২৮ অক্টোবরের রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান সম্মিলিত বৌদ্ধ সমাজের
- Update Time : ০৭:৫৮:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৩
- / 107
নিজস্ব প্রতিবেদক:
আগামী ২৮ অক্টোবরের কর্মসূচির তারিখ পরিবর্তনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ সম্মিলিত বৌদ্ধ সমাজ।
ওইদিন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা এই আহ্বান জানান।
দিনটিতে বিএনপিসহ বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দল ঢাকায় সমাবেশের কর্মসূচি দিয়েছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও এদিন ঢাকা দখলে রাখার জন্য কর্মসূচি দিয়েছে।
বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের (আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার) সভাপতি প্রকৌশলী দিব্যেন্দু বিকাশ বড়ুয়ার সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সুমন কান্তি বড়ুয়া।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি রঞ্জিত কুমার বড়ুয়া ও সাবেক সভাপতি রাহুল কান্তি বড়ুয়াসহ উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ধর্মমিত্র মহাথের, বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সহ-সভাপতি বুদ্ধানন্দ মহাথের, সাবেক সভাপতি নেত্রসেন বড়ুয়া, ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহারের আবাসিক ভিক্ষু শ্রদ্ধানন্দ থের, বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সহ-সভাপতি রণজিৎ বড়ুয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার অনুপম বড়ুয়া, বৌদ্ধ সমিতি ঢাকার সভাপতি দীপাল চন্দ্র বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক স্বপন বড়ুয়া চৌধুরী, যুবনেতা রাহুল বড়ুয়া, কল্লোল বড়ুয়া, দোলন বড়ুয়া, শীলব্রত বড়ুয়া, প্রদীপ বড়ুয়া, প্রকৌশলী মিহির বড়ুয়া, রুপায়ন বড়ুয়া, রঞ্জন বড়ুয়া, দিবাশোক বড়ুয়া স্বপন, সাংবাদিক নিপু বড়ুয়া, অমল বড়ুয়া, নারী নেত্রী মধুমিতা বড়ুয়া চৌধুরী প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে সুমন কান্তি বড়ুয়া বলেন, আপনারা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের আসন্ন প্রবারণা পূর্ণিমার শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন। আজকের এই সংবাদ সম্মেলনে আপনাদের স্বাগত জানিয়ে প্রাসঙ্গিক বিষয়ে আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আগামী ২৮ অক্টোবর বিশ্ব বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উদ্যোগে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় ও সামজিক-সাংস্কৃতিক আনুষ্ঠানিকতায় শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপিত হবে। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের জন্য এটি দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব। বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায় প্রতি বছরের মতো হৃদয়ের গভীর শ্রদ্ধা ও ধর্মীয় আচার এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক আনুষ্ঠানিকতায় এই দিনটি উদযাপনের জন্য বিগত এক বছর ধরে অপেক্ষা করে আসছে।
তিনি বলেন, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের এই তিথি বা উৎসব পূর্ণিমাকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত হয় বিধায় এক বছর পূর্বেই এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানের দিন-তারিখ নির্দিষ্ট হয় এবং সকল সরকারি-বেসরকারি পঞ্জিকায় এটি অন্তর্ভুক্ত থাকে। তাই আমাদের প্রত্যাশা ছিল অবশ্যই দূরদর্শী চিন্তা সম্পন্ন এ দেশের রাজনৈতিক নেতারা যেকোনো রাজনৈতিক কর্মসূচির ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বিবেচনা করে আসন্ন পূর্ণিমা তিথিকে রাজনৈতিক কর্মসূচি মুক্ত রাখবেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে, দেশের কিছু রাজনৈতিক দল হয়তো অনিচ্ছাকৃত ও অসাবধানবশত উক্ত দিবসে কর্মসূচি দিয়েছে, ইতোমধ্যে এই কর্মসূচি নিয়ে চলছে নানা মাত্রিক প্রচারণা। যার ফলে সাধারণ বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর মনে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণের ক্ষেত্রে ভীতির সঞ্চার হয়েছে, তারা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। যে কারণে এই পবিত্র পূর্ণিমা দিবসে ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ জনগোষ্ঠী নির্বিঘ্নে যাতায়াতের ক্ষেত্রে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় আমরা দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তরিক শুভ দৃষ্টি কামনা করছি।
বক্তারা বলেন, আমাদের প্রত্যাশা, আগামী শনিবার (২৮ অক্টোবর) দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় তিথির গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে এবং বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধের চেতনাকে উজ্জীবিত রাখার প্রত্যয়ে বাংলাদেশের সম্মিলিত বৌদ্ধ সমাজের এই আবেদন গভীর আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহণ করবেন। কারণ তারা আশঙ্কা করছেন যে, ধর্মীয় অনুষ্ঠানের দিনে পাল্টাপাল্টি রাজনৈতিক কর্মসূচি দেশে হিংসা-বিদেশ ও দ্বন্দ্ব সংঘাত করতে পারে। ফলে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের দিনে প্রতিসংঘাত ঘটলে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অসংখ্য নারী পুরুষ ধর্ম পালনে বাধার সম্মুখীন হতে পারেন।
প্রসঙ্গত, তিন মাস বর্ষা ব্রত অধিষ্ঠানের পর, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা প্রবারণা উৎসবে মেতে ওঠেন। এই দিনের বিশেষ আকর্ষণ ফানুস ওড়ানো। এতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষ অংশগ্রহণ করেন। আষাঢ়ি পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাসকে বৌদ্ধরা বর্ষাবাস হিসেবে পালন করে থাকেন। , বিধিমতে, বর্ষা ঋতু উদযাপন করেন।
পূর্ণিমা দিনে শুরু হওয়া বর্ষাব্রত শেষ হয় শুভ আশ্বিনী পূর্ণিমা বা প্রবারণা পূর্ণিমার মাধ্যমে।