‘জামায়াত ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা জাতি গ্রহণ করেনি’

  • Update Time : ১০:৩০:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৪
  • / 25

জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নেয়ার জন্য হঠাৎ করে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দেয়া হলো। জাতি এটা গ্রহণ করেনি। সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের আমির এ কথা বলেন।

জামায়াতের নিবন্ধন ফেরানো বা নিষিদ্ধ করার ঘোষণা বাতিলের বিষয়ে বৈঠকে কথা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমরা এখানে দলীয় দাবি–দাওয়া নিয়ে আসিনি। আমরা এসেছি জাতীয় স্বার্থের বিষয়ে আলোচনা করতে। এ জন্য দলীয় বিষয় তো আছে, এগুলো থাকবে। বড় কথা হচ্ছে, কেউ আমাদের নিষিদ্ধ করে দিল বলে আমরা নিষিদ্ধ হয়ে গেলাম? এটা আমরা মনে করি না।’

শফিকুর রহমান বলেন, শেষের দিকে সরকার এমন অনেক ভুল কাজ করেছে, যেটার মাশুল এই দেশবাসীকে দিতে হয়েছে, সরকারকে তো দিতেই হবে। এর বোঝা দেশবাসীকে টানতে হবে। এটা সে রকমই একটা বিষয়।

জামায়াতের আমির আরও বলেন, ‘আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নেয়ার জন্য হঠাৎ করে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দেয়া হলো। এটার মতলব জাতি বোঝে। জাতি এটা গ্রহণ করেনি, গ্রহণ করেনি বলেই রাষ্ট্রের সব গুরুত্বপূর্ণ স্তরে এখন জামায়াতে ইসলামী সহযোগিতা করে যাচ্ছে, রাষ্ট্রও আমাদের অনুরোধ করছে। আমরা এটাকে যথেষ্ট বৈধতা মনে করি এবং এর চেয়ে বড় বৈধতা আমাদের প্রয়োজন নেই।’

সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা প্রসঙ্গে আরেক প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের আমির ঘটনাগুলোকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘এটা সত্য, আমাদের এখানে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী যারা আছেন, তাদের ওপর বিভিন্ন জায়গায় কিছু হামলা হয়েছে। হামলাটা ধর্মীয় কারণে হয়েছে, নাকি রাজনৈতিক কারণে হয়েছে, এটা খুঁজে বের করতে হবে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন সংকটে, ধর্মীয় সংকটে যারা আছেন, তারাই বলেছেন, সব হামলাকে ধর্মীয় হামলা বলে চালিয়ে দেয়া যাবে না।’

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অনেকেই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত, সেটা উল্লেখ করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘এখানে কেউ রাজনীতি করতেন, তিনি রাজনীতিতে থেকে হয়তো বড় কোনো অপরাধ করেছেন। ক্ষোভের জায়গা থেকে হয়তো তার ওপর প্রতিশোধ নিয়েছে, এটাকে আমরা ধর্মীয়ভাবে নেব কেন?’ তিনি বলেন, যেভাবে বাংলাদেশের ব্যাপারে পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে, তা বাংলাদেশের পরিবেশ নয়, এটা অসত্য।

শফিকুর রহমান আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নাম নিয়েও ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপসম্পাদকীয় লিখছেন। কিন্তু সেটা (পরিস্থিতি) কোথায়? তিনি বলেন, ‘যাদের বিরুদ্ধে আপনারা অভিযোগ দিচ্ছেন, তারা তো লাঠি হাতে মন্দির পাহারা দিচ্ছেন। যারা মন্দির পাহারা দিচ্ছেন, তাদের কেন আপনারা অহেতুক অভিযোগ দিচ্ছেন? বিবিসির বিশ্লেষণ আপনারা দেখেছেন।’

নির্বাচন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে জামায়াতের আমির বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা হয়নি। তিনি যোগ করেন, ওনারা কেবল বসলেন। মাত্র চারটা দিন হলো। আমরা ওনাদের দেখতে চাই যে ওনারা কীভাবে জাতিকে নিয়ে এগোতে চাচ্ছেন। সমস্যাগুলোর আশু সমাধান কীভাবে করেন। এগুলো যৌক্তিক সময়ে সমাধান হবে বলে আমরা আশাবাদী। দেশ আমাদের সবার। দেশ বেঁচে থাকলে, ভালো থাকলে, আমরা সবাই বেঁচে থাকব এবং ভালো থাকব।’

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


‘জামায়াত ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা জাতি গ্রহণ করেনি’

Update Time : ১০:৩০:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৪

জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নেয়ার জন্য হঠাৎ করে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দেয়া হলো। জাতি এটা গ্রহণ করেনি। সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের আমির এ কথা বলেন।

জামায়াতের নিবন্ধন ফেরানো বা নিষিদ্ধ করার ঘোষণা বাতিলের বিষয়ে বৈঠকে কথা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমরা এখানে দলীয় দাবি–দাওয়া নিয়ে আসিনি। আমরা এসেছি জাতীয় স্বার্থের বিষয়ে আলোচনা করতে। এ জন্য দলীয় বিষয় তো আছে, এগুলো থাকবে। বড় কথা হচ্ছে, কেউ আমাদের নিষিদ্ধ করে দিল বলে আমরা নিষিদ্ধ হয়ে গেলাম? এটা আমরা মনে করি না।’

শফিকুর রহমান বলেন, শেষের দিকে সরকার এমন অনেক ভুল কাজ করেছে, যেটার মাশুল এই দেশবাসীকে দিতে হয়েছে, সরকারকে তো দিতেই হবে। এর বোঝা দেশবাসীকে টানতে হবে। এটা সে রকমই একটা বিষয়।

জামায়াতের আমির আরও বলেন, ‘আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নেয়ার জন্য হঠাৎ করে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দেয়া হলো। এটার মতলব জাতি বোঝে। জাতি এটা গ্রহণ করেনি, গ্রহণ করেনি বলেই রাষ্ট্রের সব গুরুত্বপূর্ণ স্তরে এখন জামায়াতে ইসলামী সহযোগিতা করে যাচ্ছে, রাষ্ট্রও আমাদের অনুরোধ করছে। আমরা এটাকে যথেষ্ট বৈধতা মনে করি এবং এর চেয়ে বড় বৈধতা আমাদের প্রয়োজন নেই।’

সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা প্রসঙ্গে আরেক প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের আমির ঘটনাগুলোকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘এটা সত্য, আমাদের এখানে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী যারা আছেন, তাদের ওপর বিভিন্ন জায়গায় কিছু হামলা হয়েছে। হামলাটা ধর্মীয় কারণে হয়েছে, নাকি রাজনৈতিক কারণে হয়েছে, এটা খুঁজে বের করতে হবে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন সংকটে, ধর্মীয় সংকটে যারা আছেন, তারাই বলেছেন, সব হামলাকে ধর্মীয় হামলা বলে চালিয়ে দেয়া যাবে না।’

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অনেকেই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত, সেটা উল্লেখ করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘এখানে কেউ রাজনীতি করতেন, তিনি রাজনীতিতে থেকে হয়তো বড় কোনো অপরাধ করেছেন। ক্ষোভের জায়গা থেকে হয়তো তার ওপর প্রতিশোধ নিয়েছে, এটাকে আমরা ধর্মীয়ভাবে নেব কেন?’ তিনি বলেন, যেভাবে বাংলাদেশের ব্যাপারে পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে, তা বাংলাদেশের পরিবেশ নয়, এটা অসত্য।

শফিকুর রহমান আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নাম নিয়েও ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপসম্পাদকীয় লিখছেন। কিন্তু সেটা (পরিস্থিতি) কোথায়? তিনি বলেন, ‘যাদের বিরুদ্ধে আপনারা অভিযোগ দিচ্ছেন, তারা তো লাঠি হাতে মন্দির পাহারা দিচ্ছেন। যারা মন্দির পাহারা দিচ্ছেন, তাদের কেন আপনারা অহেতুক অভিযোগ দিচ্ছেন? বিবিসির বিশ্লেষণ আপনারা দেখেছেন।’

নির্বাচন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে জামায়াতের আমির বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা হয়নি। তিনি যোগ করেন, ওনারা কেবল বসলেন। মাত্র চারটা দিন হলো। আমরা ওনাদের দেখতে চাই যে ওনারা কীভাবে জাতিকে নিয়ে এগোতে চাচ্ছেন। সমস্যাগুলোর আশু সমাধান কীভাবে করেন। এগুলো যৌক্তিক সময়ে সমাধান হবে বলে আমরা আশাবাদী। দেশ আমাদের সবার। দেশ বেঁচে থাকলে, ভালো থাকলে, আমরা সবাই বেঁচে থাকব এবং ভালো থাকব।’