জনপ্রিয়তার শীর্ষে ইসলামি সংগীত চ্যানেল হলি টিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১০:০১:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২২
  • / ১২১ Time View

বিনোদন ডেস্কঃ

‘ত্রিভুবনের প্রিয় মুহাম্মদ এলো রে দুনিয়ায়।
আয় রে সাগর আকাশ বাতাস দেখ্বি যদি আয়।।
ধূলির ধরা বেহেশ্তে আজ,
জয় করিল দিল রে লাজ।
আজকে খুশির ঢল নেমেছে ধূসর সাহারায়।।’

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের অমর গজলের একটি। এই গজলের ভাব, আবেদন ও হৃদছোঁয়া সুরে আন্দোলিত হয়নি- এমন মানুষের খোঁজ মেলা মুশকিল। কবি নজরুল বাংলা ভাষায় সার্থক বেশ কিছু গজল লিখে গেছেন, যা দেশ ও বিদেশে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। নাশিদ, গজল, হামদ, নাত কিংবা ইসলামি ভাবধারার সংগীত যারা শুনেন তাদের কাছে এই গজল নিয়ে নতুন করে আর বলার কিছু নেই। তবে নজরুলের এই গজলের প্রসঙ্গ উত্থাপনের কারণ হলো, এই গজলগুলো নতুনভাবে দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ইসলামি সংগীত চ্যানেল- হলি টিউন।

ইউটিউবে চ্যানেলটি কার্যক্রম শুরু ২০১৬ সালে। এখন পর্যন্ত ৭৭০টির ভিডিও তারা আপলোড করেছে। তন্মধ্যে গুণগত মান, সংগীতায়োজন, হৃদকাড়া সুর, বিষয় নির্বাচন, সমকালীনতা ইত্যাদির কারণে দর্শকদের কাছে চার শতাধিক সংগীত ব্যাকভাবে সমাদৃত হয়েছে। হলি টিউনের সর্বমোট ভিডিও দেখা হয়েছে একশ এক কোটি ১৭ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি বার। তন্মধ্যে পঁচিশটির ভিডিও দর্শকরা দেখেছেন কোটি বার।

হলি টিউনের প্রধান নির্বাহী মুহাম্মদ বদরুজ্জামান। পরিচালক হিসেবে রয়েছেন সাঈদ আহমাদ। শিল্পী হিসেবে তারাও দেশব্যাপী তুমুল জনপ্রিয়। জাতীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন কলরব এবং বিভিন্ন ইসলামি সংগীত শিল্পীদের ইসলামি সংগীত ও নাশিদ প্রকাশ করে হলি টিউন। সংগীতের বিষয় নির্বাচনে সম-সাময়িক প্রসঙ্গকে প্রাধান্য দেওয়া বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাংলাভাষী দর্শকরা হলি টিউনের সংগীতগুলো শুনে থাকেন। তাদের সর্বশেষ গজল বেকারত্ব নিয়ে ‘আমার মামু খালু নাই।’ ২১ জানুয়ারি রাতে গজলটি আপলোড করা হয়েছে। দুই দিনে ভিডিওটি দেখা হয়েছে তিন লাখ পাঁচ হাজার ২১৮ বার। এর দ্বারাই চ্যানেলটির জনপ্রিয়তা সম্পর্কে কিছুটা অনুমান করা যায়। আপাতত প্রতি মাসে মানসম্পন্ন চারটি ভিডিও কনটেন্ট প্রচার করা হয় এই চ্যানেল থেকে।

ইসলামি ভাবধারার সংগীতকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় করে তুলতে হলি টিউন বিশাল ভূমিকা রাখছে। উদ্যোক্তাদের দাবি, ‘হলি টিউনের আগে এভাবে কেউ ইসলামি ধারার সংগীত নিয়ে কেউ কাজ করেনি।’ চ্যানলেটির আনুষ্ঠানিক পথ চলায় প্রথম ভিডিও ছিলো- মুহাম্মদ বদরুজ্জামানের একক কন্ঠের ‘চলার পথে’ সংগীতটি। এই চ্যানেলের সংগীতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ শিশু-কিশোরদের কন্ঠে গাওয়া ‘রমজানের ওই রোজার শেষে’ সংগীতটি। এর ভিউ প্রায় ৫ কোটি।

বাংলাদেশে ইসলামি সংগীত জগতে ১০ লাখ সাবস্ক্রাইবার নিয়ে প্রথম গোল্ডেন প্লে বাটন পাওয়া এই চ্যানেলটি পাঁচ বছরে পরিণত হয় পঞ্চাশ লাখের পরিবারে। ইতিমধ্যে চ্যানেলটি সব মহলে ব্যাপক সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়েছে। এই অর্জন সম্পর্কে অনুভূতি জানাতে গিয়ে হলিটিউনের সিইও মুহাম্মাদ বদরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা আল্লাহতায়ালার কাছে শোকরিয়া আদায় করছি এবং দর্শক শ্রোতাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তারা আমাদের কাজগুলো গ্রহণ করেছেন। ইসলামি সংগীত অঙ্গনে এ অর্জন সত্যিই বিরল। আমরা ধন্যবাদ জানাই হলি টিউনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে।’

হলি টিউনের জনপ্রিয় শিল্পীরা হলেন- সাঈদ আহমাদ, মুহাম্মদ বদরুজ্জামান, আবু রায়হান, আহমদ আব্দুল্লাহ, শিশু কারী আবু রায়হান, মাহফুজুল আলম, তাওহীদ জামিল, আহনাফ খালিদ, ফজলে এলাহী সাকিব, রিফাত রহমান, জাহিদুল ইসলাম শাওন ও শিশুশিল্পী হোজায়ফা প্রমুখ।

লিরিকিস্ট হিসেবে রয়েছেন, সাইফ সিরাজ, আহমদ আবদুল্লাহ, জাফর আহমদ রাবি, রাজিব হাসান, আমিনুল ইসলাম মামুন, তাওহিদ জামিল প্রমুখ।

অধিকাংশ গানের সুর করেছেন- সাঈদ আহমাদ, মুহাম্মদ বদরুজ্জামান ও আহমদ আব্দুল্লাহ।
সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে মাহফুজুল আলম ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন, ২০২১ সালের জুলাই মাসে তিনি ইন্তেকাল করেন। আলোচিত অনেক সংগীতের সাউন্ড ডিজাইন করেছেন তানজিম রেজা।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

জনপ্রিয়তার শীর্ষে ইসলামি সংগীত চ্যানেল হলি টিউন

Update Time : ১০:০১:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২২

বিনোদন ডেস্কঃ

‘ত্রিভুবনের প্রিয় মুহাম্মদ এলো রে দুনিয়ায়।
আয় রে সাগর আকাশ বাতাস দেখ্বি যদি আয়।।
ধূলির ধরা বেহেশ্তে আজ,
জয় করিল দিল রে লাজ।
আজকে খুশির ঢল নেমেছে ধূসর সাহারায়।।’

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের অমর গজলের একটি। এই গজলের ভাব, আবেদন ও হৃদছোঁয়া সুরে আন্দোলিত হয়নি- এমন মানুষের খোঁজ মেলা মুশকিল। কবি নজরুল বাংলা ভাষায় সার্থক বেশ কিছু গজল লিখে গেছেন, যা দেশ ও বিদেশে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। নাশিদ, গজল, হামদ, নাত কিংবা ইসলামি ভাবধারার সংগীত যারা শুনেন তাদের কাছে এই গজল নিয়ে নতুন করে আর বলার কিছু নেই। তবে নজরুলের এই গজলের প্রসঙ্গ উত্থাপনের কারণ হলো, এই গজলগুলো নতুনভাবে দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ইসলামি সংগীত চ্যানেল- হলি টিউন।

ইউটিউবে চ্যানেলটি কার্যক্রম শুরু ২০১৬ সালে। এখন পর্যন্ত ৭৭০টির ভিডিও তারা আপলোড করেছে। তন্মধ্যে গুণগত মান, সংগীতায়োজন, হৃদকাড়া সুর, বিষয় নির্বাচন, সমকালীনতা ইত্যাদির কারণে দর্শকদের কাছে চার শতাধিক সংগীত ব্যাকভাবে সমাদৃত হয়েছে। হলি টিউনের সর্বমোট ভিডিও দেখা হয়েছে একশ এক কোটি ১৭ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি বার। তন্মধ্যে পঁচিশটির ভিডিও দর্শকরা দেখেছেন কোটি বার।

হলি টিউনের প্রধান নির্বাহী মুহাম্মদ বদরুজ্জামান। পরিচালক হিসেবে রয়েছেন সাঈদ আহমাদ। শিল্পী হিসেবে তারাও দেশব্যাপী তুমুল জনপ্রিয়। জাতীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন কলরব এবং বিভিন্ন ইসলামি সংগীত শিল্পীদের ইসলামি সংগীত ও নাশিদ প্রকাশ করে হলি টিউন। সংগীতের বিষয় নির্বাচনে সম-সাময়িক প্রসঙ্গকে প্রাধান্য দেওয়া বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাংলাভাষী দর্শকরা হলি টিউনের সংগীতগুলো শুনে থাকেন। তাদের সর্বশেষ গজল বেকারত্ব নিয়ে ‘আমার মামু খালু নাই।’ ২১ জানুয়ারি রাতে গজলটি আপলোড করা হয়েছে। দুই দিনে ভিডিওটি দেখা হয়েছে তিন লাখ পাঁচ হাজার ২১৮ বার। এর দ্বারাই চ্যানেলটির জনপ্রিয়তা সম্পর্কে কিছুটা অনুমান করা যায়। আপাতত প্রতি মাসে মানসম্পন্ন চারটি ভিডিও কনটেন্ট প্রচার করা হয় এই চ্যানেল থেকে।

ইসলামি ভাবধারার সংগীতকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় করে তুলতে হলি টিউন বিশাল ভূমিকা রাখছে। উদ্যোক্তাদের দাবি, ‘হলি টিউনের আগে এভাবে কেউ ইসলামি ধারার সংগীত নিয়ে কেউ কাজ করেনি।’ চ্যানলেটির আনুষ্ঠানিক পথ চলায় প্রথম ভিডিও ছিলো- মুহাম্মদ বদরুজ্জামানের একক কন্ঠের ‘চলার পথে’ সংগীতটি। এই চ্যানেলের সংগীতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ শিশু-কিশোরদের কন্ঠে গাওয়া ‘রমজানের ওই রোজার শেষে’ সংগীতটি। এর ভিউ প্রায় ৫ কোটি।

বাংলাদেশে ইসলামি সংগীত জগতে ১০ লাখ সাবস্ক্রাইবার নিয়ে প্রথম গোল্ডেন প্লে বাটন পাওয়া এই চ্যানেলটি পাঁচ বছরে পরিণত হয় পঞ্চাশ লাখের পরিবারে। ইতিমধ্যে চ্যানেলটি সব মহলে ব্যাপক সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়েছে। এই অর্জন সম্পর্কে অনুভূতি জানাতে গিয়ে হলিটিউনের সিইও মুহাম্মাদ বদরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা আল্লাহতায়ালার কাছে শোকরিয়া আদায় করছি এবং দর্শক শ্রোতাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তারা আমাদের কাজগুলো গ্রহণ করেছেন। ইসলামি সংগীত অঙ্গনে এ অর্জন সত্যিই বিরল। আমরা ধন্যবাদ জানাই হলি টিউনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে।’

হলি টিউনের জনপ্রিয় শিল্পীরা হলেন- সাঈদ আহমাদ, মুহাম্মদ বদরুজ্জামান, আবু রায়হান, আহমদ আব্দুল্লাহ, শিশু কারী আবু রায়হান, মাহফুজুল আলম, তাওহীদ জামিল, আহনাফ খালিদ, ফজলে এলাহী সাকিব, রিফাত রহমান, জাহিদুল ইসলাম শাওন ও শিশুশিল্পী হোজায়ফা প্রমুখ।

লিরিকিস্ট হিসেবে রয়েছেন, সাইফ সিরাজ, আহমদ আবদুল্লাহ, জাফর আহমদ রাবি, রাজিব হাসান, আমিনুল ইসলাম মামুন, তাওহিদ জামিল প্রমুখ।

অধিকাংশ গানের সুর করেছেন- সাঈদ আহমাদ, মুহাম্মদ বদরুজ্জামান ও আহমদ আব্দুল্লাহ।
সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে মাহফুজুল আলম ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন, ২০২১ সালের জুলাই মাসে তিনি ইন্তেকাল করেন। আলোচিত অনেক সংগীতের সাউন্ড ডিজাইন করেছেন তানজিম রেজা।