ব্যাংকাস্যুরেন্সের মাধ্যমে গ্রাহক ওয়ানস্টপ বীমা সমাধান পাচ্ছেন
- আপডেটের সময়: ০৫:০৪:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
- / 45
ব্যাংকাস্যুরেন্স মডেলের মাধ্যমে প্রগতি লাইফ গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের নতুন বীমা পণ্য এনেছে? বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ও মার্কেট শেয়ারে আপনাদের অবস্থান কী?
বাংলাদেশে ব্যাংকাস্যুরেন্স সেবা প্রদানকারী প্রথম কম্পানিগুলোর মধ্যে একটি প্রগতি লাইফ। ব্যাংকের গ্রাহকরা আমাদের প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত সঞ্চয়ের মাধ্যমে ভবিষ্যতে নির্দিষ্ট অর্থ পান, কম প্রিমিয়ামে স্বাস্থ্য এবং মৃত্যুকালীন ঝুঁকির কাভারেজ, সন্তানের ভবিষ্যৎ শিক্ষার নিশ্চয়তা, অবসরকালীন আয়ের নিরাপত্তা, এককালীন বিনিয়োগে দীর্ঘমেয়াদি কাভারেজ এবং ব্যাংক লোনের বিপরীতে বীমা সুবিধা পান। প্রগতি লাইফ ব্যাংকাস্যুরেন্স পার্টনার হিসেবে ডিবিবিএল, ব্র্যাক এবং এমটিবিএলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রগতি লাইফ ব্যাংকাস্যুরেন্স চ্যানেলের মধ্যে স্বতন্ত্র পণ্যগুলোতে ৪০ শতাংশ অংশীদারি বজায় রেখেছে।
ব্যাংকাস্যুরেন্সের ফলে প্রচলিত বীমা ব্যবসা অর্থাৎ এজেন্ট ভিত্তিক যে সেবা সেটা কি ক্ষতিগ্রস্ত হবে? বীমা খাতের স্বচ্ছতা বাড়াতে এই মডেল কতটা ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন?
ব্যাংকাস্যুরেন্স প্রথাগত বীমা ব্যবসাকে ধ্বংস করবে না, বরং নতুন বিক্রয়পথ তৈরি করবে। তবে কম দক্ষ ও অনভিজ্ঞ এজেন্টদের জন্য চাকরির প্রতিযোগিতা কিছুটা বাড়বে। যারা আপডেটেড, প্রশিক্ষিত ও ব্যাংক-বীমা সহযোগিতায় কাজ শিখবে, তারা বরং বেশি লাভবান হবে। বীমা খাতে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করতে ব্যাংকাস্যুরেন্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে কয়েকটি কারণে।
তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে—প্রাতিষ্ঠানিক বিক্রয় চ্যানেল, তদারকি ও কমপ্লায়েন্স, গ্রাহকের আস্থা বৃদ্ধি, ডিজিটাল ট্রান্সপারেন্সি ও গ্র্রাহক শিক্ষার প্রসার।
ব্যাংকের মাধ্যমে বীমা করে গ্রাহকের সুবিধা কি? ব্যাংকাস্যুরেন্সের পণ্য ও সেবায় আপনার প্রতিষ্ঠানের বিশেষত্ব কী?
এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের সুবিধা হচ্ছে—এক জায়গায় সব সেবা পাচ্ছে, সহজ প্রিমিয়াম পরিশোধ ব্যবস্থা, বিশ্বস্ত ও স্বচ্ছ লেনদেন, সহজ দাবি নিষ্পত্তি, পেশাদার পরামর্শ সুবিধা, নতুন পণ্য ও অফারের সুবিধা এবং ডিজিটাল সুবিধা ইত্যাদি। প্রগতি লাইফের ব্যাংকাস্যুরেন্স বিশেষত্ব হচ্ছে—গ্রাহকের জন্য সহজ ও সুবিধাজনক অ্যাকসেস, বৈচিত্র্যময় পণ্য, ডিজিটাল সুবিধা, আস্থা ও নির্ভরযোগ্যতা, দ্রুত প্রক্রিয়া এবং নির্ভরযোগ্য ক্লেইম সাপোর্টসহ একটি ‘ওয়ান-স্টপ ইনস্যুরেন্স সমাধান’।
ব্যাকাস্যুাসুরেন্স ব্যবসায় প্রগতি লাইফ ইনস্যুরেন্স নিঃসন্দেহে শীর্ষস্থানীয়।
কারণ শক্তিশালী ব্যাংক পার্টনারশিপ, পণ্যের বৈচিত্র্য, ব্র্যান্ডের বিশ্বাসযোগ্যতা, মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি এবং গ্রাহকবান্ধব পণ্যের কারণে আমরা প্রতিযোগী বীমা কম্পানিগুলোর তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে।
বীমা খাতে গ্রাহক সচেতনতা বাড়ানোর জন্য আপনার কম্পানি কী ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে?
আমাদের কম্পানির ব্যাংকাস্যুরেন্স টিম গ্রাহক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আস্থা অর্জনের জন্য নিম্নলিখিত উদ্যোগগুলো গ্রহণ করছে : এডুকেশনাল ওয়ার্কশপ ও সেমিনার, ডিজিটাল লার্নিং প্ল্যাটফর্ম, পার্সোনালাইজড কনসালটেশন, সহজবোধ্য কমিউনিকেশন মেটেরিয়াল, ট্রান্সপারেন্সি মেইনটেন, এক্সপার্ট টিম গঠন, কাস্টমার সাকসেস স্টোরি শেয়ার, পোস্ট-সেল সার্ভিস এবং টেকনোলজি ইউটিলাইজেশন। এই উদ্যোগগুলোর মাধ্যমে ব্যাংকাস্যুরেন্স টিম গ্রাহকদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি বিশ্বাস গড়ে তুলতে সক্ষম হচ্ছে, যা শুধু বিক্রয় বৃদ্ধিই নয়, গ্রাহক ধরে রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
আপনার কম্পানি ডিজিটাইজেশন এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনকে কিভাবে কাজে লাগাচ্ছে?
আমাদের কম্পানি ডিজিটাল প্রযুক্তি যেভাবে কাজে লাগচ্ছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে—মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ও ওয়েব পোর্টাল তৈরি, ডিজিটাল পলিসি প্রসেসিং, অটোমেটেড ক্লেইম প্রসেসিং, চ্যাটবট ও ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট, সাইবার সিকিউরিটি ও ডেটা প্রোটেকশন এবং ব্যাংকাস্যুরেন্স ও পার্টনার ইন্টিগ্রেশন ইত্যাদি। প্রগতি লাইফ প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের মাধ্যমে গ্রাহক অভিজ্ঞতা উন্নত করছে, প্রক্রিয়াকরণ দ্রুত করছে, ঝুঁকি কমাচ্ছে এবং ব্যাবসায়িক সিদ্ধান্তকে আরো তথ্যভিত্তিক করছে।
বাংলাদেশে বীমা খাতে নীতিমালা ও নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত চ্যালেঞ্জগুলো কী এবং সেগুলো মোকাবেলা করতে আপনার কম্পানির পরিকল্পনা কী?
বীমা খাতের নীতিমালা ও নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে—সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি, প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলানো, নৈতিকতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা, বিনিয়োগের ঝুঁকি ইত্যাদি। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমরা নীতিমালা মানা ও নিয়ন্ত্রণ জোরদার করছি, গ্রাহক সচেতনতা ও এডুকেশন, ডিজিটাইজেশন ও প্রযুক্তি উন্নয়ন, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও প্রশিক্ষণ, কাস্টমাইজড প্রোডাক্ট ও অংশীদারি ইত্যাদি কাজগুলো করছি।
আপনার কম্পানি গ্রাহকের অভিযোগ বা অনুরোধ কিভাবে দ্রুত সমাধান করছে?
প্রগতি লাইফ ইনস্যুরেন্স গ্রাহক সন্তুষ্টি ও সেবার মানোন্নয়নকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে। গ্রাহকের অভিযোগ দ্রুত সমাধান ও সেবা উন্নয়নের জন্য প্রতিষ্ঠানটি কয়েকটি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তার মধ্যে রয়েছে—গ্রাহকসেবা সেল, কেন্দ্রীয়ভাবে অভিযোগ তালিকাভুক্তকরণ এবং ট্র্যাকিং ও মনিটরিং। গ্রাহকের অভিযোগ নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সমাধান করার জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। যেমন, সাধারণ অভিযোগ তিন কার্যদিবসের মধ্যে, জটিল অভিযোগ সাত কার্যদিবসের মধ্যে সমাধান করা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সমাধান না হলে বিষয়টি ধাপে ধাপে উচ্চ পর্যায়ে পাঠানো হয়।





























