সাগর-রুনি হত্যার ১ যুগ: সেঞ্চুরি পেরিয়েও দাখিল হয়নি তদন্ত প্রতিবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৩:২৩:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৫০ Time View

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি খুন হন ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি। এরপর পেরিয়ে গেছে এক যুগ। কিন্তু তদন্তে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতিই নেই। মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় তদন্ত শেষ করার আশ্বাস দিয়েছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন। কিন্তু সেই ৪৮ ঘণ্টার হিসেব মেলাতে পারেনি কোনো তদন্তকারী সংস্থাই। এক যুগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পরিবর্তন হয়েছে তিনবার। এই সময়ে একাধিক সংস্থার হাত বদলে আদালত থেকে তদন্ত কর্মকর্তারা সময় নিয়েছেন ১০৫ বার। কিন্তু দাখিল হয়নি প্রতিবেদন।

সবশেষ গত ২৩ জানুয়ারি এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। সেদিন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিন আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন দাখিলের নতুন দিন ধার্য করেন।

এরই মধ্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের এক কথায় তদন্ত নিয়ে হতাশা বেড়েছে সাগর-রুনির পরিবারসহ সাংবাদিক সমাজের।

গত ১ ফেব্রুয়ারি সচিবালয়ে সম-সাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মামলায় যদি পুলিশ তদন্ত শেষ না করতে পারে, তাহলে কি জোর করে সেই তদন্ত সমাপ্ত করে একটা চূড়ান্ত প্রতিবেদন কিংবা অভিযোগপত্র দেওয়া ঠিক? তাদের তদন্তে যতদিন সময় লাগে সঠিকভাবে দোষী নির্ণয় করতে, তাদেরকে ততটুকু সময় দিতে হবে। সেটা যদি ৫০ বছর হয়, ৫০ বছর দিতে হবে।’

যদিও পরে তিনি ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, তার কথা ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ৫০ বছর কথাটি তিনি আপেক্ষিকভাবে বলেছেন। তবে চ্যানেল 24 এর করা এক প্রশ্নের জবাব আইনমন্ত্রী বলেছেন, যদি প্রয়োজন হয় তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তনের তবে প্রয়োজনে তাই করা হবে।

এই হত্যার প্রতিবাদে রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) ডিআরইউ চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ ডেকেছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ মামলাটি তদন্তভার পড়েছে র‌্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার মো. শফিকুল আলমের ওপর। মামলার তদন্তে অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সবশেষ গত বছর ৫ ফেব্রুয়ারি র‍্যাব আনুষ্ঠানিকভাবে এ মামলার বিষয়ে বক্তব্য দেয়। তদন্তে বিলম্বের বিষয়ে র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আমরা তদন্তের ক্ষেত্রে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আলামত আমেরিকায় পাঠিয়েছি। ডিএনএ রিপোর্টগুলো আমরা কয়েকদিন আগে হাতে পেয়েছি। সেগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এ মামলায় এ পর্যন্ত ১৬০ জন সাক্ষীর বক্তব্য গ্রহণ করেছে র‌্যাব। সন্দেহভাজনদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। এখনও তদন্ত চলমান রয়েছে। মামলাটি সরকার, র‌্যাব অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা সেই প্রতিবেদন জমা দেব।

যদিও বছর পেরিয়ে গেলেও সে দ্রুত সময় এখনো আসেনি। দীর্ঘ এক যুগেও তদন্ত শেষ না হওয়ায় গভীরভাবে হতাশা প্রকাশ করেছেন নিহত সাংবাদিক সাগর সারোয়ারের মা সালেহা মনির। তিনি বলেন, একযুগ পার হতে যাচ্ছে সাগর-রুনির হত্যার। এখন পর্যন্ত আমার ছেলের হত্যাকারী কে সেটাই জানতে পারলাম না। ছেলেকে তো আর ফেরত পাবো না। আমার একটাই কথা, ছেলে হত্যার বিচার চাই। এখন পর্যন্ত আমার ছেলের কবর জিয়ারত করতে যাইনি। প্রতিজ্ঞা করেছি, যেদিন আমার ছেলের হত্যাকারীদের দেখবো, ওইদিন কবর জিয়ারত করবো। এর আগে যদি আমার মৃত্যু হয়, হোক। এরপরও খুনিদের না দেখে আমি ছেলের কবর জিয়ারত করতে যাবো না।’

র‍্যাবের তদন্তে এই ধীরগতি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘র‌্যাব তো সব জানে। প্রতিবেদন জমা দিলেই তো হয়। প্রতিবেদন যদি জমা না দিতে পারে সেটাই তারা প্রকাশ করুক। এভাবে ঝুলিয়ে রাখার কোনো মানে হয় না। কত বড় বড় মামলার সমাধান করছে র‌্যাব। কিন্তু সাগর-রুনির বেলায় ১২ বছরেও সমাধান করতে পারলো না। এমন হচ্ছে কেন আমার বোধগম্য নয়।’

মামলার বাদী এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনির ছোট ভাই নওশের আলম রোমান আদালত পাড়ার সাংবাদিকদের জানান, ১২ বছর ধরে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় চেয়ে নিচ্ছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। এটি একটি লজ্জাজনক বিষয়। প্রতিবেদন জমা না দেওয়া একটি খারাপ সংস্কৃতি চালু হতে যাচ্ছে। দেশে কোনো অপরাধ করলেও বিচার হয় না, এটাই সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাচ্ছে। সরকার চাইলে সত্য ঘটনা বের করতে পারে। সেখানে ১০৫ বার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় চেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা, আর সেই সময়ও মঞ্জুর হচ্ছে। অথচ তারা এলিট ফোর্স দাবি করেন।

তিনি আরও বলেন, দুঃখজনক বিষয় র‍্যাব ছোটখাটো বিষয়গুলো নিয়ে বড় বড় করে প্রেস ব্রিফিং করে। অথচ আলোচিত এই ঘটনা নিয়ে তাদের কোনো কাজই দেখাতে পারলো না। আমাদের এটাই দাবি প্রকৃত অপরাধীদের বের করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি তাদের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ওই বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি রুনির ভাই নওশের আলী রোমান বাদী হয়ে শেরে বাংলা নগর থানায় মামলা করেন।

প্রথমে মামলাটির তদন্ত করেন শেরেবাংলা নগর থানার একজন কর্মকর্তা। ওই বছর ১৬ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত ভার পড়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরের পুলিশ পরিদর্শক মো. রবিউল আলমের ওপর। দুই মাস পর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র‌্যাব)। সেই থেকে ১২ বছরেও সংস্থাটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি। এমনকি সর্বশেষ ২০১৭ বছরের ২১ মার্চের পর আর কোনো অগ্রগতি প্রতিবেদনও দাখিল করা হয়নি।

মামলায় রুনির বন্ধু তানভীর রহমানসহ মোট আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার অপর আসামিরা হলেন- বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুন, পলাশ রুদ্র পাল, ও আবু সাঈদ। এদের মধ্যে তানভীর ও পলাশ রুদ্র জামিন আছেন। অন্য আসামিরা কারাগারে আছেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

সাগর-রুনি হত্যার ১ যুগ: সেঞ্চুরি পেরিয়েও দাখিল হয়নি তদন্ত প্রতিবেদন

Update Time : ০৩:২৩:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি খুন হন ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি। এরপর পেরিয়ে গেছে এক যুগ। কিন্তু তদন্তে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতিই নেই। মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় তদন্ত শেষ করার আশ্বাস দিয়েছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন। কিন্তু সেই ৪৮ ঘণ্টার হিসেব মেলাতে পারেনি কোনো তদন্তকারী সংস্থাই। এক যুগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পরিবর্তন হয়েছে তিনবার। এই সময়ে একাধিক সংস্থার হাত বদলে আদালত থেকে তদন্ত কর্মকর্তারা সময় নিয়েছেন ১০৫ বার। কিন্তু দাখিল হয়নি প্রতিবেদন।

সবশেষ গত ২৩ জানুয়ারি এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। সেদিন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিন আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন দাখিলের নতুন দিন ধার্য করেন।

এরই মধ্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের এক কথায় তদন্ত নিয়ে হতাশা বেড়েছে সাগর-রুনির পরিবারসহ সাংবাদিক সমাজের।

গত ১ ফেব্রুয়ারি সচিবালয়ে সম-সাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মামলায় যদি পুলিশ তদন্ত শেষ না করতে পারে, তাহলে কি জোর করে সেই তদন্ত সমাপ্ত করে একটা চূড়ান্ত প্রতিবেদন কিংবা অভিযোগপত্র দেওয়া ঠিক? তাদের তদন্তে যতদিন সময় লাগে সঠিকভাবে দোষী নির্ণয় করতে, তাদেরকে ততটুকু সময় দিতে হবে। সেটা যদি ৫০ বছর হয়, ৫০ বছর দিতে হবে।’

যদিও পরে তিনি ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, তার কথা ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ৫০ বছর কথাটি তিনি আপেক্ষিকভাবে বলেছেন। তবে চ্যানেল 24 এর করা এক প্রশ্নের জবাব আইনমন্ত্রী বলেছেন, যদি প্রয়োজন হয় তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তনের তবে প্রয়োজনে তাই করা হবে।

এই হত্যার প্রতিবাদে রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) ডিআরইউ চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ ডেকেছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ মামলাটি তদন্তভার পড়েছে র‌্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার মো. শফিকুল আলমের ওপর। মামলার তদন্তে অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সবশেষ গত বছর ৫ ফেব্রুয়ারি র‍্যাব আনুষ্ঠানিকভাবে এ মামলার বিষয়ে বক্তব্য দেয়। তদন্তে বিলম্বের বিষয়ে র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আমরা তদন্তের ক্ষেত্রে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আলামত আমেরিকায় পাঠিয়েছি। ডিএনএ রিপোর্টগুলো আমরা কয়েকদিন আগে হাতে পেয়েছি। সেগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এ মামলায় এ পর্যন্ত ১৬০ জন সাক্ষীর বক্তব্য গ্রহণ করেছে র‌্যাব। সন্দেহভাজনদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। এখনও তদন্ত চলমান রয়েছে। মামলাটি সরকার, র‌্যাব অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা সেই প্রতিবেদন জমা দেব।

যদিও বছর পেরিয়ে গেলেও সে দ্রুত সময় এখনো আসেনি। দীর্ঘ এক যুগেও তদন্ত শেষ না হওয়ায় গভীরভাবে হতাশা প্রকাশ করেছেন নিহত সাংবাদিক সাগর সারোয়ারের মা সালেহা মনির। তিনি বলেন, একযুগ পার হতে যাচ্ছে সাগর-রুনির হত্যার। এখন পর্যন্ত আমার ছেলের হত্যাকারী কে সেটাই জানতে পারলাম না। ছেলেকে তো আর ফেরত পাবো না। আমার একটাই কথা, ছেলে হত্যার বিচার চাই। এখন পর্যন্ত আমার ছেলের কবর জিয়ারত করতে যাইনি। প্রতিজ্ঞা করেছি, যেদিন আমার ছেলের হত্যাকারীদের দেখবো, ওইদিন কবর জিয়ারত করবো। এর আগে যদি আমার মৃত্যু হয়, হোক। এরপরও খুনিদের না দেখে আমি ছেলের কবর জিয়ারত করতে যাবো না।’

র‍্যাবের তদন্তে এই ধীরগতি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘র‌্যাব তো সব জানে। প্রতিবেদন জমা দিলেই তো হয়। প্রতিবেদন যদি জমা না দিতে পারে সেটাই তারা প্রকাশ করুক। এভাবে ঝুলিয়ে রাখার কোনো মানে হয় না। কত বড় বড় মামলার সমাধান করছে র‌্যাব। কিন্তু সাগর-রুনির বেলায় ১২ বছরেও সমাধান করতে পারলো না। এমন হচ্ছে কেন আমার বোধগম্য নয়।’

মামলার বাদী এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনির ছোট ভাই নওশের আলম রোমান আদালত পাড়ার সাংবাদিকদের জানান, ১২ বছর ধরে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় চেয়ে নিচ্ছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। এটি একটি লজ্জাজনক বিষয়। প্রতিবেদন জমা না দেওয়া একটি খারাপ সংস্কৃতি চালু হতে যাচ্ছে। দেশে কোনো অপরাধ করলেও বিচার হয় না, এটাই সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাচ্ছে। সরকার চাইলে সত্য ঘটনা বের করতে পারে। সেখানে ১০৫ বার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় চেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা, আর সেই সময়ও মঞ্জুর হচ্ছে। অথচ তারা এলিট ফোর্স দাবি করেন।

তিনি আরও বলেন, দুঃখজনক বিষয় র‍্যাব ছোটখাটো বিষয়গুলো নিয়ে বড় বড় করে প্রেস ব্রিফিং করে। অথচ আলোচিত এই ঘটনা নিয়ে তাদের কোনো কাজই দেখাতে পারলো না। আমাদের এটাই দাবি প্রকৃত অপরাধীদের বের করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি তাদের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ওই বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি রুনির ভাই নওশের আলী রোমান বাদী হয়ে শেরে বাংলা নগর থানায় মামলা করেন।

প্রথমে মামলাটির তদন্ত করেন শেরেবাংলা নগর থানার একজন কর্মকর্তা। ওই বছর ১৬ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত ভার পড়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরের পুলিশ পরিদর্শক মো. রবিউল আলমের ওপর। দুই মাস পর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র‌্যাব)। সেই থেকে ১২ বছরেও সংস্থাটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি। এমনকি সর্বশেষ ২০১৭ বছরের ২১ মার্চের পর আর কোনো অগ্রগতি প্রতিবেদনও দাখিল করা হয়নি।

মামলায় রুনির বন্ধু তানভীর রহমানসহ মোট আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার অপর আসামিরা হলেন- বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুন, পলাশ রুদ্র পাল, ও আবু সাঈদ। এদের মধ্যে তানভীর ও পলাশ রুদ্র জামিন আছেন। অন্য আসামিরা কারাগারে আছেন।