বিক্ষোভের আগুনে পুড়ছে বেসামাল শ্রীলঙ্কা

  • Update Time : ১১:২০:১৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ মে ২০২২
  • / 282

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

দীর্ঘদিন ধরেই অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে থাকা শ্রীলঙ্কার জনগণ এবার ফুঁসে উঠেছে। অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলার ঢেউ আছড়ে পড়ে রাজনীতিতেও। অবশেষে জনগণের ক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। তাতেও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। কলম্বোতে কারফিউ জারি থাকা সত্ত্বেও রাস্তায় নেমেছে দেশটির হাজার হাজার মানুষ। দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসেরও পদত্যাগ চাইছেন তারা।

বিক্ষোভকারীরা রাজাপাকসের পৈত্রিক ভিটায় অগ্নিসংযোগ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন এমপি ও একজন বিচারপতির বাড়িও। দীর্ঘদিনের জমে থাকা ক্ষোভ দেখছে ক্ষমতার চেয়ারে বসে থাকা রাজাপাকসের পরিবার।

সোমবার সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন একজন এমপি। তবে বলা হচ্ছে, তিনি বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি ছোড়ার আগে নিজেই নিজের ওপর গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। কলম্বোয় সহিংসতায় ওই সংসদ সদস্যসহ পাঁচজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, আহত হয়েছেন আরও অন্তত দুইশ জন।

শ্রীলঙ্কার ডেইলি মিররের এক প্রতিবেদনে সোমবার জানানো হয়, শুক্রবার এক বিশেষ বৈঠকে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া দেশজুড়ে চলা রাজনৈতিক সংকট সমাধানে বড় ভাই ও প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসেকে পদত্যাগ করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। পরে সেই আহ্বানে সাড়া দেন মাহিন্দা রাজাপাকসে। এর আগে গত শুক্রবার দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে জানিয়েছিলেন যে, তার ভাই অর্থাৎ দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে সম্মতি জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর অন্য মন্ত্রীরাও পদত্যাগ করতে শুরু করেছেন বলে শ্রীলঙ্কার গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। দুই মন্ত্রীও এরই মধ্যে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে পদত্যাগ করার কারণে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া একটি সর্বদলীয় মন্ত্রিসভা গঠনের জন্য পার্লামেন্টে থাকা সব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন বলে খবর মিলছে।

যদিও এর আগে বিরোধী এসজেবি পার্টি নিশ্চিত করে যে, তাদের নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা সম্ভাব্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করবেন না।

২৬ বছর ধরে সামরিক অভিযান পরিচালনার পর শ্রীলঙ্কার সামরিক বাহিনী ২০০৯ সালের তামিল টাইগারদের পরাজিত করার মাধ্যমে গৃহযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে সক্ষম হয়। আর সেই গৃহযুদ্ধে বিজয় আসে প্রধানমন্ত্রী এবং তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসের শাসনকালে। পরবর্তীতে আবারও নির্বাচনে জয়ী হয় এই পরিবার। ফলে দীর্ঘমেয়াদে শাসনভার পরিচালনার কারণে দুর্নীতিসহ নানাবিধ অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

Please Share This Post in Your Social Media


বিক্ষোভের আগুনে পুড়ছে বেসামাল শ্রীলঙ্কা

Update Time : ১১:২০:১৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ মে ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

দীর্ঘদিন ধরেই অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে থাকা শ্রীলঙ্কার জনগণ এবার ফুঁসে উঠেছে। অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলার ঢেউ আছড়ে পড়ে রাজনীতিতেও। অবশেষে জনগণের ক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। তাতেও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। কলম্বোতে কারফিউ জারি থাকা সত্ত্বেও রাস্তায় নেমেছে দেশটির হাজার হাজার মানুষ। দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসেরও পদত্যাগ চাইছেন তারা।

বিক্ষোভকারীরা রাজাপাকসের পৈত্রিক ভিটায় অগ্নিসংযোগ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন এমপি ও একজন বিচারপতির বাড়িও। দীর্ঘদিনের জমে থাকা ক্ষোভ দেখছে ক্ষমতার চেয়ারে বসে থাকা রাজাপাকসের পরিবার।

সোমবার সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন একজন এমপি। তবে বলা হচ্ছে, তিনি বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি ছোড়ার আগে নিজেই নিজের ওপর গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। কলম্বোয় সহিংসতায় ওই সংসদ সদস্যসহ পাঁচজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, আহত হয়েছেন আরও অন্তত দুইশ জন।

শ্রীলঙ্কার ডেইলি মিররের এক প্রতিবেদনে সোমবার জানানো হয়, শুক্রবার এক বিশেষ বৈঠকে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া দেশজুড়ে চলা রাজনৈতিক সংকট সমাধানে বড় ভাই ও প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসেকে পদত্যাগ করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। পরে সেই আহ্বানে সাড়া দেন মাহিন্দা রাজাপাকসে। এর আগে গত শুক্রবার দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে জানিয়েছিলেন যে, তার ভাই অর্থাৎ দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে সম্মতি জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর অন্য মন্ত্রীরাও পদত্যাগ করতে শুরু করেছেন বলে শ্রীলঙ্কার গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। দুই মন্ত্রীও এরই মধ্যে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে পদত্যাগ করার কারণে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া একটি সর্বদলীয় মন্ত্রিসভা গঠনের জন্য পার্লামেন্টে থাকা সব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন বলে খবর মিলছে।

যদিও এর আগে বিরোধী এসজেবি পার্টি নিশ্চিত করে যে, তাদের নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা সম্ভাব্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করবেন না।

২৬ বছর ধরে সামরিক অভিযান পরিচালনার পর শ্রীলঙ্কার সামরিক বাহিনী ২০০৯ সালের তামিল টাইগারদের পরাজিত করার মাধ্যমে গৃহযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে সক্ষম হয়। আর সেই গৃহযুদ্ধে বিজয় আসে প্রধানমন্ত্রী এবং তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসের শাসনকালে। পরবর্তীতে আবারও নির্বাচনে জয়ী হয় এই পরিবার। ফলে দীর্ঘমেয়াদে শাসনভার পরিচালনার কারণে দুর্নীতিসহ নানাবিধ অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।