দু’পক্ষের সংঘর্ষ: ইউপি কার্যালয় ভাঙচুর ও যানবাহনে আগুন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৮:৫০:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ২৯ Time View

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণসহ একটি প্রাইভেট কার ও কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ভাঙচুর করা হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয়।

এ সময় তারা দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারকে পরিষদের ভেতরে অবরুদ্ধ করে রাখে। দুর্বৃত্তদের হামলায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

একইসঙ্গে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভূঁইয়ার পক্ষে কাজ করেন দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টার ও তার অনুসারীরা। সদ্য গজিয়ে ওঠা রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে এই নারকীয় হামলা ও তাণ্ডব ঘটে।

এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে কম্বল বিতরণের আয়োজন করেন ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টার। একই সময় দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের গেটের সামনে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা জমায়েত হতে থাকে। এক পর্যায়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

দুপুর দেড়টার দিকে মিজান ও তার লোকজন লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ইউনিয়ন পরিষদে হামলা চালায়। এক পর্যায়ে হামলাকারীরা ইউনিয়ন পরিষদের প্রধান গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে।

এ সময় তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারের ব্যবহৃত হ্যারিয়ার গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। আগুনে পুরো গাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

এক পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের ভেতরে নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারসহ তার লোকজন অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। হামলাকারীরা মাঠের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে। পরিষদের কক্ষে ঢুকেও ভাঙচুর তাণ্ডব চালায় তারা। বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির ঘটনাও ঘটে। এ সময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের দোকানপাট বন্ধ করে পালিয়ে যান ব্যবসায়ীরা।

এ বিষয়ে দাউদপুর পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টার বলেন, এলাকার দরিদ্র ও অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করতে এখানে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে চেয়ার টেবিল দেয়া হয়। কোনো কিছু বোঝার আগেই পূর্বপরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন প্রকার অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ইউনিয়ন পরিষদের গেট ভেঙে আমার লোকজনের ওপর হামলা করে এবং গাড়ি ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে। চেয়ার-টেবিলও ভাঙচুর করে। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে সন্ত্রাসীরা। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।

হামলার সময় রূপগঞ্জ থানার ওসি ও পুলিশ সুপারের (এসপি) সহায়তা চাওয়া হলেও তাদের সাড়া মেলেনি। পরে সহকারী পুলিশ সুপার পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারকে উদ্ধার করেন। এছাড়া পূর্বাচল ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে গাড়ির আগুন নেভান। ততক্ষণে অবশ্য গাড়িটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

দু’পক্ষের সংঘর্ষ: ইউপি কার্যালয় ভাঙচুর ও যানবাহনে আগুন

Update Time : ০৮:৫০:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৪

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণসহ একটি প্রাইভেট কার ও কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ভাঙচুর করা হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয়।

এ সময় তারা দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারকে পরিষদের ভেতরে অবরুদ্ধ করে রাখে। দুর্বৃত্তদের হামলায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

একইসঙ্গে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভূঁইয়ার পক্ষে কাজ করেন দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টার ও তার অনুসারীরা। সদ্য গজিয়ে ওঠা রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে এই নারকীয় হামলা ও তাণ্ডব ঘটে।

এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে কম্বল বিতরণের আয়োজন করেন ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টার। একই সময় দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের গেটের সামনে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা জমায়েত হতে থাকে। এক পর্যায়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

দুপুর দেড়টার দিকে মিজান ও তার লোকজন লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ইউনিয়ন পরিষদে হামলা চালায়। এক পর্যায়ে হামলাকারীরা ইউনিয়ন পরিষদের প্রধান গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে।

এ সময় তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারের ব্যবহৃত হ্যারিয়ার গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। আগুনে পুরো গাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

এক পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের ভেতরে নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারসহ তার লোকজন অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। হামলাকারীরা মাঠের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে। পরিষদের কক্ষে ঢুকেও ভাঙচুর তাণ্ডব চালায় তারা। বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির ঘটনাও ঘটে। এ সময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের দোকানপাট বন্ধ করে পালিয়ে যান ব্যবসায়ীরা।

এ বিষয়ে দাউদপুর পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টার বলেন, এলাকার দরিদ্র ও অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করতে এখানে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে চেয়ার টেবিল দেয়া হয়। কোনো কিছু বোঝার আগেই পূর্বপরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন প্রকার অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ইউনিয়ন পরিষদের গেট ভেঙে আমার লোকজনের ওপর হামলা করে এবং গাড়ি ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে। চেয়ার-টেবিলও ভাঙচুর করে। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে সন্ত্রাসীরা। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।

হামলার সময় রূপগঞ্জ থানার ওসি ও পুলিশ সুপারের (এসপি) সহায়তা চাওয়া হলেও তাদের সাড়া মেলেনি। পরে সহকারী পুলিশ সুপার পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারকে উদ্ধার করেন। এছাড়া পূর্বাচল ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে গাড়ির আগুন নেভান। ততক্ষণে অবশ্য গাড়িটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়