ খান এবং নোয়াখালী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা তপন চন্দ্র মজুমদার।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।

Please Share This Post in Your Social Media


আমাদের কয়েকশত বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রয়োজন: শিবলী রুবাইয়াত

Update Time : ১১:০৫:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, ২০৩০ ও ২০৪১ সালের যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, তা অর্জনের জন্য আমাদের কয়েকশত বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রয়োজন।

তিনি বলেন, আমরা সারা পৃথিবীতে যে ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছি সেটা শুধু ক্যাপিটাল মার্কেটের বিনিয়োগের জন্য নয়। কয়েকশত বিলিয়ন বিনিয়োগ আমরা করতে পারব, কিন্তু তার দুই-তিনগুণ বিনিয়োগ আমাদের দরকার। তাই কান্ট্রি ব্র্যান্ডিং এখন খুবই জরুরি। এটা করা হলেই দেশে-বিদেশি বিনিয়োগ আসবে।

শনিবার (২০ নভেম্বর) সকালে নোয়াখালী জেলার মাইজদীর দত্তেরহাটে অবস্থিত নোয়া কনভেনশন সেন্টার অ্যান্ড হোটেলে অনুষ্ঠিত বিনিয়োগ শিক্ষা কনফারেন্সে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সম্পর্কে তিনি বলেন, মার্কেট উঠুক আর নামুক, সবখানেই লাভ করা যায়। তাই বুঝে-শুনে বিনিয়োগ করলে কখনো লস হয় না। উঠতি মার্কেটেও লাভ করা যায়, আবার পড়তি মার্কেটেও লাভ করা যায়।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, সর্বকালের সেরা বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেট তো কখনও লস করে না। ধস নামুক বা যাই হোক এ লোকের সব সময় লাভ হয়। কারণ ওয়ারেন বাফেট কখনো উচ্চ মার্কেটে শেয়ার কিনেন না। তিনি সব সময় পড়তি মার্কেটে শেয়ার কিনেন। তাই তিনি প্রত্যেকবার লাভ করে পৃথিবীর প্রথম কয়েকজন ধনী লোকদের মধ্যে একজন। তাই পুঁজিবাজারে বুঝে-শুনে বিনিয়োগ করতে হবে।

তিনি বলেন, বন্ডগুলো এখন ভালো রিটার্ন দিচ্ছে। বন্ডগুলো এখন সিকিউড ইনভেস্টমেন্ট। তারা বাৎসরিক একটি রিটার্ন এখন পৌঁছে দেয়। তাই আপনাদের আর কিছুই করার দরকার নেই। আপনি সেখানে বিনিয়োগ করে বসে থাকতে পারেন। কারণ তারা এ মুহূর্তে এফডিআরের চেয়ে বেশি রিটার্ন দিচ্ছে। জিরো কুপন বন্ড ট্যাক্স ফ্রি রয়েছে। সেখানেও বিনিয়োগ করে চুপ করে বসে থাকতে পারেন। আমাদের মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোকে এখন ওয়াচ করি। মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোতে যারা বিনিয়োগ করেন, তারা বাৎসরিক রিটার্ন গড়ে ১৩ শতাংশ পাচ্ছেন। কোনোটা ১০ শতাংশ, কোনোটা ৫-৬ শতাংশ, আবার কোনোটা ১৮-১৯ শতাংশ রিটার্ন দিচ্ছে। যারা ভালো রিটার্ন দিচ্ছে তাদের বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে লাভ বের করে নিয়ে আসতে পারেন।

তিনি বলেন, আজকের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ ম্যাসেজ দিতে চেয়েছি যে, সঞ্চয় থেকেই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে রিক্স রিটার্ন ট্রেড অফ করতে হবে। আপনার কাছে যদি সঞ্চয় থাকে ১০০ টাকা, আর ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা যদি ১০০ টাকা না থাকে, তখন যেখানে ঝুঁকি কম সেখানে বিনিয়োগ করা উচিত। আজকের অনুষ্ঠানে প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে- ঝুঁকি কম যেসব জায়গায়, সেখানে সঞ্চয়ের এক বড় অংশ বিনিয়োগ করতে পারেন। আর ঝুঁকি নেওয়ার যদি সাহস থাকে, জ্ঞান থাকে, বুদ্ধি থাকে তাহলে পুঁজিবাজারের সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ করতে পারেন। আজকের প্রেজেন্টেশনে যেটা উঠে এসেছে, আপনারা পিই রেশিও খুব ভালো করে খেয়াল করে বিনিয়োগ করবেন। পিই রেশি না দেখে বিনিয়োগ করলে ভুল হয়ে যায়। এটার একটা রেইঞ্জ রয়েছে, সেটা ক্রস করলে রিস্কি ইনভেস্টমেন্ট হয় যায়। পিই রেঞ্জ যদি কম থাকে, আর সেখানে বিনিয়োগ করলে ঝুঁকি তেমন থাকে না।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও সাবেক উপাচার্য ড. এ কে আজাদ চৌধুরী।

এছাড়া অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান, নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম, নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র মো. সহিদ উল্যাহ খান এবং নোয়াখালী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা তপন চন্দ্র মজুমদার।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।