ফাঁস হওয়া ফোনালাপের কথা স্বীকার করলেন মামুনুল হক

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৯:৫২:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ এপ্রিল ২০২১
  • / ১৪১ Time View

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের রিসোর্টে নারীসহ অবরুদ্ধ হন হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। এরপর ফাঁস হতে থাকে তার ব্যক্তিগত বিভিন্ন কল রেকর্ড।

অনেকে বলেছেন, এই কল রেকর্ড বানোয়াট। কিন্তু বৃহস্পতিবার (০৮ এপ্রিল) ফেসবুক লাইভে এসে ফাঁস হওয়া ফোনালাপ নিজের ছিল বলে স্বীকার করেছেন মামুনুল হক।

তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রীর সঙ্গে আমি কী বলব না বলব, সেটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু ফোনালাপ ফাঁস করে আমার ব্যক্তিগত অধিকার ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে। এটি যেমন দেশের আইনে অপরাধ, তেমনি ইসলামি বিধানেও চরম গুনাহর কাজ। সুতরাং আমার ব্যক্তিগত ফোনালাপ যারা ফাঁস করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব।’

মামুনুল হক আরও বলেন, ‘যেভাবে একের পর এক মানুষের ব্যক্তিগত ফোনালাপ ফাঁস করা হচ্ছে, এটি দেশের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না। এই যে এতগুলো ফোনালাপ ফাঁস করা হলো তাতে কী প্রমাণ মিলেছে যে, সে আমার বিবাহিতা স্ত্রী নয়? অথচ শুধু শুধু আমার একান্ত ব্যক্তিগত কথাগুলো কোন উদ্দেশে ফাঁস করা হলো?’

নারায়ণগঞ্জের রিসোর্টের ঘটনার বিষয়ে মামুনুল বলেন, ‘সেদিন নারায়ণগঞ্জের রয়েল রিসোর্টে যে ঘটনা ঘটেছে সেটি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে যে, আমি কেন এ পরিস্থিতিতে রিসোর্টে গেলাম। হ্যাঁ, আমি স্বীকার করছি যে, এমন অসাবধানতাবশত সেখানে আমার যাওয়া সমীচীন হয়নি। আমি জানতাম না যে দেশের মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা চরমভাবে ভেঙে পড়েছে। সন্ত্রাসীরা আমার চরিত্র হরণের উদ্দেশে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’

স্ত্রীর নাম বিভ্রাটের বিষয়ে মামুনুল হক বলেন, ‘কেন আমি আমেনা তৈয়েবা বললাম, কেন সে জান্নাত আরা ঝর্ণা বলল। এ সব বিষয়ে নিয়ে অনেক অনেক কথা হয়েছে। আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই। আমার ওপর সন্ত্রাসী দল যখন চড়াও হয়ে আমার জীবন হুমকির ভেতরে ফেলে দিচ্ছিল, তখন আমি বলছিলাম আপনাদের কাছে কেন আমি বলব। তখন তাদের মারমুখি পরিস্থিতিতে ভীত হয়ে আমি অনেক কিছুই বলেছি। তখন আমি এটাও বলেছিলাম আমি আপনাদের কাছে পূর্ণাঙ্গ কোনো তথ্য দেব না। যদি কোনো তথ্য দিতেই হয় তাহলে আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে দেব। যখন পুলিশ আসে তখন আমি সঠিক তথ্য দিয়েছি। আমার স্ত্রীদের নাম বলেছি।’

গত শনিবার (৩ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়াল রিসোর্টে মামুনুল হককে নারীসহ অবরুদ্ধ করে রাখেন স্থানীরা। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করলে নারীকাণ্ড নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। এরপরই গত দুই দিনে ঢাকায় ও নারায়ণগঞ্জে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। এরইমধ্যে সরকারের একাধিক মন্ত্রী হেফাজতের তাণ্ডবের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার কথা বলেছেন। পাশাপাশি সাদা পোশাকে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও তার গতিবিধি নজরদারি করছেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

ফাঁস হওয়া ফোনালাপের কথা স্বীকার করলেন মামুনুল হক

Update Time : ০৯:৫২:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ এপ্রিল ২০২১

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের রিসোর্টে নারীসহ অবরুদ্ধ হন হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। এরপর ফাঁস হতে থাকে তার ব্যক্তিগত বিভিন্ন কল রেকর্ড।

অনেকে বলেছেন, এই কল রেকর্ড বানোয়াট। কিন্তু বৃহস্পতিবার (০৮ এপ্রিল) ফেসবুক লাইভে এসে ফাঁস হওয়া ফোনালাপ নিজের ছিল বলে স্বীকার করেছেন মামুনুল হক।

তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রীর সঙ্গে আমি কী বলব না বলব, সেটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু ফোনালাপ ফাঁস করে আমার ব্যক্তিগত অধিকার ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে। এটি যেমন দেশের আইনে অপরাধ, তেমনি ইসলামি বিধানেও চরম গুনাহর কাজ। সুতরাং আমার ব্যক্তিগত ফোনালাপ যারা ফাঁস করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব।’

মামুনুল হক আরও বলেন, ‘যেভাবে একের পর এক মানুষের ব্যক্তিগত ফোনালাপ ফাঁস করা হচ্ছে, এটি দেশের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না। এই যে এতগুলো ফোনালাপ ফাঁস করা হলো তাতে কী প্রমাণ মিলেছে যে, সে আমার বিবাহিতা স্ত্রী নয়? অথচ শুধু শুধু আমার একান্ত ব্যক্তিগত কথাগুলো কোন উদ্দেশে ফাঁস করা হলো?’

নারায়ণগঞ্জের রিসোর্টের ঘটনার বিষয়ে মামুনুল বলেন, ‘সেদিন নারায়ণগঞ্জের রয়েল রিসোর্টে যে ঘটনা ঘটেছে সেটি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে যে, আমি কেন এ পরিস্থিতিতে রিসোর্টে গেলাম। হ্যাঁ, আমি স্বীকার করছি যে, এমন অসাবধানতাবশত সেখানে আমার যাওয়া সমীচীন হয়নি। আমি জানতাম না যে দেশের মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা চরমভাবে ভেঙে পড়েছে। সন্ত্রাসীরা আমার চরিত্র হরণের উদ্দেশে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’

স্ত্রীর নাম বিভ্রাটের বিষয়ে মামুনুল হক বলেন, ‘কেন আমি আমেনা তৈয়েবা বললাম, কেন সে জান্নাত আরা ঝর্ণা বলল। এ সব বিষয়ে নিয়ে অনেক অনেক কথা হয়েছে। আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই। আমার ওপর সন্ত্রাসী দল যখন চড়াও হয়ে আমার জীবন হুমকির ভেতরে ফেলে দিচ্ছিল, তখন আমি বলছিলাম আপনাদের কাছে কেন আমি বলব। তখন তাদের মারমুখি পরিস্থিতিতে ভীত হয়ে আমি অনেক কিছুই বলেছি। তখন আমি এটাও বলেছিলাম আমি আপনাদের কাছে পূর্ণাঙ্গ কোনো তথ্য দেব না। যদি কোনো তথ্য দিতেই হয় তাহলে আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে দেব। যখন পুলিশ আসে তখন আমি সঠিক তথ্য দিয়েছি। আমার স্ত্রীদের নাম বলেছি।’

গত শনিবার (৩ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়াল রিসোর্টে মামুনুল হককে নারীসহ অবরুদ্ধ করে রাখেন স্থানীরা। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করলে নারীকাণ্ড নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। এরপরই গত দুই দিনে ঢাকায় ও নারায়ণগঞ্জে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। এরইমধ্যে সরকারের একাধিক মন্ত্রী হেফাজতের তাণ্ডবের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার কথা বলেছেন। পাশাপাশি সাদা পোশাকে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও তার গতিবিধি নজরদারি করছেন।