রাষ্ট্রায়ত্ত ৬ ব্যাংকের এমডির নিয়োগ বাতিল

  • Update Time : ০১:৪৬:১৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / 20

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ব্যাংকখাত সংস্কারের লক্ষ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, রূপালী, অগ্রণী, জনতা, বিডিবিএল এবং বেসিক ব্যাংকসহ ছয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করেছে সরকার।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এ সংক্রান্ত আলাদা ছয়টি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। ছয়টি ব্যাংকের চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে এমডির সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি বাতিলের বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে নতুন করে ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

অপসারণ করা ব্যাংক এমডিরা হলেন- সোনালী ব্যাংকের এমডি মো. আফজাল করিম, জনতা ব্যাংকের এমডি মো. আবদুল জব্বার, অগ্রণী ব্যাংকের এমডি মো. মুরশেদুল কবীর, রূপালী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, বেসিক ব্যাংকের এমডি মো. আনিসুর রহমান এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (বিডিবিএল) এমডি মো. হাবিবুর রহমান গাজী।

সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডিও) ও প্রধান নির্বাহী (সিইও) মো. আফজাল করিমের নিয়োগ বাতিল সংক্রান্ত একটি চিঠি ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হয়েছে। ২০২২ সালের আগস্টে আফজাল করিমকে তিন বছরের জন্য সোনালী ব্যাংকের এমডি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় বলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। সে হিসেবে তার মেয়াদ ছিল আগামী বছরের আগস্ট পর্যন্ত।

তাকে চিঠিতে বলা হয়, মো. আফজাল করিমের সঙ্গে পরিচালনা পর্ষদের সম্পাদিত চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিলে জন্য সরকারের সম্মতি জ্ঞাপন করা হলো। ব্যাংক কোম্পানি আইনে পরিচালনা পর্ষদের সম্পাদিত চুক্তিপত্র অনুযায়ী তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিলের বিষয়ে পরবর্তী বিধিগত কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

প্রায় একই ভাষ্য উল্লেখ করে রূপালী, অগ্রণী, জনতা, বিডিবিএল এবং বেসিক ব্যাংকের এমডি ও সিইও- এর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যানের কাছেও চিঠি পাঠানো হয়।

প্রসঙ্গত, তিন বছর মেয়াদি চুক্তির ভিত্তিতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর এমডি ও সিইওদের নিয়োগ দেয় সরকার। ২০২৩ সালের ৩ মে জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান মো. আব্দুল জব্বার। রূপালী ব্যাংকের মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর নিয়োগ পান ২০২২ সালের ২৮ আগস্ট। আর অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোরশেদুল কবির নিয়োগ পান ২০২২ সালের ১৪ আগস্ট। এছাড়া বেসিক ব্যাংকে মো. আনিসুর রহমান এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে (বিডিবিএল) হাবিবুর রহমান গাজী এমডি ও সিইও হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ব্যাংকখাত সংস্কারের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে ছয় ব্যাংকের এমডি ও প্রধান নির্বাহীদের (সিইও) চুক্তিভিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিল করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই ব্যাংকগুলোতে সিইও ও এমডিরা ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির মাধ্যমে যোগদান করেন। তাই এমডিদের চুক্তির অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিল করার এখতিয়ারও ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ বা পর্ষদের চেয়ারম্যানের।

তারা জানান, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপত্রে চুক্তি বাতিলের ক্ষেত্রে এমডিদের নোটিশ দেয়াসহ বিভিন্ন শর্ত থাকে, সেসব শর্ত মেনে তাদের সঙ্গে নিয়োগের চুক্তি বাতিল করতে হবে। চেয়ারম্যান কোম্পানি সেক্রেটারির মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন করবেন। এ জন্যই এমডিদের নিয়োগ বাতিল করতে ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিদ্যমান এমডিদের নিয়োগ বাতিল হওয়ার পর নতুন এমডি নিয়োগ দেবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।

Please Share This Post in Your Social Media


রাষ্ট্রায়ত্ত ৬ ব্যাংকের এমডির নিয়োগ বাতিল

Update Time : ০১:৪৬:১৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ব্যাংকখাত সংস্কারের লক্ষ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, রূপালী, অগ্রণী, জনতা, বিডিবিএল এবং বেসিক ব্যাংকসহ ছয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করেছে সরকার।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এ সংক্রান্ত আলাদা ছয়টি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। ছয়টি ব্যাংকের চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে এমডির সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি বাতিলের বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে নতুন করে ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

অপসারণ করা ব্যাংক এমডিরা হলেন- সোনালী ব্যাংকের এমডি মো. আফজাল করিম, জনতা ব্যাংকের এমডি মো. আবদুল জব্বার, অগ্রণী ব্যাংকের এমডি মো. মুরশেদুল কবীর, রূপালী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, বেসিক ব্যাংকের এমডি মো. আনিসুর রহমান এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (বিডিবিএল) এমডি মো. হাবিবুর রহমান গাজী।

সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডিও) ও প্রধান নির্বাহী (সিইও) মো. আফজাল করিমের নিয়োগ বাতিল সংক্রান্ত একটি চিঠি ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হয়েছে। ২০২২ সালের আগস্টে আফজাল করিমকে তিন বছরের জন্য সোনালী ব্যাংকের এমডি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় বলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। সে হিসেবে তার মেয়াদ ছিল আগামী বছরের আগস্ট পর্যন্ত।

তাকে চিঠিতে বলা হয়, মো. আফজাল করিমের সঙ্গে পরিচালনা পর্ষদের সম্পাদিত চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিলে জন্য সরকারের সম্মতি জ্ঞাপন করা হলো। ব্যাংক কোম্পানি আইনে পরিচালনা পর্ষদের সম্পাদিত চুক্তিপত্র অনুযায়ী তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিলের বিষয়ে পরবর্তী বিধিগত কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

প্রায় একই ভাষ্য উল্লেখ করে রূপালী, অগ্রণী, জনতা, বিডিবিএল এবং বেসিক ব্যাংকের এমডি ও সিইও- এর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যানের কাছেও চিঠি পাঠানো হয়।

প্রসঙ্গত, তিন বছর মেয়াদি চুক্তির ভিত্তিতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর এমডি ও সিইওদের নিয়োগ দেয় সরকার। ২০২৩ সালের ৩ মে জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান মো. আব্দুল জব্বার। রূপালী ব্যাংকের মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর নিয়োগ পান ২০২২ সালের ২৮ আগস্ট। আর অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোরশেদুল কবির নিয়োগ পান ২০২২ সালের ১৪ আগস্ট। এছাড়া বেসিক ব্যাংকে মো. আনিসুর রহমান এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে (বিডিবিএল) হাবিবুর রহমান গাজী এমডি ও সিইও হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ব্যাংকখাত সংস্কারের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে ছয় ব্যাংকের এমডি ও প্রধান নির্বাহীদের (সিইও) চুক্তিভিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিল করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই ব্যাংকগুলোতে সিইও ও এমডিরা ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির মাধ্যমে যোগদান করেন। তাই এমডিদের চুক্তির অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিল করার এখতিয়ারও ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ বা পর্ষদের চেয়ারম্যানের।

তারা জানান, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপত্রে চুক্তি বাতিলের ক্ষেত্রে এমডিদের নোটিশ দেয়াসহ বিভিন্ন শর্ত থাকে, সেসব শর্ত মেনে তাদের সঙ্গে নিয়োগের চুক্তি বাতিল করতে হবে। চেয়ারম্যান কোম্পানি সেক্রেটারির মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন করবেন। এ জন্যই এমডিদের নিয়োগ বাতিল করতে ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিদ্যমান এমডিদের নিয়োগ বাতিল হওয়ার পর নতুন এমডি নিয়োগ দেবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।