কাফনের কাপড় পরে বেড়িবাঁধের দাবি

  • Update Time : ০৩:২৮:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মে ২০২১
  • / 192

দীর্ঘদিন ধরে টেকসই বেড়িবাঁধের দাবি জানিয়ে আসলেও বরাবরই উপেক্ষিত থেকেছে সাতক্ষীরা শ্যামনগরের মানুষের সে দাবি।

শুক্রবার (২৮ মে) সকাল ১০টায় শ্যামনগরের পাতাখালি পয়েন্টের ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধের ওপর কাফনের কাপড় পরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ম্যানগ্রোভ স্টুডেন্ট সোসাইটির সদস্যরা।

জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে যায় সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনির উপকূল। নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় ৫০টিরও বেশি গ্রাম। বিধ্বস্ত হয় ঘরবাড়ি। ভেসে যায় হাজার কোটি টাকার মৎস্য ও কৃষিসম্পদ। ভেঙে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা।

বছর না ঘুরতেই ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে উপকূলীয় শ্যামনগর ও আশাশুনির বেশ কিছু এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে আবারো ঢুকেছে পানি। এতে ফসলের ক্ষতি হয়েছে বেশি। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। ঘরবাড়ি-রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে পানিতে।

এ বিক্ষোভে অংশ নেয়া উপকূলবাসীরা ‘ভাসতে চাই না, বাঁচতে চাই। একবারই মরবো, বারবার নয়’, ‘আমাদের জীবনের কি কোন মূল্য নেই?’, ‘জলবায়ু তহবিল কাদের জন্য?’, ‘উপকূলের কান্না কী চিরদিনের?’, ‘কর্তৃপক্ষ মরে গেছে, আমরা বেঁচে করবো কি? – লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ম্যানগ্রোভ স্টুডেন্ট সোসাইটির সভাপতি আরিফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শাহিন বিল্লাহ, তরিকুল ইসলাম, মুহতারাম বিল্লাহ, মুতাসিম বিল্লাহ ও হাসানুল বান্না প্রমুখ।

প্রতীকী লাশ হয়ে প্রতিবাদ জানান, মাসুম বিল্লাহ, ইয়াসির আরাফাত, সালাউদ্দিন, মাহি ও সালাউদ্দিন জাফরী।

বক্তারা বলেন, বিগত ১২ বছর ধরে উপকূলের মানুষ ভাসছে। প্রতিবারই এমন পরিস্থিতিতে কর্তাব্যক্তিরা শুধু আশ্বাসের কিছু মুখস্থ বুলি বলে যান। আমরা টেকসই বেড়িবাঁধসহ এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাই। যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে এ অঞ্চল পরিত্যক্ত ঘোষণা করে এলাকার মানুষকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত করার দাবি জানাই।

প্রতিবাদে অংশ নেওয়া ভুক্তভোগী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আম্ফানে ঘরবাড়ি সব ভেঙে গেছে। গত চার-পাঁচ বছরে পাঁচবার ঘর বানাতে হলো। মাছের ঘের ডুবে সর্বশান্ত হয়ে গেছি। একটু ঘুরে না দাঁড়াতেই আবার শুইয়ে দিয়েছে আমাদের। আর যাওয়ারও জায়গা নেই আমাদের। নেই কোনো বলার জায়গাও’।

Please Share This Post in Your Social Media


কাফনের কাপড় পরে বেড়িবাঁধের দাবি

Update Time : ০৩:২৮:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মে ২০২১

দীর্ঘদিন ধরে টেকসই বেড়িবাঁধের দাবি জানিয়ে আসলেও বরাবরই উপেক্ষিত থেকেছে সাতক্ষীরা শ্যামনগরের মানুষের সে দাবি।

শুক্রবার (২৮ মে) সকাল ১০টায় শ্যামনগরের পাতাখালি পয়েন্টের ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধের ওপর কাফনের কাপড় পরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ম্যানগ্রোভ স্টুডেন্ট সোসাইটির সদস্যরা।

জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে যায় সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনির উপকূল। নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় ৫০টিরও বেশি গ্রাম। বিধ্বস্ত হয় ঘরবাড়ি। ভেসে যায় হাজার কোটি টাকার মৎস্য ও কৃষিসম্পদ। ভেঙে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা।

বছর না ঘুরতেই ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে উপকূলীয় শ্যামনগর ও আশাশুনির বেশ কিছু এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে আবারো ঢুকেছে পানি। এতে ফসলের ক্ষতি হয়েছে বেশি। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। ঘরবাড়ি-রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে পানিতে।

এ বিক্ষোভে অংশ নেয়া উপকূলবাসীরা ‘ভাসতে চাই না, বাঁচতে চাই। একবারই মরবো, বারবার নয়’, ‘আমাদের জীবনের কি কোন মূল্য নেই?’, ‘জলবায়ু তহবিল কাদের জন্য?’, ‘উপকূলের কান্না কী চিরদিনের?’, ‘কর্তৃপক্ষ মরে গেছে, আমরা বেঁচে করবো কি? – লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ম্যানগ্রোভ স্টুডেন্ট সোসাইটির সভাপতি আরিফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শাহিন বিল্লাহ, তরিকুল ইসলাম, মুহতারাম বিল্লাহ, মুতাসিম বিল্লাহ ও হাসানুল বান্না প্রমুখ।

প্রতীকী লাশ হয়ে প্রতিবাদ জানান, মাসুম বিল্লাহ, ইয়াসির আরাফাত, সালাউদ্দিন, মাহি ও সালাউদ্দিন জাফরী।

বক্তারা বলেন, বিগত ১২ বছর ধরে উপকূলের মানুষ ভাসছে। প্রতিবারই এমন পরিস্থিতিতে কর্তাব্যক্তিরা শুধু আশ্বাসের কিছু মুখস্থ বুলি বলে যান। আমরা টেকসই বেড়িবাঁধসহ এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাই। যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে এ অঞ্চল পরিত্যক্ত ঘোষণা করে এলাকার মানুষকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত করার দাবি জানাই।

প্রতিবাদে অংশ নেওয়া ভুক্তভোগী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আম্ফানে ঘরবাড়ি সব ভেঙে গেছে। গত চার-পাঁচ বছরে পাঁচবার ঘর বানাতে হলো। মাছের ঘের ডুবে সর্বশান্ত হয়ে গেছি। একটু ঘুরে না দাঁড়াতেই আবার শুইয়ে দিয়েছে আমাদের। আর যাওয়ারও জায়গা নেই আমাদের। নেই কোনো বলার জায়গাও’।