পা দিয়ে লেখেই চলছে দুখুর পড়াশোনা
- Update Time : ০৯:৫৬:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ ২০২২
- / 263
রোকন সরকার, কুড়িগ্রাম :
প্রথম শ্রেণী থেকে সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত উত্তীর্ণ হয়েছে শাররিক প্রতিবন্ধি মেধাবী ছাত্র মো. দুখু মিয়া (১২)। বর্তমান বকবান্দা দ্বিমুখী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীতে পড়ালেখা করছে। পরিবারের সকলের সহযোগিতায় এ পর্যন্ত লেখাপড়া চালিয়ে আসছে। তার আশা অনেক পড়ালেখা করে মানুষের মত মানুষ হওয়া। সে কারো বুঝা হয়ে থাকতে চায় না। এথন পর্যন্ত চিকিৎসার জন্য প্রতিবন্ধি দুখুর পাশে সরকারি বা বেসরকারি কোন সংস্থা এগিয়ে আসেনি। উন্নত চিকিৎসা করলে সে হয়তো ভালো হতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন।
জানা গেছে দুখু মিয়ার জন্ম থেকেই দুটি হাত ও দুটি পা অচল। তবে একটি পায়ে সামান্য শক্তি পায় এবং ওই পা দিয়েই সে খাতাতে সুন্দর ভাবে লিখতে পারে। তার আশা সে যদি ভালো হয় ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ার হবে। এ কারনে চলাফেরা করতে পারে না। বাবা, মা ও পরিবারের সকলের সাহায্যে চলতে হয় তাকে। সে প্রতিবন্ধি হলেও বাবা মায়ের প্রথম সন্তান হওয়ায় আদরের শেষ নেই। তারা দুখুকে বুঝা মনে করে না। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে তাদের মনের সব দু:খ কষ্ট হারিয়ে যায়। সন্তানের ভবিষ্যত চিন্তা করে প্রতি নিয়তে দুখুকে কাধে করে বিদ্যালয়ে নিয়ে যায় আবার ছুটি শেষে বাড়িতে ফিরে আনে তার পরিবারের লোকজন। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না তার বাবা।
দুখু মিয়া কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের বকবান্দা গ্রামের খেটে খাওয়া আলমাছ আলীর প্রথম ছেলে। তার মা গুলেনুর বেগম। দুখুর ছোট ভাই আল আমিন ও ছোট বোন আলফুলি খাতুন । তারাও বকবান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে।
শাররিক প্রতিবন্ধি দুখু মিয়ার বাবা আলমাজ আলী জানান, মনে অনেক আশা ছিল ছেলেটি লেখাপড়া শিখিয়ে বড় করবো। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে ছেলেটি শাররিক ভাবে অচল হয়েছে। তবুও যখন দেখলাম সে একটি পায়ে লেখতে পারে তখন তাকে স্কুল ভর্তি করে দিই। আমার ছেলেরও পড়াশোনার দিকে অনেক আগ্রহ রয়েছে। টাকা পয়সার অভাবে চিকিৎসা করতে পারছিনা। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সমাজের বিত্তবানদের কাছে আমার আকুল আবেদন, আমার ছেলের চিকিৎসার ব্যবস্থা করলে সে হয়তো ভালো হয়ে অন্য শিশুদের মতো বাঁচতে পারবে।
উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপজেলা সুপার ভাইজার আব্দুল্লাহেল কাফী জানান, প্রতিবন্ধি দুখুর জন্য শিক্ষা উপবৃত্তির নাম দেওয়া হয়েছে এবং সে নিয়মিত উপবৃত্তি পাচ্ছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে প্রতিবন্ধি ভাতার বরাদ্দ পেলে তাকে প্রতিবন্ধি ভাতার নাম দেওয়া হবে।