‘ফ্রি প্যালেস্টাইন মুভমেন্টে’র প্রতি সংহতি জানিয়ে ঢাবিতে শিক্ষার্থী সমাবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৬:৩৯:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ মে ২০২৪
  • / ৩৫ Time View

জাননাহ, ঢাবি প্রতিবেদক

স্বাধীন ফিলিস্তিন ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলমান ফিলিস্তিনপন্থী ছাত্র আন্দোলন – ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন মুভমেন্টে’র প্রতি সংহতি জানিয়ে সমাবেশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (৫ মে) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তারা যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর অত্যাচার বন্ধ করার এবং গ্রেপ্তারকারীদের মুক্তি দাবি জানান । সেই সাথে দ্রুত সময়ের মধ্যে ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ করে, গণহত্যার সাথে সংশ্লিষ্টদের বিচারের আওতায় এনে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার দাবি জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

সমাবেশে আইন বিভাগের শিক্ষক নকিব মোঃ নসরুল্লাহ বলেন, মানবতাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ইসরাইল ফিলিস্তিনের যে পরিস্থিতি করেছে তা সারা বিশ্বের মানুষ জানে। ফিলিস্তিনকে সমর্থন করার জন্য মুসলিম হওয়ার প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র মানুষ হওয়াই ফিলিস্তিন সমর্থন করার জন্য যথেষ্ট। পৃথিবীর ইতিহাস এত অল্প সময় এত বেশি নারী ও শিশু হত্যা হয়নি, যেমনটা ফিলিস্তিনে হয়েছে গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে। আশার বাণী হলো সাধারণ মানুষ জেগে উঠেছে।

তিনি বলেন, নেতিনিয়াহু একজন যুদ্ধাপরাধী এবং একই সাথে বাইডেনও যুদ্ধাপরাধী কারণ একমাত্র আমেরিকাই স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিপক্ষে ভেটো দিয়েছে। তাদের সকল চক্রান্ত ব্যর্থ হবে।

ম্যানেজমেন্টের ইনফরমেশন বিভাগের শিক্ষক আরিফুল ইসলাম বলেন, আজকে আমাদের উপস্থিতি কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর জন্য না। সারা বিশ্বে চলমান সন্ত্রাসবাদ নির্যাতন নিপীড়নের বিরুদ্ধে আমাদের সমাবেশ। সারা বিশ্বের ইতিহাসে সবচাইতে ওয়েল ডকুমেন্টেড জেনোসাইড ফিলিস্তিন এর গণহত্যা। এরকম জোনোসাইড নিয়ে যাদের টালবাহানা সে বিশ্বব্যবস্থাকে আমাদের প্রয়োজন নেই।

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত জাকারিয়া বলেন, আজকের উপস্থিতি জানান দেয় আমরা ফিলিস্তিনকে কতটা ভালোবাসি। আমরা ফিলিস্তিনের পক্ষে ছিলাম আছি এবং থাকবো ইনশা আল্লাহ। যারা ইসরাইলকে সাপোর্ট করবে ইসরাইলের সাথে আঁতাত রাখবে তাদেরকে সর্বস্তরে বয়কট করা হবে।

সমাবেশে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এবি জুবায়ের বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড়া খ্যাত ইসরাইল আজ সর্বস্তরের ফিলিস্তিনির উপর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের কারণে শুধুমাত্র ফিলিস্তিনি নয় সারা বিশ্বের মানুষ আজ অশান্তিতে ভুগছেন। আমেরিকার শিক্ষার্থী বন্ধুরা শুধুমাত্র ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলেছিল বলে আজকে তাদেরকে নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা সব সময় নির্যাতনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তারই ধারাবাহিকতায় আজকের সংহতি সমাবেশ। আমরা আজ রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে পূর্ণ সমর্থন ও সংহতি জানাই আমেরিকার সেসব সাহসীদের প্রতি।

জয়েন উদ্দিন সরকার তন্ময় নামে অর্থনীতি বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, যুগের পর যুগ দমিয়ে রাখা হয়েছে ফিলিস্তিনের জনসাধারণকে। তবে এবার গণবিস্ফোরণ হয়েছে। ইনশা আল্লাহ ফিলিস্তিন স্বাধীন হবেই। আমাদের মধ্যেও চাই ফিলিস্তিনি চেতনা যার বলে বলীয়ান হয়ে আমরাও অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারি।

ঢাবি শিক্ষার্থী মিশকাতুল জান্নাত তার বক্তব্যে বলেন, এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা সাড়ে ৩৪ হাজার ছাড়িয়েছে। ১০ হাজার নারী শহীদ হয়েছেন, ১৯ হাজার নারী আহত হয়েছেন, ৩৭টি হাসপাতালের মধ্যে ৩০টিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়েছে। সুপেয় পানি নেই খাদ্যও নেই। এমন পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারী কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীদেরকে মনে হচ্ছে যেন ফেরাউনের ঘরে মুসা নবী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে চাই সকল প্যালেস্টাইনের নাগরিকরা স্বাধীনতা পাক।

সমাবেশে ফিলিস্তিনের পক্ষে কবিতা আবৃত্তি করেন আবিদ হাসান রাফি, হাসিবুর রহমান, শাহিনুর রহমান। সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী আহমেদ আব্দুল্লাহ সালমান ও তার বন্ধুরা গান পরিবেশন করেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

‘ফ্রি প্যালেস্টাইন মুভমেন্টে’র প্রতি সংহতি জানিয়ে ঢাবিতে শিক্ষার্থী সমাবেশ

Update Time : ০৬:৩৯:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ মে ২০২৪

জাননাহ, ঢাবি প্রতিবেদক

স্বাধীন ফিলিস্তিন ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলমান ফিলিস্তিনপন্থী ছাত্র আন্দোলন – ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন মুভমেন্টে’র প্রতি সংহতি জানিয়ে সমাবেশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (৫ মে) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তারা যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর অত্যাচার বন্ধ করার এবং গ্রেপ্তারকারীদের মুক্তি দাবি জানান । সেই সাথে দ্রুত সময়ের মধ্যে ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ করে, গণহত্যার সাথে সংশ্লিষ্টদের বিচারের আওতায় এনে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার দাবি জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

সমাবেশে আইন বিভাগের শিক্ষক নকিব মোঃ নসরুল্লাহ বলেন, মানবতাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ইসরাইল ফিলিস্তিনের যে পরিস্থিতি করেছে তা সারা বিশ্বের মানুষ জানে। ফিলিস্তিনকে সমর্থন করার জন্য মুসলিম হওয়ার প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র মানুষ হওয়াই ফিলিস্তিন সমর্থন করার জন্য যথেষ্ট। পৃথিবীর ইতিহাস এত অল্প সময় এত বেশি নারী ও শিশু হত্যা হয়নি, যেমনটা ফিলিস্তিনে হয়েছে গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে। আশার বাণী হলো সাধারণ মানুষ জেগে উঠেছে।

তিনি বলেন, নেতিনিয়াহু একজন যুদ্ধাপরাধী এবং একই সাথে বাইডেনও যুদ্ধাপরাধী কারণ একমাত্র আমেরিকাই স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিপক্ষে ভেটো দিয়েছে। তাদের সকল চক্রান্ত ব্যর্থ হবে।

ম্যানেজমেন্টের ইনফরমেশন বিভাগের শিক্ষক আরিফুল ইসলাম বলেন, আজকে আমাদের উপস্থিতি কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর জন্য না। সারা বিশ্বে চলমান সন্ত্রাসবাদ নির্যাতন নিপীড়নের বিরুদ্ধে আমাদের সমাবেশ। সারা বিশ্বের ইতিহাসে সবচাইতে ওয়েল ডকুমেন্টেড জেনোসাইড ফিলিস্তিন এর গণহত্যা। এরকম জোনোসাইড নিয়ে যাদের টালবাহানা সে বিশ্বব্যবস্থাকে আমাদের প্রয়োজন নেই।

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত জাকারিয়া বলেন, আজকের উপস্থিতি জানান দেয় আমরা ফিলিস্তিনকে কতটা ভালোবাসি। আমরা ফিলিস্তিনের পক্ষে ছিলাম আছি এবং থাকবো ইনশা আল্লাহ। যারা ইসরাইলকে সাপোর্ট করবে ইসরাইলের সাথে আঁতাত রাখবে তাদেরকে সর্বস্তরে বয়কট করা হবে।

সমাবেশে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এবি জুবায়ের বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড়া খ্যাত ইসরাইল আজ সর্বস্তরের ফিলিস্তিনির উপর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের কারণে শুধুমাত্র ফিলিস্তিনি নয় সারা বিশ্বের মানুষ আজ অশান্তিতে ভুগছেন। আমেরিকার শিক্ষার্থী বন্ধুরা শুধুমাত্র ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলেছিল বলে আজকে তাদেরকে নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা সব সময় নির্যাতনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তারই ধারাবাহিকতায় আজকের সংহতি সমাবেশ। আমরা আজ রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে পূর্ণ সমর্থন ও সংহতি জানাই আমেরিকার সেসব সাহসীদের প্রতি।

জয়েন উদ্দিন সরকার তন্ময় নামে অর্থনীতি বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, যুগের পর যুগ দমিয়ে রাখা হয়েছে ফিলিস্তিনের জনসাধারণকে। তবে এবার গণবিস্ফোরণ হয়েছে। ইনশা আল্লাহ ফিলিস্তিন স্বাধীন হবেই। আমাদের মধ্যেও চাই ফিলিস্তিনি চেতনা যার বলে বলীয়ান হয়ে আমরাও অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারি।

ঢাবি শিক্ষার্থী মিশকাতুল জান্নাত তার বক্তব্যে বলেন, এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা সাড়ে ৩৪ হাজার ছাড়িয়েছে। ১০ হাজার নারী শহীদ হয়েছেন, ১৯ হাজার নারী আহত হয়েছেন, ৩৭টি হাসপাতালের মধ্যে ৩০টিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়েছে। সুপেয় পানি নেই খাদ্যও নেই। এমন পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারী কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীদেরকে মনে হচ্ছে যেন ফেরাউনের ঘরে মুসা নবী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে চাই সকল প্যালেস্টাইনের নাগরিকরা স্বাধীনতা পাক।

সমাবেশে ফিলিস্তিনের পক্ষে কবিতা আবৃত্তি করেন আবিদ হাসান রাফি, হাসিবুর রহমান, শাহিনুর রহমান। সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী আহমেদ আব্দুল্লাহ সালমান ও তার বন্ধুরা গান পরিবেশন করেন।