শপথ নিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আরও ৪ উপদেষ্টা

  • Update Time : ০৬:৪১:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৪
  • / 37

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের ৯ দিনের মাথায় শপথগ্রহণ আরও ৪ উপদেষ্টা। এ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সংখ্যা ২১ জন হলো।

শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকালে রাষ্ট্রপ্রতি মো. সাহাবুদ্দিন বঙ্গভবনে নতুন চার উপদেষ্টাকে শপথ পাঠ করান। তারা হলেন- অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, সাবেক আমলা আলী ইমাম মজুমদার ও ফাওজুল কবির খান এবং সাবেক সেনা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

১৯৪৮ সালে নোয়াখালীর চাটখিলে জন্ম নেয়া ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ১৯৭৭ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৯৯৬ সালে বিচারপতি হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ছিলেন ওয়াহিদ। বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে কাজ করা এই অর্থনীতিবিদ সরকারের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নেও যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন সময়ে।

উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়া ফাওজুল কবির খান ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ছিলেন। ১৯৭৯ ব্যাচের এই বিসিএস কর্মকর্তা জ্বালানি ও অবকাঠামোর রাষ্ট্রীয় অর্থায়ন প্রতিষ্ঠান ইডকলের প্রতিষ্ঠাতা সিইও ছিলেন।

ফাওজুল কবির বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে সোলার হোম সিস্টেম পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেন। তিনি ১৯৮৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। অবসরের পর তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষালয়ে শিক্ষকতা করেছেন।

৭৪ বছর বয়সী আলী ইমাম মজুমদার ২০০৬ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০০৮ সালের নভেম্বরে অবসরের আগ পর্যন্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। সে সময় অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে মুখ্য সচিবেরও দায়িত্বও তিনি পালন করেন। তার আগে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন।

১৯৭৭ সালে প্রশাসন ক্যাডারের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে যোগ দেয়া আলী ইমাম মজুমদার পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এবং জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) বিভিন্ন প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবেও তিনি কাজ করছেন। কুমিল্লার সন্তান আলী ইমাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত পড়েছেন, এ বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি আছে তার।

অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে ২০০৩ সালে বাংলাদেশ রাইফেলস বা তৎকালীন বিডিআরের মহাপরিচালক করা হয়। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সংগঠিত বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় সেনাবাহিনী গঠিত তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল হিসাবে ২০১০ সালে অবসরে যান জাহাঙ্গীর আলম।

প্রসঙ্গত, প্রবল গণ আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ৮ অগাস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের যাত্রা শুরু হয়। ১৭ জনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টাসহ ১৪ জন সেদিন শপথ নেন। পরে দুই দফায় বাকি তিনজনকে শপথ পড়ান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ৯ অগাস্ট ১৩ উপদেষ্টার দপ্তর বণ্টন করা হয়। শপথ নেয়ার পর বাকি তিন উপদেষ্টাও দপ্তর পান। প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের হাতে এখন আছে ২৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


শপথ নিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আরও ৪ উপদেষ্টা

Update Time : ০৬:৪১:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৪

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের ৯ দিনের মাথায় শপথগ্রহণ আরও ৪ উপদেষ্টা। এ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সংখ্যা ২১ জন হলো।

শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকালে রাষ্ট্রপ্রতি মো. সাহাবুদ্দিন বঙ্গভবনে নতুন চার উপদেষ্টাকে শপথ পাঠ করান। তারা হলেন- অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, সাবেক আমলা আলী ইমাম মজুমদার ও ফাওজুল কবির খান এবং সাবেক সেনা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

১৯৪৮ সালে নোয়াখালীর চাটখিলে জন্ম নেয়া ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ১৯৭৭ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৯৯৬ সালে বিচারপতি হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ছিলেন ওয়াহিদ। বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে কাজ করা এই অর্থনীতিবিদ সরকারের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নেও যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন সময়ে।

উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়া ফাওজুল কবির খান ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ছিলেন। ১৯৭৯ ব্যাচের এই বিসিএস কর্মকর্তা জ্বালানি ও অবকাঠামোর রাষ্ট্রীয় অর্থায়ন প্রতিষ্ঠান ইডকলের প্রতিষ্ঠাতা সিইও ছিলেন।

ফাওজুল কবির বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে সোলার হোম সিস্টেম পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেন। তিনি ১৯৮৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। অবসরের পর তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষালয়ে শিক্ষকতা করেছেন।

৭৪ বছর বয়সী আলী ইমাম মজুমদার ২০০৬ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০০৮ সালের নভেম্বরে অবসরের আগ পর্যন্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। সে সময় অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে মুখ্য সচিবেরও দায়িত্বও তিনি পালন করেন। তার আগে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন।

১৯৭৭ সালে প্রশাসন ক্যাডারের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে যোগ দেয়া আলী ইমাম মজুমদার পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এবং জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) বিভিন্ন প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবেও তিনি কাজ করছেন। কুমিল্লার সন্তান আলী ইমাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত পড়েছেন, এ বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি আছে তার।

অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে ২০০৩ সালে বাংলাদেশ রাইফেলস বা তৎকালীন বিডিআরের মহাপরিচালক করা হয়। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সংগঠিত বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় সেনাবাহিনী গঠিত তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল হিসাবে ২০১০ সালে অবসরে যান জাহাঙ্গীর আলম।

প্রসঙ্গত, প্রবল গণ আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ৮ অগাস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের যাত্রা শুরু হয়। ১৭ জনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টাসহ ১৪ জন সেদিন শপথ নেন। পরে দুই দফায় বাকি তিনজনকে শপথ পড়ান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ৯ অগাস্ট ১৩ উপদেষ্টার দপ্তর বণ্টন করা হয়। শপথ নেয়ার পর বাকি তিন উপদেষ্টাও দপ্তর পান। প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের হাতে এখন আছে ২৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ।