জবির ওয়াইফাই ব্যবস্থা : এ যেন কাজীর গরু

  • Update Time : ০৩:৩৮:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২১
  • / 156

মিনহাজুল ইসলাম, জবি সংবাদদাতা :

এ যেন কাজীর গরু! কিতাবে আছে, গোয়ালে নেই। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াইফাই ব্যবস্থা যেন এই প্রবাদের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। কাগজে কলমে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো ক্যাম্পাস ওয়াইফাই ব্যবস্থার অধীন হলেও বাস্তবে ওয়াইফাই সুবিধা থেকে বঞ্চিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের ওয়াইফাই সহজে কানেক্ট হয়না, আবার কানেক্ট হতে না হতেই পুনরায় তা ডিসকানেক্ট হয়ে যায়। আর, কানেক্ট করা গেলেও ওয়াইফাই স্পিড এত কম যে, তা দিয়ে করা যায় না কোনো কাজ। ফলে অনলাইন ভিত্তিক একাডেমিক কার্যক্রম চালাতে গিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার আচার্য্য জানান, “ক্যাম্পাসে ওয়াইফাই সংযোগ আগ থেকে থাকলেও ২০১৮ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো ক্যাম্পাসকে শক্তিশালী ওয়াইফাই ব্যবস্থার অধীনে আনা হয়। তখন থেকে সকল শিক্ষার্থীদের উন্মুক্ত ওয়াইফাই ব্যবহারের সুযোগ চালু করা হয়। তারই আওতায় ক্যাম্পাসে মোট ৭০০ এমবিপিএস ওয়াইফাই চালু রয়েছে। ”

অথচ, বাস্তব এর কোনো কার্যকারিতা নেই। দুর্বল ওয়াইফাইয়ের জন্য অনলাইন ও তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের নিজেদের পকেটের টাকায় কিনতে হচ্ছে ইন্টারনেট ডাটা। কম্পিউটার বা ল্যাপটপে ইন্টারনেট ডাটা কিনে চালানো ব্যয়বহুল হয়ে পড়ায় চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোঃ ফয়জুল্লাহ সরদার বলেন, আমাদের ৬ষ্ঠ সেমিস্টারের দুইটি কোর্স অনলাইনের সাথে সম্পৃক্ত। ক্লাসে এই দুই কোর্সের ব্যবহারিক কাজ অনুশীলন করতে আমাদের ওয়াইফাই সংযোগের প্রয়োজন হয়। সীমিত ডাটা কিনে সাধারণত ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে কাজ করা যায় না।

বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য ওয়াইফাইয়ের ব্যবস্থাও রয়েছে। কিন্তু সেই ওয়াইফাই সংযোগ আমাদের কোনো কাজেই আসে না। কখনো সংযোগ পায় না, আবার কখনো সংযোগ পেলেও তা দিয়ে কোনো ওয়েব সাইট ব্রাউজ করা যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার আধুনিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে এই দুরবস্থার আশু নিরসন করা প্রয়োজন।

এ দিকে, ২০২১-২২ অর্থ বছরে মূলধন অনুদান (যন্ত্রপাতি, যানবাহন, তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি, অন্যান্য অনুদান) খাতে ৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তবুও ক্যাম্পাসে ওয়াইফাই ব্যবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীন আহমদ বলেন, ওয়াইফাইয়ের সমস্যা সম্পর্কে আমি অবগত হয়েছি।এটা নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছি আমরা। নতুন করে বরাদ্দ দিয়ে এই সমস্যার সমাধান করা হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


জবির ওয়াইফাই ব্যবস্থা : এ যেন কাজীর গরু

Update Time : ০৩:৩৮:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২১

মিনহাজুল ইসলাম, জবি সংবাদদাতা :

এ যেন কাজীর গরু! কিতাবে আছে, গোয়ালে নেই। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াইফাই ব্যবস্থা যেন এই প্রবাদের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। কাগজে কলমে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো ক্যাম্পাস ওয়াইফাই ব্যবস্থার অধীন হলেও বাস্তবে ওয়াইফাই সুবিধা থেকে বঞ্চিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের ওয়াইফাই সহজে কানেক্ট হয়না, আবার কানেক্ট হতে না হতেই পুনরায় তা ডিসকানেক্ট হয়ে যায়। আর, কানেক্ট করা গেলেও ওয়াইফাই স্পিড এত কম যে, তা দিয়ে করা যায় না কোনো কাজ। ফলে অনলাইন ভিত্তিক একাডেমিক কার্যক্রম চালাতে গিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার আচার্য্য জানান, “ক্যাম্পাসে ওয়াইফাই সংযোগ আগ থেকে থাকলেও ২০১৮ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো ক্যাম্পাসকে শক্তিশালী ওয়াইফাই ব্যবস্থার অধীনে আনা হয়। তখন থেকে সকল শিক্ষার্থীদের উন্মুক্ত ওয়াইফাই ব্যবহারের সুযোগ চালু করা হয়। তারই আওতায় ক্যাম্পাসে মোট ৭০০ এমবিপিএস ওয়াইফাই চালু রয়েছে। ”

অথচ, বাস্তব এর কোনো কার্যকারিতা নেই। দুর্বল ওয়াইফাইয়ের জন্য অনলাইন ও তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের নিজেদের পকেটের টাকায় কিনতে হচ্ছে ইন্টারনেট ডাটা। কম্পিউটার বা ল্যাপটপে ইন্টারনেট ডাটা কিনে চালানো ব্যয়বহুল হয়ে পড়ায় চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোঃ ফয়জুল্লাহ সরদার বলেন, আমাদের ৬ষ্ঠ সেমিস্টারের দুইটি কোর্স অনলাইনের সাথে সম্পৃক্ত। ক্লাসে এই দুই কোর্সের ব্যবহারিক কাজ অনুশীলন করতে আমাদের ওয়াইফাই সংযোগের প্রয়োজন হয়। সীমিত ডাটা কিনে সাধারণত ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে কাজ করা যায় না।

বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য ওয়াইফাইয়ের ব্যবস্থাও রয়েছে। কিন্তু সেই ওয়াইফাই সংযোগ আমাদের কোনো কাজেই আসে না। কখনো সংযোগ পায় না, আবার কখনো সংযোগ পেলেও তা দিয়ে কোনো ওয়েব সাইট ব্রাউজ করা যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার আধুনিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে এই দুরবস্থার আশু নিরসন করা প্রয়োজন।

এ দিকে, ২০২১-২২ অর্থ বছরে মূলধন অনুদান (যন্ত্রপাতি, যানবাহন, তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি, অন্যান্য অনুদান) খাতে ৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তবুও ক্যাম্পাসে ওয়াইফাই ব্যবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীন আহমদ বলেন, ওয়াইফাইয়ের সমস্যা সম্পর্কে আমি অবগত হয়েছি।এটা নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছি আমরা। নতুন করে বরাদ্দ দিয়ে এই সমস্যার সমাধান করা হবে।