জবির প্রধান ফটক যেন মরণফাঁদ, ফুটওভার ব্রিজের দাবি

  • Update Time : ০৪:০৫:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১
  • / 222

জবি সংবাদদাতা :

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রধান ফটকের সামনের রাস্তা যেন শিক্ষার্থীদের জন্য মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রধান ফটকের সামনের রাস্তায় সবসময় লেগে থাকে তীব্র যানজট। তবুও রাস্তা পারাপারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ হাজারের অধিক শিক্ষার্থীর জন্য নেই একটি ফুটওভার ব্রিজও! ফলে রাস্তা পারাপার হতে গিয়ে সদরঘাট ও গুলিস্তান থেকে ধেয়ে আসা বেপরোয়া লেগুনা, বাইক ও বাসের তান্ডবে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এমনকি কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে বেপরোয়া বাহাদুর শাহ লেগুনার ধাক্কায় রিকশা থেকে পড়ে আহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই সহকারী প্রক্টর।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রধান ফটকের সামনে কয়েকটি সড়ক একত্রিত হয়েছে। গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ির গাড়িগুলো রায়সাহেব বাজার দিয়ে জবির প্রধান ফটকের সামনে দিয়ে যায়।

এদিকে সদরঘাট থেকে ছেড়ে আসা গাড়িগুলোও প্রধান ফটকের সামনে দিয়ে যায়। অপরদিকে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের দিক থেকে আসা একটি সড়কও মিলিত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে। অথচ এত গুরুত্বপূর্ণ একটি মোড়েও শিক্ষার্থীদের রাস্তা পারাপারের জন্য নেই কোনো ফুটওভার ব্রিজ। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ফুটওভার ব্রীজের জন্য কয়েকবার দাবি জানালেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।

দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তায় স্পিডব্রেকার থাকলেও ফটক থেকে তা দূরে হওয়ায় বেড়েছে সমস্যা। স্পিডব্রেকার পার হয়েই যানবাহনগুলো আরো দ্রুতগতিতে চলতে থাকে সড়কে। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটিতে দিনের সিংহভাগ সময়ই থাকে যানজট।

তাছাড়াও যানজটের অন্যতম কারণগুলা হলো, পাঠাও-এর বাইক ও রিকশাগুলো গেটের ডান পাশে অবস্থান করে। বিভিন্ন ধরনের টং দোকান রাস্তার দুইপাশ দখল করে রেখেছে। তাছাড়াও গেটের পাশেই ভিক্টর ক্লাসিক, সাভার পরিবহন, তানজিল, বিহঙ্গ, আজমেরী গ্লোরী, ৭ নাম্বার ইত্যাদি বাস যাত্রী ওঠা-নামানোর কাজ করে। সেখানে রয়েছে এসব পরিবহনের টিকিট কাউন্টারও। এছাড়া নদীপথে চলাচলকারী সদরঘাটগামী লাখো মানুষের যাওয়া আসার জন্যও এই রাস্তা ব্যবহৃত হয়।

সব মিলিয়ে জবির প্রধান ফটকের সামনের সড়ক একটি মরন ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়ত এই মরণ ফাঁদ পারাপার হয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এমনকি জবির টিএসসিতে আসতেও রাস্তা পারাপারের এই ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। যে কোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আঁখি আক্তার বন্যা বলেন, প্রতিদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা রাস্তা পারাপার হই। রাস্তা পার হতে গিয়ে নারী শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি বিড়ম্বনার শিকার হন। সম্প্রতি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাবরিনা আক্তার মিতু সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। এছাড়া ঢাকা শহরের রাজপথ প্রায়ই শিক্ষার্থীদের রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে৷ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বারবার ফুটওভার ব্রিজ স্থাপনের জন্য বলা হলেও তারা কোনো জোর উদ্যোগ নেননি।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, আমরা ট্রাফিকের দায়িত্বরত পুলিশের সঙ্গে এসব নিয়ে কথা বলেছি। এছাড়াও মেয়র ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) বরাবর চিঠি পাঠিয়েছি। খুব দ্রুতই আশা করি এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


জবির প্রধান ফটক যেন মরণফাঁদ, ফুটওভার ব্রিজের দাবি

Update Time : ০৪:০৫:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১

জবি সংবাদদাতা :

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রধান ফটকের সামনের রাস্তা যেন শিক্ষার্থীদের জন্য মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রধান ফটকের সামনের রাস্তায় সবসময় লেগে থাকে তীব্র যানজট। তবুও রাস্তা পারাপারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ হাজারের অধিক শিক্ষার্থীর জন্য নেই একটি ফুটওভার ব্রিজও! ফলে রাস্তা পারাপার হতে গিয়ে সদরঘাট ও গুলিস্তান থেকে ধেয়ে আসা বেপরোয়া লেগুনা, বাইক ও বাসের তান্ডবে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এমনকি কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে বেপরোয়া বাহাদুর শাহ লেগুনার ধাক্কায় রিকশা থেকে পড়ে আহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই সহকারী প্রক্টর।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রধান ফটকের সামনে কয়েকটি সড়ক একত্রিত হয়েছে। গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ির গাড়িগুলো রায়সাহেব বাজার দিয়ে জবির প্রধান ফটকের সামনে দিয়ে যায়।

এদিকে সদরঘাট থেকে ছেড়ে আসা গাড়িগুলোও প্রধান ফটকের সামনে দিয়ে যায়। অপরদিকে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের দিক থেকে আসা একটি সড়কও মিলিত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে। অথচ এত গুরুত্বপূর্ণ একটি মোড়েও শিক্ষার্থীদের রাস্তা পারাপারের জন্য নেই কোনো ফুটওভার ব্রিজ। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ফুটওভার ব্রীজের জন্য কয়েকবার দাবি জানালেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।

দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তায় স্পিডব্রেকার থাকলেও ফটক থেকে তা দূরে হওয়ায় বেড়েছে সমস্যা। স্পিডব্রেকার পার হয়েই যানবাহনগুলো আরো দ্রুতগতিতে চলতে থাকে সড়কে। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটিতে দিনের সিংহভাগ সময়ই থাকে যানজট।

তাছাড়াও যানজটের অন্যতম কারণগুলা হলো, পাঠাও-এর বাইক ও রিকশাগুলো গেটের ডান পাশে অবস্থান করে। বিভিন্ন ধরনের টং দোকান রাস্তার দুইপাশ দখল করে রেখেছে। তাছাড়াও গেটের পাশেই ভিক্টর ক্লাসিক, সাভার পরিবহন, তানজিল, বিহঙ্গ, আজমেরী গ্লোরী, ৭ নাম্বার ইত্যাদি বাস যাত্রী ওঠা-নামানোর কাজ করে। সেখানে রয়েছে এসব পরিবহনের টিকিট কাউন্টারও। এছাড়া নদীপথে চলাচলকারী সদরঘাটগামী লাখো মানুষের যাওয়া আসার জন্যও এই রাস্তা ব্যবহৃত হয়।

সব মিলিয়ে জবির প্রধান ফটকের সামনের সড়ক একটি মরন ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়ত এই মরণ ফাঁদ পারাপার হয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এমনকি জবির টিএসসিতে আসতেও রাস্তা পারাপারের এই ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। যে কোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আঁখি আক্তার বন্যা বলেন, প্রতিদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা রাস্তা পারাপার হই। রাস্তা পার হতে গিয়ে নারী শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি বিড়ম্বনার শিকার হন। সম্প্রতি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাবরিনা আক্তার মিতু সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। এছাড়া ঢাকা শহরের রাজপথ প্রায়ই শিক্ষার্থীদের রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে৷ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বারবার ফুটওভার ব্রিজ স্থাপনের জন্য বলা হলেও তারা কোনো জোর উদ্যোগ নেননি।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, আমরা ট্রাফিকের দায়িত্বরত পুলিশের সঙ্গে এসব নিয়ে কথা বলেছি। এছাড়াও মেয়র ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) বরাবর চিঠি পাঠিয়েছি। খুব দ্রুতই আশা করি এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।