রাষ্ট্রমালিকানাধীন যে পাঁচ ব্যাংককে সরকারি বলে মানছে না এনবিআর

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৫:৩১:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অগাস্ট ২০২৩
  • / ১৫১ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারি কর্মচারীদের মূল বেতন, উৎসব ভাতা ও বোনাস ছাড়া বাকি সব ভাতা ও সুবিধা আয়করমুক্ত। কিন্তু রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরকারি কর্মচারী হিসেবে মানছে না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ কারণে এসব ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব আয়ের ওপর করারোপ করা হচ্ছে। অতিরিক্ত আয়কর আদায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নোটিশও দিচ্ছে এনবিআরের সংশ্লিষ্ট সার্কেল। বাড়তি কর আদায়ে কাউকে কাউকে জরিমানাও করা হয়েছে।

এই পাঁচ ব্যাংকে প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। তবে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ সমস্যায় পড়েননি। কৃষি ব্যাংকের কর্মচারীদের সরকারি কর্মচারী হিসেবে বিবেচনা করা হলেও অন্য পাঁচটি ব্যাংকের ক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনতা ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক পর্যায়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা কোনোভাবেই হতে পারে না। জনতা ব্যাংক শতভাগ সরকার মালিকানাধীন ব্যাংক। আমরাও সরকারি কর্মচারী। এনবিআর চাহিদামতো কর আদায় করতে না পেরে এখন আমাদের লক্ষ্য করে মাঠে নেমেছে। বাড়তি কর আদায়ে কর্মকর্তাদের হয়রানি করা হচ্ছে।’

জানা গেছে, কর অঞ্চলগুলো অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা পে-স্কেল ২০১৫- এর প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী অতিরিক্ত আয়করের নোটিশ দিচ্ছে। এই প্রজ্ঞাপনে সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের নাম নেই। ওই সময়ে বেসামরিক প্রশাসন, স্বশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এবং বিচার বিভাগের জন্য পে-স্কেলের পৃথক পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে ব্যাংক বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এসব ব্যাংককে অন্তর্ভুক্ত না করে স্বশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, পুরো আয়ের ওপর আয়কর দিতে হলে কর্মকর্তা থেকে জ্যেষ্ঠ মুখ্য কর্মকর্তাদের বছরে ৩০-৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত আয়কর দিতে হবে। সহকারী মহাব্যবস্থাপক থেকে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দেড় লাখ থেকে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত আয়কর দিতে হবে। বর্তমান বাস্তবতায় কেউ এত টাকা বাড়তি কর দেওয়ার জন্য প্রস্তুত নয়।

এ বিষয়ে এনবিআরের একাধিক কর অঞ্চলের বৈতনিক সার্কেলের অনেক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ের সিদ্ধান্তে এসব ব্যাংক কর্মকর্তার কাছ থেকে অতিরিক্ত আয়কর দাবি করে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এটা মাঠ পর্যায়ের কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

রাষ্ট্রমালিকানাধীন যে পাঁচ ব্যাংককে সরকারি বলে মানছে না এনবিআর

Update Time : ০৫:৩১:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারি কর্মচারীদের মূল বেতন, উৎসব ভাতা ও বোনাস ছাড়া বাকি সব ভাতা ও সুবিধা আয়করমুক্ত। কিন্তু রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরকারি কর্মচারী হিসেবে মানছে না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ কারণে এসব ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব আয়ের ওপর করারোপ করা হচ্ছে। অতিরিক্ত আয়কর আদায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নোটিশও দিচ্ছে এনবিআরের সংশ্লিষ্ট সার্কেল। বাড়তি কর আদায়ে কাউকে কাউকে জরিমানাও করা হয়েছে।

এই পাঁচ ব্যাংকে প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। তবে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ সমস্যায় পড়েননি। কৃষি ব্যাংকের কর্মচারীদের সরকারি কর্মচারী হিসেবে বিবেচনা করা হলেও অন্য পাঁচটি ব্যাংকের ক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনতা ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক পর্যায়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা কোনোভাবেই হতে পারে না। জনতা ব্যাংক শতভাগ সরকার মালিকানাধীন ব্যাংক। আমরাও সরকারি কর্মচারী। এনবিআর চাহিদামতো কর আদায় করতে না পেরে এখন আমাদের লক্ষ্য করে মাঠে নেমেছে। বাড়তি কর আদায়ে কর্মকর্তাদের হয়রানি করা হচ্ছে।’

জানা গেছে, কর অঞ্চলগুলো অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা পে-স্কেল ২০১৫- এর প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী অতিরিক্ত আয়করের নোটিশ দিচ্ছে। এই প্রজ্ঞাপনে সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের নাম নেই। ওই সময়ে বেসামরিক প্রশাসন, স্বশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এবং বিচার বিভাগের জন্য পে-স্কেলের পৃথক পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে ব্যাংক বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এসব ব্যাংককে অন্তর্ভুক্ত না করে স্বশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, পুরো আয়ের ওপর আয়কর দিতে হলে কর্মকর্তা থেকে জ্যেষ্ঠ মুখ্য কর্মকর্তাদের বছরে ৩০-৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত আয়কর দিতে হবে। সহকারী মহাব্যবস্থাপক থেকে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দেড় লাখ থেকে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত আয়কর দিতে হবে। বর্তমান বাস্তবতায় কেউ এত টাকা বাড়তি কর দেওয়ার জন্য প্রস্তুত নয়।

এ বিষয়ে এনবিআরের একাধিক কর অঞ্চলের বৈতনিক সার্কেলের অনেক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ের সিদ্ধান্তে এসব ব্যাংক কর্মকর্তার কাছ থেকে অতিরিক্ত আয়কর দাবি করে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এটা মাঠ পর্যায়ের কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না।