ক্যালিগ্রাফিতে বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন তাওহীদের

  • Update Time : ০৬:১০:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / 1066

মুজাহিদ

রং-তুলি দিয়ে ক্যানভাসে নিজের সত্বাকে প্রকাশ করাই হলো ক্যালিগ্রাফি। দিন দিন ক্যালিগ্রাফির কদর বাড়ছে। মানুষ তার সৌখিন ও আভিজাত্য প্রকাশ করতে বাসার দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখছে ভিন্ন ভিন্ন রকমের ক্যালিগ্রাফি। আমাদের দেশেও তার চাহিদা কম নয়। বাংলাদেশে যে সকল ক্যালিগ্রাফি শিল্পী রং-তুলিতে মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে ও নিজের মনে আঁকা শিল্পকে ছড়িয়ে দিয়েছেন সবার মাঝে। তাদের মধ্যে তাওহীদ সাজু অন্যতম। সাজুর শুরুটা হয় শখ থেকেই। ছোট বেলা থেকে আঁকা-আকি করার একটা অভ্যাস ছিল। কিন্তু কখনো ভাবেনি এই শখ তাকে এনে দেবে তার জীবনের সাফল্য। অবশ্য এর জন্য তাকে অনেক কষ্টের পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। সকল কষ্ট পেরিয়ে আজ তিনি একজন সফল ক্যালিগ্রাফার। শুধু তাই নয় তিনি একজন সফল উদ্যোগক্তাও বটে। ক্যালিগ্রাফির শিল্পকে যাতে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারে তার জন্য চালু করেছেন ‘কোট নোট আর্ট’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। যেখানে শত শত ছেলে মেয়ে শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে।

তাওহীদ সাজু মূলত লোক প্রশাসন বিভাগের একজন শিক্ষার্থী। যিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। লেখাপড়া শেষ করে কি করবে তা ভাবে পাচ্ছিলেন না। কিছুদিন বেকার থাকার পর একটি বায়িং হাউজে চাকরিও নিয়েছিলন তিনি। কিন্তু তার ধরাবাঁধা নিয়মে বেশিদিন আটকে রাখতে পারেননি। তার স্বপ্নগুলো ক্যালিগ্রাফির ভাঁজে ভাঁজে হাত ছানি দিচ্ছিল। তাইতো তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিজেকে উজার করে দিলেন ক্যালিগ্রাফির ভালবাসায়।


তার ছিলনা বড় কোনো পদের সরকারি আমলা হওয়ার স্বপ্ন। তবে হৃদয়ে ধারণ করেছিলেন, নিজেকে বিশ্বমানের একজন ক্যালিগ্রাফার হওয়া স্বপ্ন। যা ছিল আকাশের মতো বিশাল। এই তরুণ ক্যালিগ্রাফি শিল্পী তাওহীদের হৃদয়ের গহীনে লালিত স্বপ্ন এখন শুধু একটি। আর তা-হলোএকজন সফল বিশ্বমানের ক্যালিগ্রাফি শিল্পী হওয়া। তাইতো তিনি তার জীবনকে বুনছেন ক্যালিগ্রাফির রঙ তুলির ও হরফের ভাঁজে ভাঁজে। চোখ ধাঁধানো ক্যালিগ্রাফি আঁকতে পারেন সাজু তাওহীদ। যার স্বীকৃতিস্বরুপ তিনি পেয়েছেনও অসংখ্য সম্মাননা। তাছাড়া তিনি তিনটি আন্তর্জাতিক ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনীতে অংশগ্রহন করে পেয়েছেন সম্মাননা। তাঁর আঁকা ক্যালিগ্রাফি দেশের সীমানা পেড়িয়ে গিয়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। সম্প্রতি তিনি সৌদি আরব সফরে গিয়ে কা’বা ঘরের গিলাফের প্রধান ক্যালিগ্রাফার মুখতার আহমাদ শিকদারের সাথে সাক্ষাত করেন।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় তাওহীদের জন্ম। সেখানেই তাওহীদ বেড়ে উঠেন। ছোট কালে তিনি গ্রামের মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে তার শিক্ষা জীবন শুরু করেন। ২০০৯ সালে দামুড়হুদা ডিএস দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল এবং ২০১১ সালে খুলনার দারুল কুরআন সিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করেন। এরপরে ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগে। সেখান থেকে সম্পন্ন করেছেন বিএসএস (স্নাতক) ও এমএসএস (স্নাতকোত্তর) ডিগ্রি। পড়াশোনা শেষ করে তাওহীদে স্বপ্ন এখন পৃথিবীর সেরা ক্যালিগ্রাফার হওয়ার। যার জন্য করছেন প্রচুর পরিশ্রমও।

কিভাবে এই পথ চলা শুরু তা জানতে চাইলে তাওহীদ বলেন, ‘ছোটবেলার ভালোলাগা থেকে করা আঁকি-বুকিই যে আজ পেশায় পরিণত হবে তা নিজেও ভাবিনি। মাস্টার্স শেষ করে একটা কর্পোরেট হাইজে চাকরি নিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে মন টানলো না। ভাবছিলাম কিভাবে সরকারি চাকুরির পড়া শুরু করবো; কিভাবে লক্ষ লক্ষ প্রতিযোগীর মধ্যে নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তুলবো; তখন জানতে পারি ক্যালিগ্রাফির কথা। যেহেতু আঁকা-আঁকির প্রতি ভালোলাগা একটা ছিলোই; তাই খোঁজখবর নিয়ে ভর্তি হয়ে গেলাম ক্যালিগ্রাফি কোর্সে। সেই থেকেই আমার আগ্রহটা আরো বেড়ে গেলো।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা নিজের আঁকা প্রতিভাগুলোকে যখন বন্ধু, আত্মীয়স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা অনুপ্রেরণা দিতো। যখন তাকে ক্যালিগ্রফির প্রতি আরো আকৃষ্ট করে তুলতো। ফলে তাওহীদের কাজ দেখে অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করে তা ক্রয় করতে। তারই ধারাবাহিকতায় অল্প অল্প করে বিক্রি শুরু হয়। পরে নিয়মিত আঁকার পাশাপাশি প্রচারণা চালান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এভাবে নিজেদের নামের ক্যালিগ্রাফি করিয়ে নিতে অর্ডার করা শুরু করেন অনেকে। চালু হয়ে যায় ব্যবসায়িকভাবে তার পথচলা। এখন তিনি ক্যালিগ্রাফিকে তার পেশা হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছেন। ক্যালিগ্রাফির মাধ্যমে নতুন কিছু করার স্বপ্ন তাকে নাড়া দিচ্ছে বার বার । তাই পুরো সময়টা জুড়ে এখন শুধুই ক্যালিগ্রাফি।

ক্যালিগ্রাফি করে অর্থ আয়ের ব্যাপারে সাজু জানান, এখন ক্যালিগ্রাফি এঁকে বিক্রি করে যা টাকা পান; তাতে তাঁর ভালোই চলে। এই পেশায় ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল দেখছেন বলেও জানান তিনি।

তাওহীদ মেধা ও প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘কোট নোট আর্ট’ নামের একটি নিজের প্রতিষ্ঠান। সাজু নিজেই প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী। তিনি ইতোমধ্যেই তার সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে অংশগ্রহণ করেছেন ক্যালিগ্রাফি নিয়ে একাধিক আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে। চলতি বছরেই তিনি আন্তর্জাতিক কুরআন ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনী এবং ইন্দো-ইরান আন্তর্জাতিক কলা ও ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনীতে তাঁর শিল্পকর্ম স্থান পায়। এর আগে গত বছরের অক্টোবরে নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক সীরাত প্রতিযোগিতায়ও স্থান পায় তাওহীদের ক্যালিগ্রাফি।

প্রখ্যাত ক্যালিগ্রাফি প্রশিক্ষক মাহবুব মুর্শিদ তাওহীদ সম্পর্কে বলেন, ‘কাজের প্রতি সাজুর বেশ আগ্রহ। জানবার-শেখবার আকাঙ্ক্ষাও আছে। ক্যালিগ্রাফি নিয়ে তার পরিকল্পনার কথা শুনেছি। আমার বিশ্বাস, সে একদিন অনেক বড় ক্যালিগ্রাফার হবে।’

ক্যালিগ্রাফি নিয়ে সাজু বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে আর্টের প্রতি প্রবল নেশা ছিলো; তবে ক্যাম্পাসে এসে কিছুটা বাস্তবে রুপ নেয়। বিভাগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আল্পনা করার সময় রং তুলির সাথে ভালোভাবে পরিচয়। করোনার পর বায়িং হাউজে চাকরির পাশাপাশি কিছু করার জন্যে সব সময় মন টানতো। যা একান্ত নিজের পরিচয় দেওয়ার মত। সেই ভাবনা থেকেই ক্যালিগ্রাফির সন্ধান।’

ক্যালিগ্রাফির চাহিদা নিয়ে তিনি বলেন, পরিবারের প্রিয় মানুষের নাম দিয়ে করা ক্যালিগ্রাফি সবচেয়ে জনপ্রিয়তার শিখরে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ক্যালিগ্রাফিতে বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন তাওহীদের

Update Time : ০৬:১০:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

মুজাহিদ

রং-তুলি দিয়ে ক্যানভাসে নিজের সত্বাকে প্রকাশ করাই হলো ক্যালিগ্রাফি। দিন দিন ক্যালিগ্রাফির কদর বাড়ছে। মানুষ তার সৌখিন ও আভিজাত্য প্রকাশ করতে বাসার দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখছে ভিন্ন ভিন্ন রকমের ক্যালিগ্রাফি। আমাদের দেশেও তার চাহিদা কম নয়। বাংলাদেশে যে সকল ক্যালিগ্রাফি শিল্পী রং-তুলিতে মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে ও নিজের মনে আঁকা শিল্পকে ছড়িয়ে দিয়েছেন সবার মাঝে। তাদের মধ্যে তাওহীদ সাজু অন্যতম। সাজুর শুরুটা হয় শখ থেকেই। ছোট বেলা থেকে আঁকা-আকি করার একটা অভ্যাস ছিল। কিন্তু কখনো ভাবেনি এই শখ তাকে এনে দেবে তার জীবনের সাফল্য। অবশ্য এর জন্য তাকে অনেক কষ্টের পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। সকল কষ্ট পেরিয়ে আজ তিনি একজন সফল ক্যালিগ্রাফার। শুধু তাই নয় তিনি একজন সফল উদ্যোগক্তাও বটে। ক্যালিগ্রাফির শিল্পকে যাতে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারে তার জন্য চালু করেছেন ‘কোট নোট আর্ট’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। যেখানে শত শত ছেলে মেয়ে শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে।

তাওহীদ সাজু মূলত লোক প্রশাসন বিভাগের একজন শিক্ষার্থী। যিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। লেখাপড়া শেষ করে কি করবে তা ভাবে পাচ্ছিলেন না। কিছুদিন বেকার থাকার পর একটি বায়িং হাউজে চাকরিও নিয়েছিলন তিনি। কিন্তু তার ধরাবাঁধা নিয়মে বেশিদিন আটকে রাখতে পারেননি। তার স্বপ্নগুলো ক্যালিগ্রাফির ভাঁজে ভাঁজে হাত ছানি দিচ্ছিল। তাইতো তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিজেকে উজার করে দিলেন ক্যালিগ্রাফির ভালবাসায়।


তার ছিলনা বড় কোনো পদের সরকারি আমলা হওয়ার স্বপ্ন। তবে হৃদয়ে ধারণ করেছিলেন, নিজেকে বিশ্বমানের একজন ক্যালিগ্রাফার হওয়া স্বপ্ন। যা ছিল আকাশের মতো বিশাল। এই তরুণ ক্যালিগ্রাফি শিল্পী তাওহীদের হৃদয়ের গহীনে লালিত স্বপ্ন এখন শুধু একটি। আর তা-হলোএকজন সফল বিশ্বমানের ক্যালিগ্রাফি শিল্পী হওয়া। তাইতো তিনি তার জীবনকে বুনছেন ক্যালিগ্রাফির রঙ তুলির ও হরফের ভাঁজে ভাঁজে। চোখ ধাঁধানো ক্যালিগ্রাফি আঁকতে পারেন সাজু তাওহীদ। যার স্বীকৃতিস্বরুপ তিনি পেয়েছেনও অসংখ্য সম্মাননা। তাছাড়া তিনি তিনটি আন্তর্জাতিক ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনীতে অংশগ্রহন করে পেয়েছেন সম্মাননা। তাঁর আঁকা ক্যালিগ্রাফি দেশের সীমানা পেড়িয়ে গিয়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। সম্প্রতি তিনি সৌদি আরব সফরে গিয়ে কা’বা ঘরের গিলাফের প্রধান ক্যালিগ্রাফার মুখতার আহমাদ শিকদারের সাথে সাক্ষাত করেন।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় তাওহীদের জন্ম। সেখানেই তাওহীদ বেড়ে উঠেন। ছোট কালে তিনি গ্রামের মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে তার শিক্ষা জীবন শুরু করেন। ২০০৯ সালে দামুড়হুদা ডিএস দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল এবং ২০১১ সালে খুলনার দারুল কুরআন সিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করেন। এরপরে ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগে। সেখান থেকে সম্পন্ন করেছেন বিএসএস (স্নাতক) ও এমএসএস (স্নাতকোত্তর) ডিগ্রি। পড়াশোনা শেষ করে তাওহীদে স্বপ্ন এখন পৃথিবীর সেরা ক্যালিগ্রাফার হওয়ার। যার জন্য করছেন প্রচুর পরিশ্রমও।

কিভাবে এই পথ চলা শুরু তা জানতে চাইলে তাওহীদ বলেন, ‘ছোটবেলার ভালোলাগা থেকে করা আঁকি-বুকিই যে আজ পেশায় পরিণত হবে তা নিজেও ভাবিনি। মাস্টার্স শেষ করে একটা কর্পোরেট হাইজে চাকরি নিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে মন টানলো না। ভাবছিলাম কিভাবে সরকারি চাকুরির পড়া শুরু করবো; কিভাবে লক্ষ লক্ষ প্রতিযোগীর মধ্যে নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তুলবো; তখন জানতে পারি ক্যালিগ্রাফির কথা। যেহেতু আঁকা-আঁকির প্রতি ভালোলাগা একটা ছিলোই; তাই খোঁজখবর নিয়ে ভর্তি হয়ে গেলাম ক্যালিগ্রাফি কোর্সে। সেই থেকেই আমার আগ্রহটা আরো বেড়ে গেলো।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা নিজের আঁকা প্রতিভাগুলোকে যখন বন্ধু, আত্মীয়স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা অনুপ্রেরণা দিতো। যখন তাকে ক্যালিগ্রফির প্রতি আরো আকৃষ্ট করে তুলতো। ফলে তাওহীদের কাজ দেখে অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করে তা ক্রয় করতে। তারই ধারাবাহিকতায় অল্প অল্প করে বিক্রি শুরু হয়। পরে নিয়মিত আঁকার পাশাপাশি প্রচারণা চালান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এভাবে নিজেদের নামের ক্যালিগ্রাফি করিয়ে নিতে অর্ডার করা শুরু করেন অনেকে। চালু হয়ে যায় ব্যবসায়িকভাবে তার পথচলা। এখন তিনি ক্যালিগ্রাফিকে তার পেশা হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছেন। ক্যালিগ্রাফির মাধ্যমে নতুন কিছু করার স্বপ্ন তাকে নাড়া দিচ্ছে বার বার । তাই পুরো সময়টা জুড়ে এখন শুধুই ক্যালিগ্রাফি।

ক্যালিগ্রাফি করে অর্থ আয়ের ব্যাপারে সাজু জানান, এখন ক্যালিগ্রাফি এঁকে বিক্রি করে যা টাকা পান; তাতে তাঁর ভালোই চলে। এই পেশায় ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল দেখছেন বলেও জানান তিনি।

তাওহীদ মেধা ও প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘কোট নোট আর্ট’ নামের একটি নিজের প্রতিষ্ঠান। সাজু নিজেই প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী। তিনি ইতোমধ্যেই তার সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে অংশগ্রহণ করেছেন ক্যালিগ্রাফি নিয়ে একাধিক আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে। চলতি বছরেই তিনি আন্তর্জাতিক কুরআন ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনী এবং ইন্দো-ইরান আন্তর্জাতিক কলা ও ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনীতে তাঁর শিল্পকর্ম স্থান পায়। এর আগে গত বছরের অক্টোবরে নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক সীরাত প্রতিযোগিতায়ও স্থান পায় তাওহীদের ক্যালিগ্রাফি।

প্রখ্যাত ক্যালিগ্রাফি প্রশিক্ষক মাহবুব মুর্শিদ তাওহীদ সম্পর্কে বলেন, ‘কাজের প্রতি সাজুর বেশ আগ্রহ। জানবার-শেখবার আকাঙ্ক্ষাও আছে। ক্যালিগ্রাফি নিয়ে তার পরিকল্পনার কথা শুনেছি। আমার বিশ্বাস, সে একদিন অনেক বড় ক্যালিগ্রাফার হবে।’

ক্যালিগ্রাফি নিয়ে সাজু বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে আর্টের প্রতি প্রবল নেশা ছিলো; তবে ক্যাম্পাসে এসে কিছুটা বাস্তবে রুপ নেয়। বিভাগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আল্পনা করার সময় রং তুলির সাথে ভালোভাবে পরিচয়। করোনার পর বায়িং হাউজে চাকরির পাশাপাশি কিছু করার জন্যে সব সময় মন টানতো। যা একান্ত নিজের পরিচয় দেওয়ার মত। সেই ভাবনা থেকেই ক্যালিগ্রাফির সন্ধান।’

ক্যালিগ্রাফির চাহিদা নিয়ে তিনি বলেন, পরিবারের প্রিয় মানুষের নাম দিয়ে করা ক্যালিগ্রাফি সবচেয়ে জনপ্রিয়তার শিখরে।