অজিদের সব আশা ‘শেষ’ করে দিতে চায় শ্রীলঙ্কা

  • Update Time : ০৭:৩৩:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ অক্টোবর ২০২২
  • / 211

স্পোর্টস ডেস্কঃ

প্রতিবেশী নিউজিল্যান্ডের কাছে বড় হারের পর চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার সেমি-ফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা এখন অনিশ্চয়তার দোলাচলে। মাত্র একটি হারেই বেজে যেতে পারে চ্যাম্পিয়নদের বিদায় ঘণ্টা। লঙ্কান শিবির থেকে ভেসে আসছে তেমনই হুঙ্কার!

মঙ্গলবার পার্থে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় পেলে শেষ চারের পথে অনেকটাই এগিয়ে যাবে শ্রীলঙ্কা। সুযোগটা কাজে লাগাতে মুখিয়ে আছেন দলটির রহস্য স্পিনার মাহিশ থিকশানা।

সিডনিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৮৯ রানে হেরে যায় অস্ট্রেলিয়া। এতে তাদের রান রেটে পড়েছে বড় প্রভাব। টুর্নামেন্টের ধরনটাই এমন যে, বাকি চার ম্যাচ জিতলেও সেমি-ফাইনালের টিকেট নাও পেতে পারেন ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা!

সুপার টুয়েলভের প্রথম ওই ম্যাচের পর অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ তো স্বীকার করেই নিয়েছেন যে, শেষ চারের ভাগ্য হয়তো আর তাদের হাতে নেই।

অন্যদিকে, প্রথম পর্ব পেরিয়ে আসা শ্রীলঙ্কা সুপার টুয়েলভে তাদের প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে হারিয়েছে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে। আইরিশদের করা ১২৮ রান ৩০ বল হাতে রেখেই লঙ্কানরা পেরিয়ে যায় মাত্র ১টি উইকেট হারিয়েই। স্বাভাবিকভাবে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নদের নেট রানরেটও হয়েছে সমৃদ্ধ।

যে কারণে এই মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়ার আত্মবিশ্বাস যেমন তলানিতে, ঠিক তেমনি লঙ্কানদের আত্মবিশ্বাসটা অনেক উঁচুতে। সেই আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হয়েই পার্থে মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর লক্ষ্যটাই ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে জানালেন থিকশানা।

সোমবার লঙ্কান এই স্পিনার বলেন, “অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ম্যাচের পর আমরা আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জিতেছি, বাড়তি আত্মবিশ্বাস পেয়েছি। আমাদের আত্মবিশ্বাস এখন অস্ট্রেলিয়া দলের চেয়ে ভালো। আশা করি, আগামীকালের (মঙ্গলবার) ম্যাচে আমরা সেটা বয়ে নিতে পারব।”

অস্ট্রেলিয়ার সেমির আশা শেষ করে দিতে চাওয়া নিয়ে থিকশানা বলেন, “অবশ্যই চাই! ম্যাচ জিততে সবসময়ই ভালো লাগে। আমাদের সবসময়ের চাওয়া, শেষ চারটি দলের একটি হওয়া। তাই আমরা সেমি-ফাইনালে উঠতে চাই। তাদেরকে হারাতেই হবে আমাদের।”

প্যাট কামিন্স, জশ হ্যাজলউড, মিচেল স্টার্ক, অ্যাডাম জ্যাম্পাদের নিয়ে গড়া অস্ট্রেলিয়ার শক্তিশালী বোলিং বিভাগ জ্বলে উঠতে পারেনি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। পাওয়ার প্লেতে স্বাগতিকরা উপহার দেয় ৬৫ রান। এমনকি উইকেটও তুলে নিতে পারেনি খুব বেশি। যার ফলে ২০ ওভারে মাত্র ৩টি উইকেট হারিয়ে ২০০ রান জড়ো করে কিউয়িরা।

যদিও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়াতে স্টার্ক, কামিন্স, হ্যাজলউডরা যে মরিয়া থাকবেন- সেটা খুব ভালো করেই বুঝতে পারছেন থিকশানা। তবে নিজেদের ব্যাটিং সামর্থ্যের কথাও মনে করিয়ে দিলেন তিনি।

লঙ্কান এই তরুণ বলেন, “তাদের খুব ভালো ফাস্ট বোলার ও স্পিনার আছে। তাই আমি মনে করি তারা ঘুরে দাঁড়াতে চাইবে। তারা সর্বশেষ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে তাদের ঘুরে দাঁড়াতেই হবে। জানি, তাদের খুব ভালো ফাস্ট বোলিং আক্রমণ আছে। তবে আমাদেরও খুব ভালো একটি ব্যাটিং লাইনআপ আছে। আমি মনে করি, আমরা ১৬০ থেকে ১৭০ রানের বেশি করতে পারব।”

এদিকে পরিসংখ্যান বলছে, টি-টোয়েন্টিতে এখন পর্যন্ত ২৫ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে অস্ট্রেলিয়া-শ্রীলঙ্কা। জয়ের পাল্লা ভারী অস্ট্রেলিয়ার দিকেই। অজিদের জয় ১৫টিতে। বিপরীতে শ্রীলঙ্কার জয় ১০টিতে।

সর্বশেষ গত জুনে টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হয় দুই দল। শ্রীলঙ্কার মাটিতে অনুষ্ঠিত সেই তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজটি ২-১ ব্যবধানে জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া।

অস্ট্রেলিয়া দল:
অ্যারন ফিঞ্চ (অধিনায়ক), অ্যাস্টন অ্যাগার, প্যাট কামিন্স, টিম ডেভিড, জশ হ্যাজলউড, ক্যামেরন গ্রিন, মিচেল মার্শ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, কেন রিচার্ডসন, স্টিভ স্মিথ, মিচেল স্টার্ক, মার্কাস স্টয়নিস, ম্যাথু ওয়েড, ডেভিড ওয়ার্নার ও অ্যাডাম জাম্পা।

শ্রীলঙ্কা দল:
দাসুন শানাকা (অধিনায়ক), দানুশকা গুনাথিলাকা, পাথুম নিশাঙ্কা, কুশল মেন্ডিস, চারিথ আসালঙ্কা, হাসারাঙ্গা ডি সিলভা, ভানুকা রাজাপাকসে, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, মাহিশ থিকশানা, জেফরি ভান্ডারসে, চামিকা করুণারত্নে, দুশমন্থা চামিরা, লাহিরু কুমারা, বিনুরা ফার্নান্দো এবং প্রমোদ মদুশান।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


অজিদের সব আশা ‘শেষ’ করে দিতে চায় শ্রীলঙ্কা

Update Time : ০৭:৩৩:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ অক্টোবর ২০২২

স্পোর্টস ডেস্কঃ

প্রতিবেশী নিউজিল্যান্ডের কাছে বড় হারের পর চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার সেমি-ফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা এখন অনিশ্চয়তার দোলাচলে। মাত্র একটি হারেই বেজে যেতে পারে চ্যাম্পিয়নদের বিদায় ঘণ্টা। লঙ্কান শিবির থেকে ভেসে আসছে তেমনই হুঙ্কার!

মঙ্গলবার পার্থে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় পেলে শেষ চারের পথে অনেকটাই এগিয়ে যাবে শ্রীলঙ্কা। সুযোগটা কাজে লাগাতে মুখিয়ে আছেন দলটির রহস্য স্পিনার মাহিশ থিকশানা।

সিডনিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৮৯ রানে হেরে যায় অস্ট্রেলিয়া। এতে তাদের রান রেটে পড়েছে বড় প্রভাব। টুর্নামেন্টের ধরনটাই এমন যে, বাকি চার ম্যাচ জিতলেও সেমি-ফাইনালের টিকেট নাও পেতে পারেন ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা!

সুপার টুয়েলভের প্রথম ওই ম্যাচের পর অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ তো স্বীকার করেই নিয়েছেন যে, শেষ চারের ভাগ্য হয়তো আর তাদের হাতে নেই।

অন্যদিকে, প্রথম পর্ব পেরিয়ে আসা শ্রীলঙ্কা সুপার টুয়েলভে তাদের প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে হারিয়েছে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে। আইরিশদের করা ১২৮ রান ৩০ বল হাতে রেখেই লঙ্কানরা পেরিয়ে যায় মাত্র ১টি উইকেট হারিয়েই। স্বাভাবিকভাবে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নদের নেট রানরেটও হয়েছে সমৃদ্ধ।

যে কারণে এই মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়ার আত্মবিশ্বাস যেমন তলানিতে, ঠিক তেমনি লঙ্কানদের আত্মবিশ্বাসটা অনেক উঁচুতে। সেই আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হয়েই পার্থে মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর লক্ষ্যটাই ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে জানালেন থিকশানা।

সোমবার লঙ্কান এই স্পিনার বলেন, “অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ম্যাচের পর আমরা আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জিতেছি, বাড়তি আত্মবিশ্বাস পেয়েছি। আমাদের আত্মবিশ্বাস এখন অস্ট্রেলিয়া দলের চেয়ে ভালো। আশা করি, আগামীকালের (মঙ্গলবার) ম্যাচে আমরা সেটা বয়ে নিতে পারব।”

অস্ট্রেলিয়ার সেমির আশা শেষ করে দিতে চাওয়া নিয়ে থিকশানা বলেন, “অবশ্যই চাই! ম্যাচ জিততে সবসময়ই ভালো লাগে। আমাদের সবসময়ের চাওয়া, শেষ চারটি দলের একটি হওয়া। তাই আমরা সেমি-ফাইনালে উঠতে চাই। তাদেরকে হারাতেই হবে আমাদের।”

প্যাট কামিন্স, জশ হ্যাজলউড, মিচেল স্টার্ক, অ্যাডাম জ্যাম্পাদের নিয়ে গড়া অস্ট্রেলিয়ার শক্তিশালী বোলিং বিভাগ জ্বলে উঠতে পারেনি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। পাওয়ার প্লেতে স্বাগতিকরা উপহার দেয় ৬৫ রান। এমনকি উইকেটও তুলে নিতে পারেনি খুব বেশি। যার ফলে ২০ ওভারে মাত্র ৩টি উইকেট হারিয়ে ২০০ রান জড়ো করে কিউয়িরা।

যদিও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়াতে স্টার্ক, কামিন্স, হ্যাজলউডরা যে মরিয়া থাকবেন- সেটা খুব ভালো করেই বুঝতে পারছেন থিকশানা। তবে নিজেদের ব্যাটিং সামর্থ্যের কথাও মনে করিয়ে দিলেন তিনি।

লঙ্কান এই তরুণ বলেন, “তাদের খুব ভালো ফাস্ট বোলার ও স্পিনার আছে। তাই আমি মনে করি তারা ঘুরে দাঁড়াতে চাইবে। তারা সর্বশেষ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে তাদের ঘুরে দাঁড়াতেই হবে। জানি, তাদের খুব ভালো ফাস্ট বোলিং আক্রমণ আছে। তবে আমাদেরও খুব ভালো একটি ব্যাটিং লাইনআপ আছে। আমি মনে করি, আমরা ১৬০ থেকে ১৭০ রানের বেশি করতে পারব।”

এদিকে পরিসংখ্যান বলছে, টি-টোয়েন্টিতে এখন পর্যন্ত ২৫ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে অস্ট্রেলিয়া-শ্রীলঙ্কা। জয়ের পাল্লা ভারী অস্ট্রেলিয়ার দিকেই। অজিদের জয় ১৫টিতে। বিপরীতে শ্রীলঙ্কার জয় ১০টিতে।

সর্বশেষ গত জুনে টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হয় দুই দল। শ্রীলঙ্কার মাটিতে অনুষ্ঠিত সেই তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজটি ২-১ ব্যবধানে জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া।

অস্ট্রেলিয়া দল:
অ্যারন ফিঞ্চ (অধিনায়ক), অ্যাস্টন অ্যাগার, প্যাট কামিন্স, টিম ডেভিড, জশ হ্যাজলউড, ক্যামেরন গ্রিন, মিচেল মার্শ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, কেন রিচার্ডসন, স্টিভ স্মিথ, মিচেল স্টার্ক, মার্কাস স্টয়নিস, ম্যাথু ওয়েড, ডেভিড ওয়ার্নার ও অ্যাডাম জাম্পা।

শ্রীলঙ্কা দল:
দাসুন শানাকা (অধিনায়ক), দানুশকা গুনাথিলাকা, পাথুম নিশাঙ্কা, কুশল মেন্ডিস, চারিথ আসালঙ্কা, হাসারাঙ্গা ডি সিলভা, ভানুকা রাজাপাকসে, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, মাহিশ থিকশানা, জেফরি ভান্ডারসে, চামিকা করুণারত্নে, দুশমন্থা চামিরা, লাহিরু কুমারা, বিনুরা ফার্নান্দো এবং প্রমোদ মদুশান।