চলন্ত ট্রেনে সন্তান প্রসব: ট্রেনের নামে নজজাতকের নাম রাখা হলো মিতালী

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৫:১৪:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ এপ্রিল ২০২১
  • / ১৮৪ Time View
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি:
পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী ট্রেন দ্রুতযান এক্সপ্রেসে করে দিনাজপুর যাওয়ার পথে চলন্ত ট্রেনে মুক্তি পারভিন (২৫) নামে এক গর্ভবতী মা একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তাই ট্রেনের নামে নবজাতকের নাম রাখা হয়েছে মিতালী। বর্তমানে ঐ মাকে দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালে গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
.
রবিবার ৪ এপ্রিল সকালে ঠাকুরগাওয়ের পীরগঞ্জ স্টেশন থেকে দিনাজপুর যাওয়ার সময় দ্রুতযান এক্সপ্রেসে সন্তান প্রসব করেন মুক্তি পারভিন।
.
ট্রেনে এ নূতন অতিথির আগমনে আন্তঃনগর দ্রুতযান ট্রেনটি নির্ধারিত সময়ের ১৩ মিনিট পর দিনাজপুর স্টেশন ছেড়ে যায়। প্রসূতি মাতা মুক্তি পারভিন ও তার নবজাতক সন্তানকে বিনাভাড়ায় হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
.
হাসপাতালের পক্ষ থেকে প্রসূতি মা ও নবজাতক মেয়ে মিতালীকে এক গুচ্ছ ফুল, ডালাভর্তি ফল, বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ঔষধ ও নতুন জামা কাপড় উপহার দেয়া হয়েছে। মুক্তি পারভিন ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার ভোমরাদহ হাজীপাড়া গ্রামের মুনসুর আলীর স্ত্রী।
.
মুক্তির স্বামী মুনসুর আলী জানান, এটা তাদের ২য় সন্তান তাদের ২ বছর বয়সী আরও একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তিনি সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে দিনাজপুর মিশন হাসপাতালে চিকিৎসা করাতেন। আগামী ৮ এপ্রিল সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ ছিল। ৪ এপ্রিল রবিবার সকালে স্ত্রীকে নিয়ে ডাক্তার দেখানোর উদ্দেশ্যে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ স্টেশনে পঞ্চগড় থেকে ঢাকাগামী দ্রুতযান এক্সপ্রেসের শোভন ক্লাশের ঙ বগিতে করে দিনাজপুরে যাচ্ছিলেন মনসুর। পথে স্ত্রী মুক্তি পারভিনের প্রসব বেদনা শুরু হয়।
.
এ সময় ট্রেনে থাকা নারী যাত্রীদের সহায়তায় মুক্তি পারভিন নিরাপদে নরমালি সন্তান প্রসব করেন। তিনি আরো বলেন, কতক্ষণে ট্রেন এসে দিনাজপুর স্টেশনে পৌছালেও মায়ের গর্ভের ফুল পড়েনি। ফুল না পড়ার কারণে মুক্তি ও নবজাতককে ট্রেন থেকে নামানোর মতো কোন প্রস্তুতি ছিলনা।
.
এ সময় স্টেশন সুপারিন্টেনডেন্ট জিয়াউর রহমান সিদ্ধান্ত দেন, প্রসুতি মা ও নবজাতককে নিরাপদ না নেওয়া পর্যন্ত ট্রেন দিনাজপুর স্টেশন ছেড়ে যাবেনা। পরে জিআরপি পুলিশ, স্টেশন মাস্টার নারগিস বেগম এবং স্থানীয় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ধাত্রীর সহযোগিতায় মা ও নবজাতককে সযত্নে ট্রেন থেকে নামানো হয়। বিনা ভাড়ায় এম্বুলেন্স যোগে তাদেরকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে রেল কর্তৃপক্ষ। রেল কর্তৃপক্ষের কাছে তারা চিরঋণী বলে জানান মনসুর।
.
এ বিষয়ে স্টেশন মাস্টার জিয়াউর রহমান বলেন, আমরা সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে মা ও শিশুকে নিরাপদে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। হাসপাতালের ডাক্তার সোহেল রানা জানান প্রসূতি মা ও নবজাতক মিতালীকে গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তারা এখন সম্পুন্ন সুস্থ।

Please Share This Post in Your Social Media

চলন্ত ট্রেনে সন্তান প্রসব: ট্রেনের নামে নজজাতকের নাম রাখা হলো মিতালী

Update Time : ০৫:১৪:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ এপ্রিল ২০২১
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি:
পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী ট্রেন দ্রুতযান এক্সপ্রেসে করে দিনাজপুর যাওয়ার পথে চলন্ত ট্রেনে মুক্তি পারভিন (২৫) নামে এক গর্ভবতী মা একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তাই ট্রেনের নামে নবজাতকের নাম রাখা হয়েছে মিতালী। বর্তমানে ঐ মাকে দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালে গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
.
রবিবার ৪ এপ্রিল সকালে ঠাকুরগাওয়ের পীরগঞ্জ স্টেশন থেকে দিনাজপুর যাওয়ার সময় দ্রুতযান এক্সপ্রেসে সন্তান প্রসব করেন মুক্তি পারভিন।
.
ট্রেনে এ নূতন অতিথির আগমনে আন্তঃনগর দ্রুতযান ট্রেনটি নির্ধারিত সময়ের ১৩ মিনিট পর দিনাজপুর স্টেশন ছেড়ে যায়। প্রসূতি মাতা মুক্তি পারভিন ও তার নবজাতক সন্তানকে বিনাভাড়ায় হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
.
হাসপাতালের পক্ষ থেকে প্রসূতি মা ও নবজাতক মেয়ে মিতালীকে এক গুচ্ছ ফুল, ডালাভর্তি ফল, বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ঔষধ ও নতুন জামা কাপড় উপহার দেয়া হয়েছে। মুক্তি পারভিন ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার ভোমরাদহ হাজীপাড়া গ্রামের মুনসুর আলীর স্ত্রী।
.
মুক্তির স্বামী মুনসুর আলী জানান, এটা তাদের ২য় সন্তান তাদের ২ বছর বয়সী আরও একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তিনি সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে দিনাজপুর মিশন হাসপাতালে চিকিৎসা করাতেন। আগামী ৮ এপ্রিল সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ ছিল। ৪ এপ্রিল রবিবার সকালে স্ত্রীকে নিয়ে ডাক্তার দেখানোর উদ্দেশ্যে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ স্টেশনে পঞ্চগড় থেকে ঢাকাগামী দ্রুতযান এক্সপ্রেসের শোভন ক্লাশের ঙ বগিতে করে দিনাজপুরে যাচ্ছিলেন মনসুর। পথে স্ত্রী মুক্তি পারভিনের প্রসব বেদনা শুরু হয়।
.
এ সময় ট্রেনে থাকা নারী যাত্রীদের সহায়তায় মুক্তি পারভিন নিরাপদে নরমালি সন্তান প্রসব করেন। তিনি আরো বলেন, কতক্ষণে ট্রেন এসে দিনাজপুর স্টেশনে পৌছালেও মায়ের গর্ভের ফুল পড়েনি। ফুল না পড়ার কারণে মুক্তি ও নবজাতককে ট্রেন থেকে নামানোর মতো কোন প্রস্তুতি ছিলনা।
.
এ সময় স্টেশন সুপারিন্টেনডেন্ট জিয়াউর রহমান সিদ্ধান্ত দেন, প্রসুতি মা ও নবজাতককে নিরাপদ না নেওয়া পর্যন্ত ট্রেন দিনাজপুর স্টেশন ছেড়ে যাবেনা। পরে জিআরপি পুলিশ, স্টেশন মাস্টার নারগিস বেগম এবং স্থানীয় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ধাত্রীর সহযোগিতায় মা ও নবজাতককে সযত্নে ট্রেন থেকে নামানো হয়। বিনা ভাড়ায় এম্বুলেন্স যোগে তাদেরকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে রেল কর্তৃপক্ষ। রেল কর্তৃপক্ষের কাছে তারা চিরঋণী বলে জানান মনসুর।
.
এ বিষয়ে স্টেশন মাস্টার জিয়াউর রহমান বলেন, আমরা সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে মা ও শিশুকে নিরাপদে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। হাসপাতালের ডাক্তার সোহেল রানা জানান প্রসূতি মা ও নবজাতক মিতালীকে গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তারা এখন সম্পুন্ন সুস্থ।