হুমকি দিয়েই বিদ্যুৎ সরবরাহ কমালো আদানি গ্রুপ

  • Update Time : ১০:০০:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪
  • / 17

বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ প্রায় ১০ হাজার ৮৬ কোটি টাকা পাওনা ভারতের আদানি গ্রুপের। এই অর্থ জমে থাকার কারণে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার হুমকি দিয়েছে আদানি কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটি এরই মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে।

বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের একমাত্র রাষ্ট্রীয় সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)।

প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, ভারতের ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় অবস্থিত এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আদানি গোষ্ঠী বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দিনের বেলা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে গড়ে মাত্র ৫৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে। যদিও গত বুধবার পর্যন্ত দিনে গড়ে এক হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো।

এদিকে বর্তমানে দেশীয় কয়লাভিত্তিক তিন বিদ্যুৎকেন্দ্র—এস আলম, রামপাল ও পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও বিদ্যুৎ উৎপাদন কমানো হয়েছে, যার ফলে বর্তমানে চাহিদার তুলনায় সরবরাহে এক হাজার মেগাওয়াটের বেশি ঘাটতি থাকছে।

সম্প্রতি আদানি পাওয়ার (ঝারখণ্ড) লিমিটেডের প্রতিনিধি ও যৌথ সমন্বয় কমিটির সভাপতি এম আর কৃষ্ণ রাও এক চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিসি) বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে ১৭০.০৩ মিলিয়ন ডলারের জন্য প্রয়োজনীয় এলসি প্রদান করেনি এবং ৮৪৬ মিলিয়ন ডলারের (১০,০৮৬ কোটি টাকা) বকেয়াও শোধ করেনি।

তিনি উল্লেখ করেছেন, সময়মতো এলসি না দেওয়া এবং বকেয়া পরিমাণ পরিশোধ না করার ফলে পাওয়ার পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্টের আওতায় ম্যাটেরিয়াল ডিফল্ট ঘটেছে, যা আদানি পাওয়ারের সরবরাহ বজায় রাখতে বাধা দিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘বহু বকেয়া পরিশোধ ও এলসির অভাবে আমরা কয়লা সরবরাহকারী এবং অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণ কন্ট্রাক্টরদের জন্য কাজের মূলধন নিরাপদে রাখতে পারছি না। আমাদের ঋণদাতারাও সহায়তা প্রত্যাহার করছে।’

আদানি তাদের চিঠিতে বিপিডিসিকে ৩০ অক্টোবর ২০২৪ তারিখের মধ্যে এই ডিফল্টগুলো সমাধানের আহ্বান জানায়। অন্যথায় ৩১ অক্টোবর ২০২৪ থেকে সরবরাহ বন্ধ করা হতে পারে বলে জানিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল পর্যন্ত আদানির বকেয়া পরিশোধ করা হয়নি। এ কারণে কেন্দ্রটির কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


হুমকি দিয়েই বিদ্যুৎ সরবরাহ কমালো আদানি গ্রুপ

Update Time : ১০:০০:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ প্রায় ১০ হাজার ৮৬ কোটি টাকা পাওনা ভারতের আদানি গ্রুপের। এই অর্থ জমে থাকার কারণে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার হুমকি দিয়েছে আদানি কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটি এরই মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে।

বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের একমাত্র রাষ্ট্রীয় সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)।

প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, ভারতের ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় অবস্থিত এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আদানি গোষ্ঠী বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দিনের বেলা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে গড়ে মাত্র ৫৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে। যদিও গত বুধবার পর্যন্ত দিনে গড়ে এক হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো।

এদিকে বর্তমানে দেশীয় কয়লাভিত্তিক তিন বিদ্যুৎকেন্দ্র—এস আলম, রামপাল ও পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও বিদ্যুৎ উৎপাদন কমানো হয়েছে, যার ফলে বর্তমানে চাহিদার তুলনায় সরবরাহে এক হাজার মেগাওয়াটের বেশি ঘাটতি থাকছে।

সম্প্রতি আদানি পাওয়ার (ঝারখণ্ড) লিমিটেডের প্রতিনিধি ও যৌথ সমন্বয় কমিটির সভাপতি এম আর কৃষ্ণ রাও এক চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিসি) বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে ১৭০.০৩ মিলিয়ন ডলারের জন্য প্রয়োজনীয় এলসি প্রদান করেনি এবং ৮৪৬ মিলিয়ন ডলারের (১০,০৮৬ কোটি টাকা) বকেয়াও শোধ করেনি।

তিনি উল্লেখ করেছেন, সময়মতো এলসি না দেওয়া এবং বকেয়া পরিমাণ পরিশোধ না করার ফলে পাওয়ার পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্টের আওতায় ম্যাটেরিয়াল ডিফল্ট ঘটেছে, যা আদানি পাওয়ারের সরবরাহ বজায় রাখতে বাধা দিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘বহু বকেয়া পরিশোধ ও এলসির অভাবে আমরা কয়লা সরবরাহকারী এবং অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণ কন্ট্রাক্টরদের জন্য কাজের মূলধন নিরাপদে রাখতে পারছি না। আমাদের ঋণদাতারাও সহায়তা প্রত্যাহার করছে।’

আদানি তাদের চিঠিতে বিপিডিসিকে ৩০ অক্টোবর ২০২৪ তারিখের মধ্যে এই ডিফল্টগুলো সমাধানের আহ্বান জানায়। অন্যথায় ৩১ অক্টোবর ২০২৪ থেকে সরবরাহ বন্ধ করা হতে পারে বলে জানিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল পর্যন্ত আদানির বকেয়া পরিশোধ করা হয়নি। এ কারণে কেন্দ্রটির কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।