প্রতিটি সড়ক যেন উঠান,চলছে খড় শুকানোর ধুম, বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৩:১২:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ এপ্রিল ২০২১
  • / ১৮২ Time View
এনামুল হক,সুন্দরগঞ্জ(গাইবান্ধা)সংবাদদাতা:
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন কাঁচা-পাকা সড়কে চলছে ধানের খড় শুকানোর কাজ। যার ফলে একদিকে রাস্তা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি বৃদ্ধি পেয়েছে সড়ক দূর্ঘটনার আশঙ্কা।
.
জমি থেকে ধান কেটে এনে স্তূপ করে রাখা হচ্ছে সড়কের উপর। পরে সড়কের একটা জায়গা দখলে নিয়ে ধান মাড়াই মেশিন বসিয়ে দিব্বি চলছে মাড়াইয়ের কাজ। আর এ অবস্থায় সড়কের অর্ধেক অংশে ধান শুকানো ছাড়াও বিশাল খড় সড়কের উপরেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়ে রোদে শুকানো হচ্ছে।যেখানে ধান কেটে, মাড়াই শেষে ধান ও খড় শুকানো হতো এসব কৃষক-কৃষাণীর বাড়ির আঙিনা অথবা উঠোনে। কিন্তু এসব কাজ এখন হচ্ছে ব্যস্ততম সড়কের উপর।ফলে এতে সড়ক সংকুচিত হয়ে বাড়ছে অহরহ দুর্ঘটনা।
.
ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন।পাকা সড়কপথে প্রতিনিয়ত চলছে মিনি বাস,ট্রাক,সিএনজি, মোটরবাইক সহ রিক্সা-ভ্যান এবং ইজিবাইক।এসব গাড়ী চালকেরা সর্বক্ষণ দুর্ঘটনার আতঙ্কের মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে। শুধু কি তাই কোনো কোন পাকা সড়কে ধান,ভুট্টা মাড়াইয়ের কাজের চিত্র চোখে পড়ে। পাকা সড়কে যানবাহন চলাচলে চরম অসুবিধা সৃষ্টি করে এবং দুর্ঘটনার যথেষ্ট আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও এই বেআইনি কাজ জেনে বুঝে তারা কেন করে।
.
পাকা সড়কে ধান শুকানসহ ধান ও ভুট্টা মাড়াই করণের লোকদের সাথে কথোপকথনে জানা যায়, এই মৌসুমে বাড়ীতে কাঁচা মাটিতে ধান-খড় শুকাতে বেশি সময় লাগে। তা ছাড়া এসময় বৃষ্টি বাদল, ঝড়ে ক্ষতিও হয়। তাই তারা অত্যন্ত নিরাপদ এবং দ্রুত শুকানোর স্বার্থেই পাকা সড়কে ধান এবং খড় শুকিয়ে থাকেন।
.
No description available.
.
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের এরশাদ মোল্লা নামে এক পথচারী বলেন, এরা নিয়ম-কানুন তোয়াক্কা না করে সড়ক বন্ধ করে সড়কের উপর ধান, ভুট্টা মাড়াইসহ খড় শুকাচ্ছে স্থানীয় কৃষক-কৃষানীরা।
.
তিনি আরো বলেন, সড়ক গুলো দেখলে মনে হয় চলাচলের জন্য সড়ক নয় এ যেন ধান ও খড় শুকানো ব্যক্তিদের পৈত্রিক সম্পত্তি। অপরদিকে সিএনজি চালক আনারুল ইসলাম বলেন,খড় শুকানোর জন্য একদিন আগে থেকেই সড়কের দুধারে বড় বড় করে খড়ের পালা দিয়ে সড়ক দখল করে রাখা হয়। এতে সড়কের প্রশস্ততা কমে সরু হয়ে যাওয়ায় পাশাপাশি দুটি গাড়ি চলাচলের সময় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
.
সোমবার সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, রাস্তায় চলমান সকল যানবাহন দূর্ঘটনার সম্মুখীন হয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে প্রতিনিয়ত, এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন কৃষক-কৃষাণী সহ কৃষক পরিবারের ছোট- ছোট শিশু বাচ্চারা। আবার রাস্তা সংকীর্ণ হওয়ার কারণে অনেক স্থানে যানজটেরও সৃষ্টি হচ্ছে।
.
দূর্ঘটনা এড়াতে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে যে কোন সময় ঘটতে পারে মর্মান্তিক দূর্ঘটনা। রাস্তায় চলাচলকারী একাধিক রিকশাচালক ও পথচারী বলেন,সড়কে ধানসহ বিভিন্ন ফসল ও খড় শুকানোর ফলে ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগেই আছে। বিশেষ করে ধান ও খড়ের ওপর দিয়ে চলতে গিয়ে প্রায়ই সাইকেল ও মোটরসাইকেল আরোহীরা দুর্ঘটনার কবলে পড়েন আর খড়ের উপর গাড়ীর ব্রেক ধরাটাও অনেক ঝুঁকিপূর্ণ।
.
এ ছাড়াও অটোভ্যান ও রিকশা দুর্ঘটনা নিত্যদিনের স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় অনেকেরই হাত-পা কেটে গেছে ও ভেঙে গেছে বলে জানান তারা।
.
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ-আল-মারুফ বলেন, সড়ক দখল করে ধান ও খড় শুকানোর বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। যারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

প্রতিটি সড়ক যেন উঠান,চলছে খড় শুকানোর ধুম, বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা

Update Time : ০৩:১২:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ এপ্রিল ২০২১
এনামুল হক,সুন্দরগঞ্জ(গাইবান্ধা)সংবাদদাতা:
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন কাঁচা-পাকা সড়কে চলছে ধানের খড় শুকানোর কাজ। যার ফলে একদিকে রাস্তা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি বৃদ্ধি পেয়েছে সড়ক দূর্ঘটনার আশঙ্কা।
.
জমি থেকে ধান কেটে এনে স্তূপ করে রাখা হচ্ছে সড়কের উপর। পরে সড়কের একটা জায়গা দখলে নিয়ে ধান মাড়াই মেশিন বসিয়ে দিব্বি চলছে মাড়াইয়ের কাজ। আর এ অবস্থায় সড়কের অর্ধেক অংশে ধান শুকানো ছাড়াও বিশাল খড় সড়কের উপরেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়ে রোদে শুকানো হচ্ছে।যেখানে ধান কেটে, মাড়াই শেষে ধান ও খড় শুকানো হতো এসব কৃষক-কৃষাণীর বাড়ির আঙিনা অথবা উঠোনে। কিন্তু এসব কাজ এখন হচ্ছে ব্যস্ততম সড়কের উপর।ফলে এতে সড়ক সংকুচিত হয়ে বাড়ছে অহরহ দুর্ঘটনা।
.
ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন।পাকা সড়কপথে প্রতিনিয়ত চলছে মিনি বাস,ট্রাক,সিএনজি, মোটরবাইক সহ রিক্সা-ভ্যান এবং ইজিবাইক।এসব গাড়ী চালকেরা সর্বক্ষণ দুর্ঘটনার আতঙ্কের মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে। শুধু কি তাই কোনো কোন পাকা সড়কে ধান,ভুট্টা মাড়াইয়ের কাজের চিত্র চোখে পড়ে। পাকা সড়কে যানবাহন চলাচলে চরম অসুবিধা সৃষ্টি করে এবং দুর্ঘটনার যথেষ্ট আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও এই বেআইনি কাজ জেনে বুঝে তারা কেন করে।
.
পাকা সড়কে ধান শুকানসহ ধান ও ভুট্টা মাড়াই করণের লোকদের সাথে কথোপকথনে জানা যায়, এই মৌসুমে বাড়ীতে কাঁচা মাটিতে ধান-খড় শুকাতে বেশি সময় লাগে। তা ছাড়া এসময় বৃষ্টি বাদল, ঝড়ে ক্ষতিও হয়। তাই তারা অত্যন্ত নিরাপদ এবং দ্রুত শুকানোর স্বার্থেই পাকা সড়কে ধান এবং খড় শুকিয়ে থাকেন।
.
No description available.
.
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের এরশাদ মোল্লা নামে এক পথচারী বলেন, এরা নিয়ম-কানুন তোয়াক্কা না করে সড়ক বন্ধ করে সড়কের উপর ধান, ভুট্টা মাড়াইসহ খড় শুকাচ্ছে স্থানীয় কৃষক-কৃষানীরা।
.
তিনি আরো বলেন, সড়ক গুলো দেখলে মনে হয় চলাচলের জন্য সড়ক নয় এ যেন ধান ও খড় শুকানো ব্যক্তিদের পৈত্রিক সম্পত্তি। অপরদিকে সিএনজি চালক আনারুল ইসলাম বলেন,খড় শুকানোর জন্য একদিন আগে থেকেই সড়কের দুধারে বড় বড় করে খড়ের পালা দিয়ে সড়ক দখল করে রাখা হয়। এতে সড়কের প্রশস্ততা কমে সরু হয়ে যাওয়ায় পাশাপাশি দুটি গাড়ি চলাচলের সময় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
.
সোমবার সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, রাস্তায় চলমান সকল যানবাহন দূর্ঘটনার সম্মুখীন হয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে প্রতিনিয়ত, এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন কৃষক-কৃষাণী সহ কৃষক পরিবারের ছোট- ছোট শিশু বাচ্চারা। আবার রাস্তা সংকীর্ণ হওয়ার কারণে অনেক স্থানে যানজটেরও সৃষ্টি হচ্ছে।
.
দূর্ঘটনা এড়াতে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে যে কোন সময় ঘটতে পারে মর্মান্তিক দূর্ঘটনা। রাস্তায় চলাচলকারী একাধিক রিকশাচালক ও পথচারী বলেন,সড়কে ধানসহ বিভিন্ন ফসল ও খড় শুকানোর ফলে ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগেই আছে। বিশেষ করে ধান ও খড়ের ওপর দিয়ে চলতে গিয়ে প্রায়ই সাইকেল ও মোটরসাইকেল আরোহীরা দুর্ঘটনার কবলে পড়েন আর খড়ের উপর গাড়ীর ব্রেক ধরাটাও অনেক ঝুঁকিপূর্ণ।
.
এ ছাড়াও অটোভ্যান ও রিকশা দুর্ঘটনা নিত্যদিনের স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় অনেকেরই হাত-পা কেটে গেছে ও ভেঙে গেছে বলে জানান তারা।
.
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ-আল-মারুফ বলেন, সড়ক দখল করে ধান ও খড় শুকানোর বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। যারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।