কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতাকে ‘তুমি’ বলায় শিক্ষার্থীকে মারধর

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১২:২৬:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ মার্চ ২০২২
  • / ১৭৪ Time View

সাঈদ হাসান, কুবি:

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল শাখা ছাত্রলীগ নেতাকে চিনতে না পেরে তুমি বলে সম্বোধন করায় মারধরের শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জুনিয়র শিক্ষার্থী। সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ মারধরের ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২তম ব্যাচের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াকিল আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের সেলিম মিয়ার দোকানে চা পান করতে গেলে ১৩ তম ব্যাচের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আনিছুর রহমানকে পরিচয় জিজ্ঞেস করেন। পরিচয়ের একপর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতাকে চিনতে না পেরে ‘তুমি’ সম্বোধন করেন আনিছুর। এ ঘটনায় ওয়াকিল আহমেদ ও তার বন্ধুরা দোকানের পেছনে নিয়ে বেদড়ক মারধর করেন। মারধরের একপর্যায়ে ভুক্তভোগী কাকুতি-মিনতি করলে মারধরের মাত্রা আরও বাড়িয়ে চোখে আঘাত করেন ছাত্রলীগ নেতা ওয়াকিল। একপর্যায়ে তার চোখে আঘাত করলে সে কিছু দেখতে না পেয়ে চিৎকার করতে থাকে। ভুক্তভোগীর চিৎকার শুনে সহপাঠীরা এসে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে হাসাপাতালে ভর্তির নির্দেশনা দেন।

এবিষয়ে ভুক্তভোগী আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমাকে ওয়াকিল ভাই পরিচয় জিজ্ঞেস করলে আমি আমার পরিচয় দেই। পরে মিরাজ নামের একজনের নাম জিজ্ঞেস করলে, আমি বলি মিরাজ কি তোমার বন্ধু৷ এতে আমার সাথে কথা কাটাকাটি শুরু হয়৷ পরে আমাকে দোকানের পিছনে নিয়ে মারধর শুরু করে।’

অভিযুক্ত ওয়াকিল আহমেদ বলেন, ‘ঐ ছেলে সিগারেট খেয়ে আমার মুখের উপর ধোঁয়া ছেড়েছিল৷ আমি এর প্রতিবাদ করলে আমাকে ও আমার মা-বাবাকে গালি দেয়। এসময় তার সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারপরে কি হয়েছে আমি জানি না। সে হয়তো দৌড়ে পালাতে গিয়ে চোখে ব্যথা পেয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, একজন সাধারণ শিক্ষার্থীকে মারধর করা অন্যায়। বিষয়টি জেনে আমরা সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নিব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দীন বলেন, বিষয়টি আমি জানতে পেরেই ভুক্তভোগীকে হাসপাতালে দেখতে এসেছি। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ডাক্তার হাসপাতালে ভর্তির নির্দেশনা দিয়েছেন।আমরা আগামীকাল প্রক্টরিয়াল টিম বসে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এফ. এম. আবদুল মঈন বলেন, আমি প্রক্টরের সাথে কথা বলেছি। প্রক্টর রিপোর্ট দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

Please Share This Post in Your Social Media

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতাকে ‘তুমি’ বলায় শিক্ষার্থীকে মারধর

Update Time : ১২:২৬:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ মার্চ ২০২২

সাঈদ হাসান, কুবি:

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল শাখা ছাত্রলীগ নেতাকে চিনতে না পেরে তুমি বলে সম্বোধন করায় মারধরের শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জুনিয়র শিক্ষার্থী। সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ মারধরের ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২তম ব্যাচের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াকিল আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের সেলিম মিয়ার দোকানে চা পান করতে গেলে ১৩ তম ব্যাচের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আনিছুর রহমানকে পরিচয় জিজ্ঞেস করেন। পরিচয়ের একপর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতাকে চিনতে না পেরে ‘তুমি’ সম্বোধন করেন আনিছুর। এ ঘটনায় ওয়াকিল আহমেদ ও তার বন্ধুরা দোকানের পেছনে নিয়ে বেদড়ক মারধর করেন। মারধরের একপর্যায়ে ভুক্তভোগী কাকুতি-মিনতি করলে মারধরের মাত্রা আরও বাড়িয়ে চোখে আঘাত করেন ছাত্রলীগ নেতা ওয়াকিল। একপর্যায়ে তার চোখে আঘাত করলে সে কিছু দেখতে না পেয়ে চিৎকার করতে থাকে। ভুক্তভোগীর চিৎকার শুনে সহপাঠীরা এসে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে হাসাপাতালে ভর্তির নির্দেশনা দেন।

এবিষয়ে ভুক্তভোগী আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমাকে ওয়াকিল ভাই পরিচয় জিজ্ঞেস করলে আমি আমার পরিচয় দেই। পরে মিরাজ নামের একজনের নাম জিজ্ঞেস করলে, আমি বলি মিরাজ কি তোমার বন্ধু৷ এতে আমার সাথে কথা কাটাকাটি শুরু হয়৷ পরে আমাকে দোকানের পিছনে নিয়ে মারধর শুরু করে।’

অভিযুক্ত ওয়াকিল আহমেদ বলেন, ‘ঐ ছেলে সিগারেট খেয়ে আমার মুখের উপর ধোঁয়া ছেড়েছিল৷ আমি এর প্রতিবাদ করলে আমাকে ও আমার মা-বাবাকে গালি দেয়। এসময় তার সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারপরে কি হয়েছে আমি জানি না। সে হয়তো দৌড়ে পালাতে গিয়ে চোখে ব্যথা পেয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, একজন সাধারণ শিক্ষার্থীকে মারধর করা অন্যায়। বিষয়টি জেনে আমরা সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নিব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দীন বলেন, বিষয়টি আমি জানতে পেরেই ভুক্তভোগীকে হাসপাতালে দেখতে এসেছি। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ডাক্তার হাসপাতালে ভর্তির নির্দেশনা দিয়েছেন।আমরা আগামীকাল প্রক্টরিয়াল টিম বসে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এফ. এম. আবদুল মঈন বলেন, আমি প্রক্টরের সাথে কথা বলেছি। প্রক্টর রিপোর্ট দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।