বর্ধিত বাসভাড়া প্রত্যাহার চাই

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১১:৫৫:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ অগাস্ট ২০২০
  • / ১২৬ Time View
মোঃ মিনহাজুল ইসলাম:
এই দুঃসময়ে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে যাত্রী পরিবহনের জন্য গণপরিবহনের ভাড়া ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছিল। অথচ, দেখা গেছে প্রথম কিছুদিন গণপরিবহনে শারীরিক দূরত্ব বজার রাখার নিয়ম কিছুটা মানা হলেও এখন তা একেবারেই মান্য করা হচ্ছেনা৷ গণপরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধির নিমিত্তে সরকার প্রদত্ত শর্তগুলো অগ্রাহ্য করেই যাত্রী পরিবহন করছেন গণপরিবহনগুলোর ড্রাইভার-হেলপাররা।
.
অথচ, জনগণকে বাড়তি ভাড়ার বোঝা বহন করে চলতে হচ্ছে। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে করোনার লকডাউনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে যাত্রীদেরকে জিম্মি করে ৬০ শতাংশেরও বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। দেখা গেছে, বাসগুলোর দেখাদেখি লেগুনা, হিউম্যান হলার, অটোরিকশা, রিকসাসহ বিভিন্ন যানবাহনেরও ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। সাধারণত দেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকেরাই গণপরিবহনগুলোয় বেশি যাতায়াত করে থাকে। তাদের জন্য প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাওয়া এই ভাড়ার ঘানি বহন করা কতটা দুঃসহ হতে পারে, তা বলে বোঝানো ভার।
.
বিশেষত যারা গণপরিবহনে করে নিয়মিত কর্মস্থলে যান, তাদের জন্য এটা রীতিমতো বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও দেশে দীর্ঘদিন লকডাউন চলায় ব্যবসায়িক খাতেও একপ্রকার মন্দা চলছে। যার প্রভাব ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে খেটে খাওয়া মানুষ পর্যন্ত গিয়ে পড়েছে। ফলে, এই বাড়তি ভাড়া দেশের জনসাধারণের জন্য “মড়ার উপর খরার ঘা” হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। করোনার লকডাউন শেষে লক্ষ্য করে দেখা গেছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটা জিনিসের দামই বেড়েছে।
.
ফলে, এদেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষকেই সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে এই সঙ্কটে। এছাড়াও লকডাউন চলাকালে সরকারি ত্রাণ বা অর্থ সহায়তাও দুর্নীতিগ্রস্ত জনপ্রতিনিধিদের কারণে অনেকক্ষেত্রেই ঠিকমতো পাননি দরিদ্র জনগণেরা। ফলে, দেখা যাচ্ছে এই করোনা ভাইরাস এ দেশের খেটে খাওয়া মানুষের জীবনে বয়ে নিয়ে এসেছে এক অভিশাপ। অতএব, সরকারের উচিত অতি সত্তর এই গণপরিবহনের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার করে পূর্বের ভাড়া বহাল করা।
.
এক্ষেত্রে, এটাও লক্ষ্য রাখা উচিত যে, পূর্বের ভাড়া বহাল করার সাথে সাথেই যেন পরিবহনগুলোয় ধারণক্ষমতার অধিক যাত্রী গাদাগাদি করে বহন না করা হয়। তাহলে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি ভয়ানক হতে পারে। পূর্বের ভাড়া বহাল করার সাথে সাথে সরকারিভাবে কঠোর নিয়ম করতে হবে যে, মস্ক ব্যতিত কোনো যাত্রী গাড়ীতে বহন করা যাবেনা। একইসাথে যাত্রীদের হ্যান্ডগ্লাভস ব্যবহার করার নিয়মটিও কঠোরভাবে চালু করা উচিত।
.
আর, ধারণক্ষমতার অধিক গাদাগাদি করে যাত্রী নিলে সড়কে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সবশেষে সরকারের প্রতি দাবি, অনতিবিলম্বে গণপরিবহনের বর্ধিত ৬০ শতাংশ ভাড়া প্রত্যাহার করে পূর্বের ভাড়া বহাল করে জনদুর্ভোগ লাঘব করা হোক।
.
লেখক : শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
            জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
.
Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

বর্ধিত বাসভাড়া প্রত্যাহার চাই

Update Time : ১১:৫৫:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ অগাস্ট ২০২০
মোঃ মিনহাজুল ইসলাম:
এই দুঃসময়ে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে যাত্রী পরিবহনের জন্য গণপরিবহনের ভাড়া ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছিল। অথচ, দেখা গেছে প্রথম কিছুদিন গণপরিবহনে শারীরিক দূরত্ব বজার রাখার নিয়ম কিছুটা মানা হলেও এখন তা একেবারেই মান্য করা হচ্ছেনা৷ গণপরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধির নিমিত্তে সরকার প্রদত্ত শর্তগুলো অগ্রাহ্য করেই যাত্রী পরিবহন করছেন গণপরিবহনগুলোর ড্রাইভার-হেলপাররা।
.
অথচ, জনগণকে বাড়তি ভাড়ার বোঝা বহন করে চলতে হচ্ছে। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে করোনার লকডাউনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে যাত্রীদেরকে জিম্মি করে ৬০ শতাংশেরও বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। দেখা গেছে, বাসগুলোর দেখাদেখি লেগুনা, হিউম্যান হলার, অটোরিকশা, রিকসাসহ বিভিন্ন যানবাহনেরও ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। সাধারণত দেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকেরাই গণপরিবহনগুলোয় বেশি যাতায়াত করে থাকে। তাদের জন্য প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাওয়া এই ভাড়ার ঘানি বহন করা কতটা দুঃসহ হতে পারে, তা বলে বোঝানো ভার।
.
বিশেষত যারা গণপরিবহনে করে নিয়মিত কর্মস্থলে যান, তাদের জন্য এটা রীতিমতো বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও দেশে দীর্ঘদিন লকডাউন চলায় ব্যবসায়িক খাতেও একপ্রকার মন্দা চলছে। যার প্রভাব ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে খেটে খাওয়া মানুষ পর্যন্ত গিয়ে পড়েছে। ফলে, এই বাড়তি ভাড়া দেশের জনসাধারণের জন্য “মড়ার উপর খরার ঘা” হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। করোনার লকডাউন শেষে লক্ষ্য করে দেখা গেছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটা জিনিসের দামই বেড়েছে।
.
ফলে, এদেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষকেই সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে এই সঙ্কটে। এছাড়াও লকডাউন চলাকালে সরকারি ত্রাণ বা অর্থ সহায়তাও দুর্নীতিগ্রস্ত জনপ্রতিনিধিদের কারণে অনেকক্ষেত্রেই ঠিকমতো পাননি দরিদ্র জনগণেরা। ফলে, দেখা যাচ্ছে এই করোনা ভাইরাস এ দেশের খেটে খাওয়া মানুষের জীবনে বয়ে নিয়ে এসেছে এক অভিশাপ। অতএব, সরকারের উচিত অতি সত্তর এই গণপরিবহনের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার করে পূর্বের ভাড়া বহাল করা।
.
এক্ষেত্রে, এটাও লক্ষ্য রাখা উচিত যে, পূর্বের ভাড়া বহাল করার সাথে সাথেই যেন পরিবহনগুলোয় ধারণক্ষমতার অধিক যাত্রী গাদাগাদি করে বহন না করা হয়। তাহলে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি ভয়ানক হতে পারে। পূর্বের ভাড়া বহাল করার সাথে সাথে সরকারিভাবে কঠোর নিয়ম করতে হবে যে, মস্ক ব্যতিত কোনো যাত্রী গাড়ীতে বহন করা যাবেনা। একইসাথে যাত্রীদের হ্যান্ডগ্লাভস ব্যবহার করার নিয়মটিও কঠোরভাবে চালু করা উচিত।
.
আর, ধারণক্ষমতার অধিক গাদাগাদি করে যাত্রী নিলে সড়কে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সবশেষে সরকারের প্রতি দাবি, অনতিবিলম্বে গণপরিবহনের বর্ধিত ৬০ শতাংশ ভাড়া প্রত্যাহার করে পূর্বের ভাড়া বহাল করে জনদুর্ভোগ লাঘব করা হোক।
.
লেখক : শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
            জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
.