বেগুনি জাতের বাঁধাকপি চাষে বেশি লাভ, অন্যান্য কৃষকদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ

  • Update Time : ০৪:৪০:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৪
  • / 46

হুমায়ুন কবির,রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ শীতের অন্যতম ফসল বাঁধাকপি। ঠান্ডা পড়তে না পড়তেই বাঁধাকপি বাজারে চলে আসে। বাঙালিদের অত্যন্ত প্রিয় এই সবজি ভীষণই পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। আমরা সবাই বাঁধাকপির স্বাদ আস্বাদন করলেও, ক’জন আছেন যারা বেগুনি রঙের বাঁধাকপি চেখে দেখেছেন? সেই বেগুনি বা রঙিন জাতের বাঁধাকপি ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে প্রথম বারের মতো চাষ শুরু হওয়ায় উপজেলা জুড়ে কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। রাণীশংকৈল কৃষি অফিস সূতে জানা গেছে,’দিনাজপুর অঞ্চলে টেকসই উন্নয়ন প্রকল্পের অধিনে’ রাণীশংকৈল কৃষি অধিদপ্তর সার্বিক তত্বাবধানের মাধ্যমে প্রথম বারের মতো ৬ জন কৃষক ১ একর জমিতে বেগুনি জাতের বাঁধাকপি রুবি -কিং চাষ করে অন্যান্য কৃষকদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করেছেন। উপজেলা জওগাঁও গ্রামের আলমগীর ২০শতাংশ, হোসেনগাঁও গ্রামের আইনুল হক ২০ শতাংশ, ভান্ডারা গ্রামের সোহরাব হোসেন ২০ শতাংশ, উত্তরগাঁও গ্রামের কৃষক সেলিম রেজা ২০ শতাংশ, লেহেম্বা এলাকার আসাদুজ্জামান আসাদ ১০ শতাংশ ও পদমপুর গ্রামের কৃষক ইনসান আলী ১৫ শতাংশ জমিতে বেগুনি জাতের বাঁধাকপি রুবি -কিং চাষ করেছেন। এ কপি চাষে দ্বিগুণের বেশি লাভ আশা করছেন এসব কৃষকরা। সাধারণ বাঁধা কপির তুলনায় দাম ও বাজারে চাহিদা বেশি হওয়ায় তাই তো অন্যান্য কৃষকদের মাঝে এ কপি চাষে ব্যাপক আগ্রহ দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) উপজেলার ৬ টি কপি চাষের স্পষ্ট ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে কৃষক আইনুল হক জানান, আমি ২০ শতক জমিতে চাষ করেছি, কৃষি অফিসের পরামর্শে বেগুনি জাতের ২ হাজার ৪০০ বাঁধাকপির চারা লাগিয়েছিলাম। জমিতে জৈব সার ও জৈব বালাইনাশক সার ব্যবহার করেছি। এই বাঁধাকপি
গুলো ৮০-৯০ দিনের মধ্যে পরিপক্ত হয়ে বিক্রির উপযোগী হয়ে ওঠে। এ কপি দেখতে যেমন বেগুনি রঙের ,সুন্দর ও স্বাদে হালকা মিষ্টি। সালাত হিসেবেও খাওয়া যায়।
আমি এ যাবৎ ২৪ হাজার টাকার মতো বিক্রি করেছি, আরো হাজার দশকের মতো বিক্রি করতে পারবো। তিনি আরো বলেন,আমার দেখাদেখি অন্য কৃষকরাও এ বাঁধাকপি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, আমি ২০ শতক জমিতে চাষ করেছি। গাছে- পাতে বেশ বড় ও সতেজ হয়েছে। প্রতি পিস কপি ২০- ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নতুন সবজি, এ বেগুনি রঙের বাঁধাকপি ক্ষেত দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে আসছে এবং দাম ও বাজারে চাহিদার জন্য অনেকে আগামী বছর চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করছে। আমার মোট খরচ হয়েছে ৭ থেকে ৯ হাজার টাকা। আশা করি ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকার কপি বিক্রি করতে পারবো ইনশাল্লাহ। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুল ইসলাম বলেন, প্রথমবারের মতো ৬ জন কৃষক এখানে বেগুনি জাতের বাধাকপি চাষ শুরু করে। তাই আমরা কৃষি অফিস কর্তৃক চারা রোপণ থেকে শুরু করে ফসলের পরিচর্যা ও উৎপাদন পর্যন্ত সার্বক্ষণিক পরামর্শ ও যোগাযোগ রেখেছি।
রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম বলেন,
প্রথম বারের মতো এবছর আমাদের উপজেলায় ১ একর জমিতে বেগুনি জাতের বাঁধাকপি রুবি -কিং চাষ হয়েছে।
এই বাঁধা কপি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পুষ্টি গুণ সমৃদ্ধ। এটিতে রঙিন ও সবুজ শাকসবজির তুলনায় ভিটামিন ও আয়রন বেশি থাকে, চর্বি নেই,পাশাপাশি আলসার ও ক্যানসার প্রতিরোধে খুবই কার্যকরী। স্বাদে হালকা মিষ্টি। সালাত হিসেবেও খাওয়ার উপযোগী। ফলে এটি খাওয়া মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী।এ বছরে আবাদ, চাহিদা ও লাভের পরিমাণ দেখে কৃষকদের আগ্রহ অনুযায়ী আগামী বছর চাষের পরিমাণ অনেক বাড়বে বলে তিনি আশা করছেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


বেগুনি জাতের বাঁধাকপি চাষে বেশি লাভ, অন্যান্য কৃষকদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ

Update Time : ০৪:৪০:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৪

হুমায়ুন কবির,রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ শীতের অন্যতম ফসল বাঁধাকপি। ঠান্ডা পড়তে না পড়তেই বাঁধাকপি বাজারে চলে আসে। বাঙালিদের অত্যন্ত প্রিয় এই সবজি ভীষণই পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। আমরা সবাই বাঁধাকপির স্বাদ আস্বাদন করলেও, ক’জন আছেন যারা বেগুনি রঙের বাঁধাকপি চেখে দেখেছেন? সেই বেগুনি বা রঙিন জাতের বাঁধাকপি ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে প্রথম বারের মতো চাষ শুরু হওয়ায় উপজেলা জুড়ে কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। রাণীশংকৈল কৃষি অফিস সূতে জানা গেছে,’দিনাজপুর অঞ্চলে টেকসই উন্নয়ন প্রকল্পের অধিনে’ রাণীশংকৈল কৃষি অধিদপ্তর সার্বিক তত্বাবধানের মাধ্যমে প্রথম বারের মতো ৬ জন কৃষক ১ একর জমিতে বেগুনি জাতের বাঁধাকপি রুবি -কিং চাষ করে অন্যান্য কৃষকদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করেছেন। উপজেলা জওগাঁও গ্রামের আলমগীর ২০শতাংশ, হোসেনগাঁও গ্রামের আইনুল হক ২০ শতাংশ, ভান্ডারা গ্রামের সোহরাব হোসেন ২০ শতাংশ, উত্তরগাঁও গ্রামের কৃষক সেলিম রেজা ২০ শতাংশ, লেহেম্বা এলাকার আসাদুজ্জামান আসাদ ১০ শতাংশ ও পদমপুর গ্রামের কৃষক ইনসান আলী ১৫ শতাংশ জমিতে বেগুনি জাতের বাঁধাকপি রুবি -কিং চাষ করেছেন। এ কপি চাষে দ্বিগুণের বেশি লাভ আশা করছেন এসব কৃষকরা। সাধারণ বাঁধা কপির তুলনায় দাম ও বাজারে চাহিদা বেশি হওয়ায় তাই তো অন্যান্য কৃষকদের মাঝে এ কপি চাষে ব্যাপক আগ্রহ দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) উপজেলার ৬ টি কপি চাষের স্পষ্ট ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে কৃষক আইনুল হক জানান, আমি ২০ শতক জমিতে চাষ করেছি, কৃষি অফিসের পরামর্শে বেগুনি জাতের ২ হাজার ৪০০ বাঁধাকপির চারা লাগিয়েছিলাম। জমিতে জৈব সার ও জৈব বালাইনাশক সার ব্যবহার করেছি। এই বাঁধাকপি
গুলো ৮০-৯০ দিনের মধ্যে পরিপক্ত হয়ে বিক্রির উপযোগী হয়ে ওঠে। এ কপি দেখতে যেমন বেগুনি রঙের ,সুন্দর ও স্বাদে হালকা মিষ্টি। সালাত হিসেবেও খাওয়া যায়।
আমি এ যাবৎ ২৪ হাজার টাকার মতো বিক্রি করেছি, আরো হাজার দশকের মতো বিক্রি করতে পারবো। তিনি আরো বলেন,আমার দেখাদেখি অন্য কৃষকরাও এ বাঁধাকপি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, আমি ২০ শতক জমিতে চাষ করেছি। গাছে- পাতে বেশ বড় ও সতেজ হয়েছে। প্রতি পিস কপি ২০- ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নতুন সবজি, এ বেগুনি রঙের বাঁধাকপি ক্ষেত দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে আসছে এবং দাম ও বাজারে চাহিদার জন্য অনেকে আগামী বছর চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করছে। আমার মোট খরচ হয়েছে ৭ থেকে ৯ হাজার টাকা। আশা করি ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকার কপি বিক্রি করতে পারবো ইনশাল্লাহ। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুল ইসলাম বলেন, প্রথমবারের মতো ৬ জন কৃষক এখানে বেগুনি জাতের বাধাকপি চাষ শুরু করে। তাই আমরা কৃষি অফিস কর্তৃক চারা রোপণ থেকে শুরু করে ফসলের পরিচর্যা ও উৎপাদন পর্যন্ত সার্বক্ষণিক পরামর্শ ও যোগাযোগ রেখেছি।
রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম বলেন,
প্রথম বারের মতো এবছর আমাদের উপজেলায় ১ একর জমিতে বেগুনি জাতের বাঁধাকপি রুবি -কিং চাষ হয়েছে।
এই বাঁধা কপি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পুষ্টি গুণ সমৃদ্ধ। এটিতে রঙিন ও সবুজ শাকসবজির তুলনায় ভিটামিন ও আয়রন বেশি থাকে, চর্বি নেই,পাশাপাশি আলসার ও ক্যানসার প্রতিরোধে খুবই কার্যকরী। স্বাদে হালকা মিষ্টি। সালাত হিসেবেও খাওয়ার উপযোগী। ফলে এটি খাওয়া মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী।এ বছরে আবাদ, চাহিদা ও লাভের পরিমাণ দেখে কৃষকদের আগ্রহ অনুযায়ী আগামী বছর চাষের পরিমাণ অনেক বাড়বে বলে তিনি আশা করছেন।