জিয়া মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করতো না : প্রধানমন্ত্রী

  • Update Time : ০৭:৪৫:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪
  • / 34

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জিয়া মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করতো না। জিয়ার সাড়ে পাঁচ বছরের শাসনামলে ২১টি ক্যু/পাল্টা ক্যু হয়। কর্নেল তাহেরকে সে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়েছিল। সার্বিক প্রেক্ষাপটে জিয়া অত্যন্ত হিংস্র ও বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল।

জিয়াউর রহমানকে খুনি আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুনি জিয়া তো রক্তাক্ত হাতেই খাবার খেতে বসতো এবং খেতে খেতেই ফাঁসির আদেশে স্বাক্ষর করতো। জিয়ার নির্দেশে অসংখ্য বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা স্বাধীন দেশের এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। স্বাধীনতাবিরোধীদের ছেড়ে দিয়ে প্রমাণ করেছে সে পরাজিত শক্তির দালাল ছিল।

বুধবার (২৬ জুন) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে রাজশাহী-৩ আসনের এমপি আসাদুজ্জামান আসাদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের ‘বাংলাদেশ লিগ্যাসি অব ব্লাড’ বইয়ের উদ্বৃতি দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যেখানে তিনি লিখেছেন, সরকারি হিসাবমতে জিয়া ১৯৭৭ সালের ৯ অক্টোবর পর্যন্ত মাত্র দু’মাসের মধ্যে এক হাজার ১৪৩ জন সৈনিককে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছিল।

আসাদুজ্জামান আসাদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর জিয়াউর রহমান সংবিধান লঙ্ঘন করে একাধারে সেনা প্রধান ও রাষ্ট্রপতির পদ দখল করে। ইতিহাসের এই ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডে জিয়ার সংশ্লিষ্টতা ছিল। খুনি ফারুক-রশিদরা আগে থেকেই জাতির পিতাকে হত্যার পরিকল্পনা করে, যেটা জিয়া জানতো। জিয়া সেনাছাউনিতে বসে দলছুট রাজনীতিবিদদের নিয়ে বিএনপি গঠন করে। সে যেমন অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে, তেমনি অবৈধভাবে বিএনপি সৃষ্টি করে।

এসময় যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের জোর কূটনৈতিক তৎপরতা ও আইনি কার্যক্রম চলমান বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, মানিলন্ডারিংসহ দুর্নীতির একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমান বর্তমানে যুক্তরাজ্য অবস্থান করছে। যুক্তরাজ্য থেকে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কিছু আইনি জটিলতা রয়েছে। তারপরও সব জটিলতা আইনি প্রক্রিয়াতেই নিরসন করে এ অপরাধীকে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং তাকে প্রাপ্য সাজার মুখোমুখি করার বিষয়ে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এ উদ্দেশ্য জোর কূটনৈতিক তৎপরতা ও আইনি কার্যক্রম একইসঙ্গে চলছে।

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর কাজ করে যাচ্ছে। আশা করা যায়, এ প্রক্রিয়ায় ফল আমরা অচিরেই দেখতে পারব। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় তারেক রহমান ওরফে তারেক জিয়াসহ ১৫ জন আসামি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।

সরকারপ্রধান বলেন, বিদেশে পলাতক আসামি মওলানা তাজউদ্দীন, মো. হারিছ চৌধুরী (গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ- বাংলাদেশে মৃত্যু হয়েছে) ও রাতুল আহম্মেদ বাবু ওরফে রাতুল বাবুদের বিরুদ্ধে ইন্টাপোলের রেড নোটিশ জারি করা আছে। এ ছাড়া পলাতক আসামিরা যেসব দেশে অবস্থান করছে, সেসব দেশের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


জিয়া মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করতো না : প্রধানমন্ত্রী

Update Time : ০৭:৪৫:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জিয়া মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করতো না। জিয়ার সাড়ে পাঁচ বছরের শাসনামলে ২১টি ক্যু/পাল্টা ক্যু হয়। কর্নেল তাহেরকে সে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়েছিল। সার্বিক প্রেক্ষাপটে জিয়া অত্যন্ত হিংস্র ও বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল।

জিয়াউর রহমানকে খুনি আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুনি জিয়া তো রক্তাক্ত হাতেই খাবার খেতে বসতো এবং খেতে খেতেই ফাঁসির আদেশে স্বাক্ষর করতো। জিয়ার নির্দেশে অসংখ্য বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা স্বাধীন দেশের এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। স্বাধীনতাবিরোধীদের ছেড়ে দিয়ে প্রমাণ করেছে সে পরাজিত শক্তির দালাল ছিল।

বুধবার (২৬ জুন) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে রাজশাহী-৩ আসনের এমপি আসাদুজ্জামান আসাদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের ‘বাংলাদেশ লিগ্যাসি অব ব্লাড’ বইয়ের উদ্বৃতি দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যেখানে তিনি লিখেছেন, সরকারি হিসাবমতে জিয়া ১৯৭৭ সালের ৯ অক্টোবর পর্যন্ত মাত্র দু’মাসের মধ্যে এক হাজার ১৪৩ জন সৈনিককে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছিল।

আসাদুজ্জামান আসাদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর জিয়াউর রহমান সংবিধান লঙ্ঘন করে একাধারে সেনা প্রধান ও রাষ্ট্রপতির পদ দখল করে। ইতিহাসের এই ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডে জিয়ার সংশ্লিষ্টতা ছিল। খুনি ফারুক-রশিদরা আগে থেকেই জাতির পিতাকে হত্যার পরিকল্পনা করে, যেটা জিয়া জানতো। জিয়া সেনাছাউনিতে বসে দলছুট রাজনীতিবিদদের নিয়ে বিএনপি গঠন করে। সে যেমন অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে, তেমনি অবৈধভাবে বিএনপি সৃষ্টি করে।

এসময় যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের জোর কূটনৈতিক তৎপরতা ও আইনি কার্যক্রম চলমান বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, মানিলন্ডারিংসহ দুর্নীতির একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমান বর্তমানে যুক্তরাজ্য অবস্থান করছে। যুক্তরাজ্য থেকে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কিছু আইনি জটিলতা রয়েছে। তারপরও সব জটিলতা আইনি প্রক্রিয়াতেই নিরসন করে এ অপরাধীকে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং তাকে প্রাপ্য সাজার মুখোমুখি করার বিষয়ে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এ উদ্দেশ্য জোর কূটনৈতিক তৎপরতা ও আইনি কার্যক্রম একইসঙ্গে চলছে।

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর কাজ করে যাচ্ছে। আশা করা যায়, এ প্রক্রিয়ায় ফল আমরা অচিরেই দেখতে পারব। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় তারেক রহমান ওরফে তারেক জিয়াসহ ১৫ জন আসামি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।

সরকারপ্রধান বলেন, বিদেশে পলাতক আসামি মওলানা তাজউদ্দীন, মো. হারিছ চৌধুরী (গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ- বাংলাদেশে মৃত্যু হয়েছে) ও রাতুল আহম্মেদ বাবু ওরফে রাতুল বাবুদের বিরুদ্ধে ইন্টাপোলের রেড নোটিশ জারি করা আছে। এ ছাড়া পলাতক আসামিরা যেসব দেশে অবস্থান করছে, সেসব দেশের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।