তিস্তার ধ্বংসলীলায় বিপর্যস্ত সিকিম, সেনাসহ নিখোঁজ শতাধিক

  • Update Time : ০৯:৩০:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৩
  • / 165

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

সিকিমে ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে তিস্তা। বুধবার (৪ অক্টোবর) ভোরে ভারী বৃষ্টির জেরে লোনক হ্রদের পানি প্রবল বেগে ছুটে আসে তিস্তায়। ফলে সিকিমে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। যতই সময় যাচ্ছে সেখানকার পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। এখন পর্যন্ত সেখানে ১৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সিকিমের সরকারি সূত্র অনুযায়ী, এখনও ২২ জন সেনাসহ অন্তত ১২০ জন নিখোঁজ রয়েছে।

স্থানীয় কর্মকর্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বুধবার সকালে ২৩ সেনা নিখোঁজ হয়। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত একজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। উদ্ধার হওয়া ওই সেনার শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল বলে সেনা সূত্র নিশ্চিত করেছে। এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ১৪টির মতো ব্রীজ ধসে পড়েছে। এছাড়া রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়েছেন তিন হাজারের বেশি পর্যটক।

উত্তর সিকিমের লোনাক হ্রদের ওপর ভারীর বৃষ্টির কারণেই এই বিপর্যয় ঘটেছে। এদিকে আকস্মিক বন্যার পানির স্রোতে সিকিমের চুংথাম বাঁধ ভেঙে গেছে। সে কারণেই অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গেছে তিস্তার পানি। নদীর তাণ্ডবে আশপাশের এলাকা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। পূজার আগে সিকিমের এই বিপর্যয়ের কারণে সেখানে ঘুরতে যাওয়া বহু পর্যটক আটকে পড়েছেন প্রতিবেশী রাজ্যে।

পশ্চিমবঙ্গের অন্তত দু’হাজার পর্যটক সিকিমে আটকা পড়েছেন বলে জানা গেছে। জাতীয় সড়কে যান চলাচলও বন্ধ রয়েছে। ফলে আপাতত ফেরার পথও বন্ধ। রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিকিম সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

বাস, ট্রেন এবং বিমানে করে পশ্চিমবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন অংশ থেকে পর্যটকরা বেড়াতে যান সিকিমে। প্রতিবার পূজার আগে সেখানে পর্যটকদের ভিড় আরও বাড়ে। কিন্তু বুধবার সকাল থেকেই অন্য এক সিকিমকে দেখলেন পর্যটকরা। তিস্তায় আকস্মিক বন্যার কারণে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে পাকিয়ং, গ্যাংটক, নামচি এবং মঙ্গন জেলার। ভেসে গেছে বহু সেতু। কিছু জায়গায় পানির স্রোতে সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে পড়েছে বড় বড় বিল্ডিং।

কাদা-মাটিতে চাপা পড়েছে বহু বসতি, রাস্তাঘাট, সেনাছাউনি। পরিস্থিতি জরিপ করে আগামী ৮ অক্টোবর পর্যন্ত পাকিয়ং, গ্যাংটক, নামচি এবং মঙ্গনের সব স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চালু করা হয়েছে একাধিক জরুরি পরিষেবার নম্বর।

Please Share This Post in Your Social Media


তিস্তার ধ্বংসলীলায় বিপর্যস্ত সিকিম, সেনাসহ নিখোঁজ শতাধিক

Update Time : ০৯:৩০:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

সিকিমে ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে তিস্তা। বুধবার (৪ অক্টোবর) ভোরে ভারী বৃষ্টির জেরে লোনক হ্রদের পানি প্রবল বেগে ছুটে আসে তিস্তায়। ফলে সিকিমে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। যতই সময় যাচ্ছে সেখানকার পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। এখন পর্যন্ত সেখানে ১৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সিকিমের সরকারি সূত্র অনুযায়ী, এখনও ২২ জন সেনাসহ অন্তত ১২০ জন নিখোঁজ রয়েছে।

স্থানীয় কর্মকর্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বুধবার সকালে ২৩ সেনা নিখোঁজ হয়। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত একজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। উদ্ধার হওয়া ওই সেনার শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল বলে সেনা সূত্র নিশ্চিত করেছে। এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ১৪টির মতো ব্রীজ ধসে পড়েছে। এছাড়া রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়েছেন তিন হাজারের বেশি পর্যটক।

উত্তর সিকিমের লোনাক হ্রদের ওপর ভারীর বৃষ্টির কারণেই এই বিপর্যয় ঘটেছে। এদিকে আকস্মিক বন্যার পানির স্রোতে সিকিমের চুংথাম বাঁধ ভেঙে গেছে। সে কারণেই অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গেছে তিস্তার পানি। নদীর তাণ্ডবে আশপাশের এলাকা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। পূজার আগে সিকিমের এই বিপর্যয়ের কারণে সেখানে ঘুরতে যাওয়া বহু পর্যটক আটকে পড়েছেন প্রতিবেশী রাজ্যে।

পশ্চিমবঙ্গের অন্তত দু’হাজার পর্যটক সিকিমে আটকা পড়েছেন বলে জানা গেছে। জাতীয় সড়কে যান চলাচলও বন্ধ রয়েছে। ফলে আপাতত ফেরার পথও বন্ধ। রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিকিম সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

বাস, ট্রেন এবং বিমানে করে পশ্চিমবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন অংশ থেকে পর্যটকরা বেড়াতে যান সিকিমে। প্রতিবার পূজার আগে সেখানে পর্যটকদের ভিড় আরও বাড়ে। কিন্তু বুধবার সকাল থেকেই অন্য এক সিকিমকে দেখলেন পর্যটকরা। তিস্তায় আকস্মিক বন্যার কারণে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে পাকিয়ং, গ্যাংটক, নামচি এবং মঙ্গন জেলার। ভেসে গেছে বহু সেতু। কিছু জায়গায় পানির স্রোতে সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে পড়েছে বড় বড় বিল্ডিং।

কাদা-মাটিতে চাপা পড়েছে বহু বসতি, রাস্তাঘাট, সেনাছাউনি। পরিস্থিতি জরিপ করে আগামী ৮ অক্টোবর পর্যন্ত পাকিয়ং, গ্যাংটক, নামচি এবং মঙ্গনের সব স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চালু করা হয়েছে একাধিক জরুরি পরিষেবার নম্বর।