পুলিশ প্রশাসন-নির্বাচন কমিশন সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিন: মির্জা ফখরুল

  • Update Time : ০৩:২১:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪
  • / 20

পুলিশ প্রশাসন-নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা সংস্কার করে অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সন্দেহ কিন্তু আপনাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) ওপর আসতে শুরু করেছে। আমরা চাই, সরকার সাফল্য অর্জন করুক, তাদের সাফল্য মানে আমাদের সাফল্য। তারা ব্যর্থ হলে আমরা ব্যর্থ হবো। আমরা চাই না , শেখ হাসিনা আবার ফিরে আসুক। আমরা চাই না , আওয়ামী লীগের দুশাসন আবার ফিরে আসুক।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি) আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে গার্মেন্টস শিল্প, রেমিটেন্স, উচ্চ ফলনশীল ধানের সূচনা হয়েছিল শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে। নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করেছিলেন তিনি। কীভাবে আমরা তার অবদান ভুলি? তিনি বিশ্বাস করতেন গণতন্ত্র একমাত্র রাস্তা। দেশকে ধ্বংসকারীরা তাকে হত্যা করলো।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার পার্লামেন্টারি গভমেন্ট ঘোষণার মাধ্য দিয়েই স্বৈরাচার এরশাদকে সরানো গেছে। শেখ হাসিনা যখন কেয়ারটেকার গভর্মেন্ট বাতিল করলো তখন আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারিনি, কেন পারলাম না? এটা কী সত্য? ১৫ বছর লড়াই-সংগ্রাম করে আমরা তাকে সরাতে পারিনি। তবে ফাইনাল গোলটা কিন্তু ছেলেরা দিয়েছে। এটাতো স্বীকার করতেই হবে আমাদের।

তিনি বলেন, আমাদের প্রায়োরিটি হচ্ছে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করা, গণতন্ত্রের জন্য স্পেস তৈরি করা। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমেইতো আমরা সংস্কারের ৩১ দফা তুলে ধরেছি। এখন নতুন যারা আসছেন তারা একে একজন এক এক কথা বলে যাচ্ছেন। অন্তর্বর্তী সরকারে যারা আছেন তারাতো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন। তাদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাও নেই। রাজনীতি একটি সায়েন্স, এজন্যইতো বলা হয় পলিটিকাল সায়েন্স। বিএনপি কি ক্ষমতার জন্য নির্বাচনের কথা বলছে? নো। দ্রুত নির্বাচন দিলেই দেশের অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের ইন্টেলিজেন্সের ভেতরে তথ্য ছিল না? তারা কি এ ব্যবস্থা আগে নিতে পারত না? আসলে সরকার এখনো স্ট্যাবল হতে পারেনি। তাই বলছি, নির্বাচন কমিশন ঠিক করে নির্বাচন দেন, একটি রোড ম্যাপ ঘোষণা দেন, কবে কী করবেন জানান। তাহলে মানুষের মনে আস্থা আসবে। নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে অনেকে হতাশ হয়ে পড়েছেন, অনেকে বলাবলি করেন এজন্যই কি সংগ্রাম করেছি? এতে করে আমাদের শত্রুরা সুযোগ নেবে। সরকার থেকে বিভিন্ন কথা বলা হচ্ছে। তবে আমি বলতে চা , যে কোনো একদিকে ফোকাস দিন। পুলিশ প্রশাসন-নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিন। বাকি সংস্কারগুলো নির্বাচিত হয়ে যারা আসবেন তারা করবে।

নির্বাচিত হয়ে আসলে আমরা একা দেশ চালাবো না এমনটা জানিয়ে ফখরুল বলেন, আমরা একটি জাতীয় সরকার গড়ে তুলবো। যারা আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে ছিল তাদের নিয়ে দেশ চালাবো। তাহলে সমস্যাটা কোথায়? সন্দেহটা কোথায়? সন্দেহ কিন্তু আপনাদের ওপর আসতে শুরু করেছে।

শিক্ষা কাঠামোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ৫৩ বছরে আমরা কী সাফল্য অর্জন করেছি শিক্ষাখাতে, বিশ্বের এক হাজার ইউনিভার্সিটি মধ্যে আমাদের একটি ইউনিভার্সিটি সিরিয়ালে আসে না। কারণ আমরা ঐক্যবদ্ধ জাতি না। দেশের সবচেয়ে ক্ষতি করেছে শেখ হাসিনা। দেশের সব অর্জন ১৫ বছর শেষ করেছেন তিনি।

ইস্পাত কঠিন সময়ে ঐক্যের জায়গায় এক থাকতে হবে বলে আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বিএসপিপি এর আহ্বায়ক এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া, ড্যাবের সাবেক সভাপতি আজিজুল হক, ড্যাবের সভাপতি. হারুন আল রশীদ প্রমুখ।

Please Share This Post in Your Social Media


পুলিশ প্রশাসন-নির্বাচন কমিশন সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিন: মির্জা ফখরুল

Update Time : ০৩:২১:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

পুলিশ প্রশাসন-নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা সংস্কার করে অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সন্দেহ কিন্তু আপনাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) ওপর আসতে শুরু করেছে। আমরা চাই, সরকার সাফল্য অর্জন করুক, তাদের সাফল্য মানে আমাদের সাফল্য। তারা ব্যর্থ হলে আমরা ব্যর্থ হবো। আমরা চাই না , শেখ হাসিনা আবার ফিরে আসুক। আমরা চাই না , আওয়ামী লীগের দুশাসন আবার ফিরে আসুক।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি) আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে গার্মেন্টস শিল্প, রেমিটেন্স, উচ্চ ফলনশীল ধানের সূচনা হয়েছিল শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে। নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করেছিলেন তিনি। কীভাবে আমরা তার অবদান ভুলি? তিনি বিশ্বাস করতেন গণতন্ত্র একমাত্র রাস্তা। দেশকে ধ্বংসকারীরা তাকে হত্যা করলো।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার পার্লামেন্টারি গভমেন্ট ঘোষণার মাধ্য দিয়েই স্বৈরাচার এরশাদকে সরানো গেছে। শেখ হাসিনা যখন কেয়ারটেকার গভর্মেন্ট বাতিল করলো তখন আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারিনি, কেন পারলাম না? এটা কী সত্য? ১৫ বছর লড়াই-সংগ্রাম করে আমরা তাকে সরাতে পারিনি। তবে ফাইনাল গোলটা কিন্তু ছেলেরা দিয়েছে। এটাতো স্বীকার করতেই হবে আমাদের।

তিনি বলেন, আমাদের প্রায়োরিটি হচ্ছে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করা, গণতন্ত্রের জন্য স্পেস তৈরি করা। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমেইতো আমরা সংস্কারের ৩১ দফা তুলে ধরেছি। এখন নতুন যারা আসছেন তারা একে একজন এক এক কথা বলে যাচ্ছেন। অন্তর্বর্তী সরকারে যারা আছেন তারাতো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন। তাদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাও নেই। রাজনীতি একটি সায়েন্স, এজন্যইতো বলা হয় পলিটিকাল সায়েন্স। বিএনপি কি ক্ষমতার জন্য নির্বাচনের কথা বলছে? নো। দ্রুত নির্বাচন দিলেই দেশের অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের ইন্টেলিজেন্সের ভেতরে তথ্য ছিল না? তারা কি এ ব্যবস্থা আগে নিতে পারত না? আসলে সরকার এখনো স্ট্যাবল হতে পারেনি। তাই বলছি, নির্বাচন কমিশন ঠিক করে নির্বাচন দেন, একটি রোড ম্যাপ ঘোষণা দেন, কবে কী করবেন জানান। তাহলে মানুষের মনে আস্থা আসবে। নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে অনেকে হতাশ হয়ে পড়েছেন, অনেকে বলাবলি করেন এজন্যই কি সংগ্রাম করেছি? এতে করে আমাদের শত্রুরা সুযোগ নেবে। সরকার থেকে বিভিন্ন কথা বলা হচ্ছে। তবে আমি বলতে চা , যে কোনো একদিকে ফোকাস দিন। পুলিশ প্রশাসন-নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিন। বাকি সংস্কারগুলো নির্বাচিত হয়ে যারা আসবেন তারা করবে।

নির্বাচিত হয়ে আসলে আমরা একা দেশ চালাবো না এমনটা জানিয়ে ফখরুল বলেন, আমরা একটি জাতীয় সরকার গড়ে তুলবো। যারা আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে ছিল তাদের নিয়ে দেশ চালাবো। তাহলে সমস্যাটা কোথায়? সন্দেহটা কোথায়? সন্দেহ কিন্তু আপনাদের ওপর আসতে শুরু করেছে।

শিক্ষা কাঠামোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ৫৩ বছরে আমরা কী সাফল্য অর্জন করেছি শিক্ষাখাতে, বিশ্বের এক হাজার ইউনিভার্সিটি মধ্যে আমাদের একটি ইউনিভার্সিটি সিরিয়ালে আসে না। কারণ আমরা ঐক্যবদ্ধ জাতি না। দেশের সবচেয়ে ক্ষতি করেছে শেখ হাসিনা। দেশের সব অর্জন ১৫ বছর শেষ করেছেন তিনি।

ইস্পাত কঠিন সময়ে ঐক্যের জায়গায় এক থাকতে হবে বলে আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বিএসপিপি এর আহ্বায়ক এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া, ড্যাবের সাবেক সভাপতি আজিজুল হক, ড্যাবের সভাপতি. হারুন আল রশীদ প্রমুখ।