কক্সবাজারে চাকুরির চাপে বিদ্যালয়ের দপ্তরীর আত্মহত্যার অভিযোগ

  • Update Time : ০৮:২২:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪
  • / 1

এরফান হোছাইন, চট্টগ্রাম ব্যুরো :

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলাধীন খারাংখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী নুরুল আলম (৪০) আত্মহত্যার মাধ্যমে জীবন শেষ করেছেন। মৃত্যুর আগে তিনি একটি চিরকুট লিখে রেখে যান, যেখানে তিনি স্পষ্ট করে উল্লেখ করেছেন যে, তার মৃত্যুর জন্য তার চাকরিই দায়ী।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকালে স্কুলে ঘটেছে এই রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা।

এই ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে এবং শিক্ষক সমাজসহ বিভিন্ন মহলে গভীর শোকের ছায়া বিস্তার করেছে।

টেকনাফের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের খারাংখালীর নাছর পাড়া এলাকার বাসিন্দা নুরুল আলম দীর্ঘদিন ধরে চাকরির চাপে ভুগছিলেন বলে পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। অতিরিক্ত কাজের বোঝা, স্কুলের দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজের চাপ এবং পারিবারিক জীবনের জটিলতার কারণে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। এই চাপ সহ্য করতে না পেরে তিনি চূড়ান্তভাবে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।

নুরুল আলমের পরিবারের দাবি, তিনি প্রায়ই বলতেন যে, দপ্তরীর চাকরির কারণে তার মানসিক প্রশান্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করা তার জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে। পরিবার সরাসরি স্কুলের চাকরির চাপকেই তার মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছে।
স্থানীয়রা জানান, নুরুল একজন শান্তস্বভাবের ও সহজ-সরল মানুষ ছিলেন।

একটি চিরকুটে লেখা শেষ কথা:
মৃত্যুর আগে লিখিত চিরকুটে নুরুল আলম স্পষ্ট করে উল্লেখ করেছেন যে, তার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়, চাকরিই তার জন্য দায়ী। এই চিরকুটে লেখা শেষ কথাটি শিক্ষক সমাজসহ বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কিভাবে একটি চাকরি একজন মানুষকে এতটা হতাশ করে তুলতে পারে?

কক্সবাজারের খারাংখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বেলাল উদ্দিন জানিয়েছেন, সোমবার সকালে স্কুলে এসে দপ্তরী নুরুল আলমকে মৃত অবস্থায় পান তিনি। তিনি বলেন, “কেন সে আত্মহত্যা করেছে তা আমি জানি না।” ঘটনাটি জানাজানি হলে টেকনাফ মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে।

টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানিয়েছেন, “খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেছি। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।”

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


কক্সবাজারে চাকুরির চাপে বিদ্যালয়ের দপ্তরীর আত্মহত্যার অভিযোগ

Update Time : ০৮:২২:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪

এরফান হোছাইন, চট্টগ্রাম ব্যুরো :

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলাধীন খারাংখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী নুরুল আলম (৪০) আত্মহত্যার মাধ্যমে জীবন শেষ করেছেন। মৃত্যুর আগে তিনি একটি চিরকুট লিখে রেখে যান, যেখানে তিনি স্পষ্ট করে উল্লেখ করেছেন যে, তার মৃত্যুর জন্য তার চাকরিই দায়ী।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকালে স্কুলে ঘটেছে এই রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা।

এই ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে এবং শিক্ষক সমাজসহ বিভিন্ন মহলে গভীর শোকের ছায়া বিস্তার করেছে।

টেকনাফের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের খারাংখালীর নাছর পাড়া এলাকার বাসিন্দা নুরুল আলম দীর্ঘদিন ধরে চাকরির চাপে ভুগছিলেন বলে পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। অতিরিক্ত কাজের বোঝা, স্কুলের দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজের চাপ এবং পারিবারিক জীবনের জটিলতার কারণে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। এই চাপ সহ্য করতে না পেরে তিনি চূড়ান্তভাবে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।

নুরুল আলমের পরিবারের দাবি, তিনি প্রায়ই বলতেন যে, দপ্তরীর চাকরির কারণে তার মানসিক প্রশান্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করা তার জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে। পরিবার সরাসরি স্কুলের চাকরির চাপকেই তার মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছে।
স্থানীয়রা জানান, নুরুল একজন শান্তস্বভাবের ও সহজ-সরল মানুষ ছিলেন।

একটি চিরকুটে লেখা শেষ কথা:
মৃত্যুর আগে লিখিত চিরকুটে নুরুল আলম স্পষ্ট করে উল্লেখ করেছেন যে, তার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়, চাকরিই তার জন্য দায়ী। এই চিরকুটে লেখা শেষ কথাটি শিক্ষক সমাজসহ বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কিভাবে একটি চাকরি একজন মানুষকে এতটা হতাশ করে তুলতে পারে?

কক্সবাজারের খারাংখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বেলাল উদ্দিন জানিয়েছেন, সোমবার সকালে স্কুলে এসে দপ্তরী নুরুল আলমকে মৃত অবস্থায় পান তিনি। তিনি বলেন, “কেন সে আত্মহত্যা করেছে তা আমি জানি না।” ঘটনাটি জানাজানি হলে টেকনাফ মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে।

টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানিয়েছেন, “খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেছি। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।”