গণপরিবহন বন্ধ: দেরিতে আসায় পরীক্ষায় অংশ নিতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা
- Update Time : ০৪:১৯:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ নভেম্বর ২০২১
- / 162
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের অনার্স প্রথম বর্ষের বাণিজ্য ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ছিল আজ শুক্রবার (৫ নভেম্বর)। এদিন জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে গণপরিবহন বন্ধ রেখেছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। অঘোষিত এই ধর্মঘটে পড়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি বেশ কিছু শিক্ষার্থী।
পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণ পরে রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজে পৌঁছান তাহমিনা আক্তার (১৯) নামের এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী। দেরিতে আসায় পরীক্ষায় অংশ নিতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
তিনি বলেন, আমি গতকাল রাতে পঞ্চগড় জেলা থেকে মিরপুর এসেছি। সকালবেলা ওখান থেকে কোনও বাস না পেয়ে নিরুপায় হয়ে রিকশায় করে এসেছি। এতে করে গেটে এসে পৌঁছাতে ১০টা ১৬ মিনিট বেজে গেছে। কিন্তু তারা আমাকে আর কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়নি।
রাকিব হোসেন নামের আরেক শিক্ষার্থী ১৭ মিনিট দেরি করে আসায় তাকেও কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারায় তিনিও কলেজ গেটে দাঁড়িয়ে কান্না করেন। তিনি বলেন, মিরপুর ১১ থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার উবারে করে এসেছি। পথে ট্রাফিক পুলিশ মোটরসাইকেল আটকিয়েছিল, পরে ৩০০ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে এখানে এসেছি। তবুও পরীক্ষা দিতে পারলাম না।
তন্ময় (১৮) নামের অন্য আরেক শিক্ষার্থী বলেন ধর্মঘটের কারণে গতকাল রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কিছু পোস্ট দেখে পরীক্ষা হবে কিনা তা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ছিলাম। সকালবেলা যখন দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থেকে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য রওনা হই, তখন কোনও গণপরিবহন পাইনি। পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় হেঁটেই এসেছি পরীক্ষা দিতে। যার কারণে আসতে লেট হয়ে গেছে।
সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের সামনেও দেখা গেল বেশকিছু শিক্ষার্থীর জটলা। তারাও দেরি করে আসায় পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে কবি নজরুল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আমেনা বেগম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ১০টার পরে কাউকে কেন্দ্রে প্রবেশ করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আছে। তবুও পরিবহন ধর্মঘটের কথা চিন্তা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনদের অনুরোধ করে ১০টা ১০ মিনিট পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। আমাদের কেন্দ্রে ২ হাজার ৫০০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১ হাজার ৭৯২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে।
উল্লেখ্য, এবছর বাণিজ্য ইউনিটে মোট ৫ হাজার ৩১০টি আসনের বিপরীতে ২৩ হাজার ৭০০ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। তার মধ্যে ঢাকা কলেজে আসন সংখ্যা ৬০০টি, ইডেন মহিলা কলেজে ১ হাজার ৫৫টি, সরকারি তিতুমীর কলেজে আসন সংখ্যা ১ হাজার ৪৬৫টি, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে আসন সংখ্যা ৪০০টি, কবি নজরুল সরকারি কলেজে আসন সংখ্যা ৭০০টি, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজে আসন সংখ্যা ১৩০টি, সরকারি বাঙলা কলেজে আসন সংখ্যা ৯৬০টি।